ফরিদগঞ্জে চাঞ্চল্যকর অঞ্জলী রানী দাস হত্যা মামলায় রহস্য উদঘাটনে পুলিশের পাশাপাশি সহয়তার হাত বাড়িয়েছে এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা। পুলিশের কাছে হত্যকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে সন্দেহভাজন আসামী ১২ জনের মধ্যে ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার ৫ জন তাদের অভিভাবকদের নিয়ে থানায় হাজির হয়ে স্বেচ্ছায় আত্মসমার্পন করেন।
পরে পুলিশ তাদের ওই মামলায় আটক দেখিয়ে ডিএনএ পরীক্ষা করার অনুমতির আবেদন জানিয়ে একই দিন দুপুরে চাঁদপুর আদালতে প্রেরণ করে। একইভাবে এই মামলার অন্যান্য বাকি ৭ সন্দেহভাজন আসামী নিজেরাই থানায় এসে আত্মসর্মাপন করবেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, ২০২০ সনের ২১ জুলাই রাতে উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের ধোপা বাড়ি থেকে প্রয়াত ইন্দ্রজিৎ দাসের বিধবা স্ত্রী অঞ্জলী রানী দাস (৬০)এর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরদিন নিহতের ভাই অমর কৃষ্ণ দাস বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের (নং-২৫, তাং ২২.৭.২০২০) করেন। থানা পুলিশ মামলাটি তদন্তকালে ঐ এলাকার আজাদ, রাছেল, গনি ও শাকিল নামে ৪ যুবককে আটক করে।
এরপর তাদেরকে রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ,ডিএনএ ও ফিঙ্গার প্রিন্ট পরীক্ষা করলেও হত্যাকান্ডের ঘটনায় পাওয়া ডিএনএ-এর সাথে মিলেনি। পরে তারা ৯ মাস জেল খেটে জামিনে মুক্তি পায়।
এরপর চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর উত্তম দাস ও আরিফ হোসেন নামে দুইজনকে আটক করে তাদেরকেও ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন করার পর বর্তমানে তারা জেল হাজতে রয়েছে।
এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একই এলাকার আরো বেশ কয়েকজন পুলিশের সন্দেহের তালিকায় রয়েছে বলে জানতে পারে এলাকার লোকজন। পরে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সোহেল মাস্টার, বুলবুল আহমেদ, ইউপি সদস্য শাহআলম কিরণ, সাবেক ইউপি সদস্য আ: মান্নান ও স্থানীয় খাজুরিয়া বাজারের ব্যবসায়ী মাসুদ আলম থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে পুলিশের সন্দেহে থাকা ১২ জনের তালিকা সংগ্রহ করে তাদের অভিভাবকদের সাথে পরামর্শ করে।
অভিভাবকদের সম্মতিক্রমে ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে ১২ জনের মধ্যে ৫ জন যথাক্রমে রেদাওয়ানুল হক সজিব, ফয়সাল হোসেন সুজন, খোকন মিয়া, বাবু হোসেন ও মাসুদ আলমকে থানা পুলিশের কাছে আত্মসমার্পন করে। পরে থানা পুলিশ তাদের অঞ্জলী হত্যা মামলায় আটক দেখিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য অনুমতি চেয়ে দুপুরে আদালতে প্রেরণ করে।
স্থানীয় সোহেল মাস্টার, বুলবুল আহমেদসহ কয়েকজন অভিভাবক জানান, আমরা চাই হত্যকাণ্ডের মুল আসামীদের আটকসহ তাদের বিচার হউক। একই সাথে যাতে মানুষ অযথা হয়রানি না হয়, সেইজন্য আমরা অভিভাবকদের সম্মতিক্রমে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেই। সেই অনুযায়ী সোমবার সন্দেহে ৫ জন স্বেচ্ছায় আত্মসমার্পন করে।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদ হোসেন জানান, অঞ্জলী রানী হত্যাকাণ্ডে প্রাপ্ত ডিএনএর সাথে ম্যাচিং এর জন্য আটককৃতদের ডিএনএ পরীক্ষা করাতে আদালতের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত ডিএনএ পরীক্ষা করে হত্যাকাণ্ডের রহন্য উদঘাটন করতে সক্ষম হবো।