হাজীগঞ্জের বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভাংচুর চালিয়েছে পরীক্ষার্থীরা। এ সময় তারা প্রধান শিক্ষককে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এসএসসি পরীক্ষায় ফরম পূরণের সুযোগ দেয়ার জন্য গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পরীক্ষার্থী ও অভিভাকরা এ ঘটনা ঘটায়।
খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল-আমিন হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আজ বুধবার সকালে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে এ বিষয়ে বৈঠক হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলে অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীরা চলে যায়।
বিদ্যালয় ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৩৯জন পরীক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষায় (টেস্ট) অংশগ্রহণ করে। রোববার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফলাফল প্রকাশ করে। এদের মধ্যে নিয়মিত ১৮২ জন ও অনিয়মিত ৫৭ জন। নিয়মিত ১৮২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০৩ জন নির্বাচনী পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়। অকৃতকার্য হয় ৭৯ জন । বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪৯ জনের মধ্যে ৪৬ জন, মানবিক বিভাগে ৩৪ জনের মধ্যে ১৩ জন ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৯৯ জনের মধ্যে ৪৭ জন কৃতকার্য হয়। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। গতকাল মঙ্গলবার থেকে কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ শুরু হয়।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অকৃতকার্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা গতকাল বিকেলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জড় হয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবুর রহমানকে তার কক্ষে বেলা চারটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত একঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় উত্তেজিত পরীক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের কয়েকটি দরজা-জানালা ভাংচুর করে। খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে চিঠি পাঠিয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যে, নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য কাউকে এসএসসি পরীক্ষায় ফরম পূরণের সুযোগ দেয়া যাবে না। এর ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অকৃতকার্য কাউকে ফরম পূরণের সুযোগ দেয়নি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান বলেন, কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় থেকে এ তালিকা কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে পাঠানো হবে। অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীরা ফরম ফিলাপের জন্য কৃতকার্য না হওয়ায় তারা অভিভাবকসহ গতকাল বিকেলে বিদ্যালয়ে এসে আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং বিদ্যালয়ের কয়েকটি দরজা জানালা ভাংচুর করে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলী রেজা আশ্রাফী বলেন, অকৃতকার্য কোন পরীক্ষার্থীকে ফরম পূরণের সুযোগ দেয়া যাবে না। এ ব্যাপারে শিক্ষা বোর্ড ও দুদক থেকে কড়া নির্দেশনা রয়েছে। হাজীগঞ্জ থানার এসআই আল আমিন জানান, পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বুঝিয়ে বিদায় করা হয়েছে। এ বিষয় সমাধান করার জন্য অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।