মিজান লিটন-
ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় চাঁদপুর জেলা টাস্কফার্সের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে গিয়ে উত্তেজিত জেলেদের আক্রমণের মুখে পুলিশকে ১০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়তে হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার বেলা সোয়া ১টায় চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের বহরিয়া মাছ ঘাটের নদীর পাড় এলাকায়। এ ঘটনায় হারুন (৫৫) নামে এক জেলে ও পুলিশের এএসআই জাকারিয়াসহ ৫ জন আহত হন। শর্টগানের গুলিবিদ্ধ হারুনকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এদিন র্যাব-পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট যৌথভাবে ইলিশ ধরা বন্ধ ও ক্রয়-বিক্রয় বন্ধে ওই এলাকায় আকস্মিক অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে নদীর পাড়ে জেলেসহ যারাই ছিলো সবাইকে ধাওয়া করে। মুহূর্তের মধ্যে ঐ এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়। এ সময় খালের ভেতরে থাকা নৌকায় কারেন্ট জাল দেখতে পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিপুল পরিমাণ কারেন্ট জাল জব্দ করে সেগুলো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এর পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, মৎস্য কর্মকর্তাসহ র্যাব-পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে চলে আসার সময় হঠাৎ করে জেলে ও তাদের পরিবারের সদস্যরা হৈ চৈ শুরু করে এবং এক পর্যায়ে আক্রমণ করার জন্য তেড়ে আসতে নিলে পুলিশ সেখানে ৮ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তুষার আহমেদ জানান, তারা আমাদেরকে দেখে দা, বল্লম, লাঠি-সোটা, ইট-পাটকেল নিয়ে আক্রমণ করার চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে তখন তিনি শর্টগানের ছোঁড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, ওরা আমাদেরকে মেরে ফেলতে ছুটে আসছিল। র্যাব-১১-এর এএসপি ওয়ারেস আলী মিয়া জানান, বহরিয়া নদীর পাড়ে কয়েক শ’ নারী-পুরুষ পেছন থেকে তেড়ে আসছিল। র্যাবের পক্ষ থেকে সেখানে গুলি ছোঁড়া হয়নি। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। পুলিশের এএসআই জাকারিয়া জানান, জেলেরা দল বেঁধে তাদের উপর আক্রমণ শুরু করে। তাতে তিনি আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং আত্মরক্ষায় ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে বহরিয়ায় ৮ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে (রাবার বুলেট) এবং হরিণা ফেরিঘাটে মাছ ধরায় ও বিক্রিতে লিপ্তদের ধাওয়া করে ২ রাউন্ড ফাঁকা শর্টগানের গুলি ছোঁড়া হয়। গোলাগুলির এ ঘটনায় সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।