সাড়ে তিন বছর বয়সে চলচ্চিত্রে শুরু হয়েছিল দিঘির অভিনয় পথ চলা। অল্প দিনেই অভিনয় করেছে ৩৬টি চলচ্চিত্রে। এর মধ্যে মুক্তি পেয়েছে ৩৫টি চলচ্চিত্র। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পীর স্বীকৃতিও মিলেছে তার ভাগ্যে। সাবলীল অভিনয় নৈপুণ্যে অর্জন করেছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের সেই ছোট্ট দিঘি এখন আর ছোট্টটি নেই। সে পড়ছে নবম শ্রেণীতে। ২০১১ সালের ২৯ ডিসেম্বর মা চিত্রনায়িকা দোয়েলের মৃত্যুর পর চলচ্চিত্র অভিনয় থেকে দূরে সরে যায় দিঘি। এরপর বাবা সুব্রতই মা-বাবা উভয়ের আদরে বড় করছেন দিঘিকে।
দিঘির কাছে বাবা-মা মানেই সুব্রত। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সাংগঠনিক পদে প্রার্থী হয়েছিলেন দিঘির বাবা চলচ্চিত্র অভিনেতা সুব্রত। ৩৩৭ ভোট পেয়ে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সুব্রুত। বাবার সাফল্যে আনন্দে আত্মহারা দিঘি। আলাপচারিতায় সেই গল্পই শুনিয়েছে দিঘি।
বাবা তো নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে?
বাবার বিজয়ের খবরটি আমি শুনেছি শনিবার সকালে। শুক্রবার অনেক রাতে ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। আমি ঘুমিয়ে পড়ায়, কেউ আমাকে ডাকেনি। সকালে উঠেই বাবাকে জিজ্ঞাসা করেছি ‘তুমি জিতছো তো?’ বাবার কাছ থেকে জয়ী হওয়ার খবরটা শুনে আমার যে কি ভালো লেগেছে। সেটা বলে বোঝাতে পারব না। বাবাই তো আমার কাছে সব কিছু। মায়ের মৃত্যুর পর বাবাই আমার সব আবদার হাসি মুখে মেনে নেন। বাবার এই সাফল্যে বলা যায় আমি আনন্দে আত্মহারা।
তোমাকে ভোটকেন্দ্রে দেখে তো অনেকে ভেবেছে তুমি ভোট দিয়েছো?
আমি তো শিল্পী সমিতির ভোটার নই। শুক্রবার দুপুরের দিকে বাবার সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিলাম। অন্যদের ভোট দেওয়া দেখেছি। অনেকের সঙ্গে সেদিন দেখা হয়েছে। আমি প্রায় তিন বছর পর মনে হয় এফডিসির কোনো অনুষ্ঠানে গেলাম। এর মধ্যে কয়েকবার গিয়েছি। কিন্তু বড় কোনো অনুষ্ঠান উপলক্ষে যাওয়া হয়নি। এতদিন পরে এফডিসিতে গিয়ে খুবই ভালো লেগেছে। ছোটবেলায় তো এফডিসিতে অনেক গিয়েছি। ইদানিং আর যাওয়া হয় না।
নির্বাচনের আগে কি বাবার জন্য ভোট চেয়েছো?
সবাই তো জানে বাবা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে। আমার কাউকে বলতে হয়নি। উল্টো অন্যরা আমার সঙ্গে দেখা হলে বলেছে ‘দেখ, এবার তোমার বাবা নির্বাচনে জিতবে’। বাবাকে তো এফডিসির সবাই ভালোবাসে। সবাই ভালোবেসে বাবাকে এবছর শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জয়ী করেছে। বাবার জন্য আমার খুবই গর্ব হচ্ছে। আমি এমন একটি মানুষের মেয়ে। আমার বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা।
চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে ইচ্ছে করে না?
মা আমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। মা চাইতেন আমি যেন অনেক বড় হই। আমি মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। পড়াশুনা করে ভালো মানুষ হতে চাই। সবাই যেন আমাকে নিয়ে গর্ব করে। মা যেন আমার সাফল্য দেখে গর্ব করে।
এখন কি নিয়ে ব্যস্ত আছো?
আপাতত ব্যস্ততা পড়াশুনা নিয়ে। নিয়মিত স্কুলে যাই। স্কুল থেকে ফিরে বাসাতেই থাকি। পড়াশুনা আর স্কুল নিয়েই ব্যস্ত আছি। মাঝে মাঝে বাবার সঙ্গে বাইরে বেড়াতে যাই। আত্মীয়দের বাসাতেও যাই। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেই।
বাবার সাফল্য কীভাবে উদযাপন করার পরিকল্পনা করছো?
এখনো তেমন পরিকল্পনা করিনি। বাবাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। আমার চাওয়া হচ্ছে বাবা যেন সবার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে। শিল্পীদের কল্যাণে যেন কাজ করতে পারে। সবাই যেন আমার বাবাকে সব সময় ভালবাসে।
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ
আপনাকেও ধন্যবাদ।