চাঁদপুর নিউজ রিপোর্ট
নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়লে যতো ভালো ছাত্র-ছাত্রীই হোক বা ভালো পরীক্ষাই দিক সে পরীক্ষায় ফেল করবে। এটা স্কুলের ক্ষেত্রে যেমন কলেজের ক্ষেত্রেও তেমন। পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দিয়ে শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের বাধ্য করেন তাদের কাছে প্রাইভেট পড়তে। আর নির্বাচনী পরীক্ষায় যত বেশি বিষয়ে ফেল করবে ততই শিক্ষকদের বাণিজ্য। অর্থাৎ ফরম ফিলাপের জন্য নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের থেকে প্রত্যেক বিষয়ে মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা নেয়া হয়। জানা গেছে, ফেল করা প্রত্যেক বিষয়ের জন্য ১ থেকে ২ হাজার টাকা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরো বেশি টাকা জরিমানা নিয়ে ফরম ফিলাপ করার সুযোগ দেয়া হয়। তাই যত বেশি বিষয়ে ফেল করবে ততই প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লাভ।
আর ক’মাস পরেই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। এসএসসির ফরম ফিলাপ এখন চলছে। আর এইচএসসির প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষা শেষ হয়ে ক’দিন পর নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হবে। এসএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপে বিভিন্ন স্কুল বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকরা মিলে এ অর্থ বাণিজ্য করছে। জানা গেছে, এসএসসির ফরম ফিলাপের জন্য বোর্ড ফি কেন্দ্র ফি ও আনুষঙ্গিক খরচসহ সর্বোচ্চ ১৫শ’ থেকে ১৬শ’ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু সে জায়াগায় কোনো কোনো স্কুল সর্বোচ্চ ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। চাঁদপুর শহরেই এমন স্কুল রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, চাঁদপুর শহরের একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের থেকে ফরম ফিলাপের জন্য জনপ্রতি ৭ হাজার টাকা করে নেয়া হচ্ছে। সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গোপনে তথ্য নিলে তা বেরিয়ে আসবে।
এইচএসসি পরীক্ষার জন্য গত মাসে শেষ হলো প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষা। আগামী ক’দিন পর থেকে শুরু হবে নির্বাচনী পরীক্ষা। নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা চিন্তিত আছে। কারণ এই পরীক্ষায়ও এসএসসির মতো অর্থ বাণিজ্য হয়ে থাকে। যত বেশি বিষয়ে ফেল করবে ফরম ফিলাপে কলেজের ততবেশি আয় হবে। এ সূত্র থেকেই ফেল করানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়লে যে ফেল করানো হয় তা অনেকটা প্রমাণিত। চাঁদপুরের একটি কলেজে এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী প্রায় ৩শ’। গত মাসে এদের প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষা হয়। এই পরীক্ষার ফলাফল ছিলো খুবই খারাপ। শুধু ইংরেজি বিষয়ে পাস করেছে মাত্র ৬০ জন। বেশ ক’জন পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেছে, আমাদের কলেজের ইংরেজি বিষয়ের স্যারের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় আমাদেরকে ফেল করানো হয়েছে। ওই স্যার পরীক্ষার সময় হলে গিয়েই বলেছেন, এরা ইংরেজিতে একজন পাস করবে না। এখন তার কাছে ছাত্রীরা প্রাইভেট পড়ছে। তাই এখন বলছেন, এখন তোমরা পাস করবা। এমন অভিযোগ আরো কিছু কলেজের ব্যাপারেও রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের এসব বিষয় খতিয়ে দেখতে অভিভাবকরা অনুরোধ জানান।