চাঁদপুর: চাঁদপুরকে স্থায়ীভাবে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষার জন্য শরীয়তপুরের চর তারাবুনিয়া ও চর চান্দ্রা খনন করে প্রায় ২০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বতীর ভরাট ও বাঁধানোর কোনো বিকল্প নেই বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে আয়োজিত এক কর্মশালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের দুই অধ্যক্ষ এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি বিষয়ক বৈকালীন এমএস কোর্সের শিক্ষার্থীদের চাঁদপুরে ফিল্ড ওয়ার্কের প্রেক্ষিতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ওই কর্মশালাটির আয়োজন করে। এতে সার্ভে রিপোর্ট উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রফেসর ড. একিউএম মাহবুব। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন একই বিভাগের প্রফেসর ড. এএইচএম আবদুল বাকী। রিপোর্ট উপস্থাপনায় সহযোগিতা করেন একই বিভাগের এসোসিয়েট প্রফেসর ড. হুমায়ুন কবির। সভাটি পরিচালনা করেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের সাবেক কৃতী ছাত্র মো. ইসমাইল হোসেন। মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে উপস্থাপিত সার্ভে রিপোর্টে সুস্পষ্টভাবে দেখানো হয় যে, মেঘনা ও পদ্মার মিলনস্থলে রাজরাজেশ্বর সংলগ্ন যে ঠোঁটা (মোলহেড) রয়েছে এটির কারণে এ দুটি নদীর মিলিত স্রোত মেঘনার পূর্ব তীরের মতলব বাজার, বিষ্ণুপুর, আমানুল্লাপুর, আশিকাটি ও তরপুরচন্ডী ইউনিয়নসহ চাঁদপুর শহর সংলগ্ন পূর্ব তীরে প্রচন্ডভাবে আঘাত হানছে, ভাঙ্গন সৃষ্টি করছে এবং এক সময় চাঁদপুর বড় স্টেশন ঠোঁডা (মোলহেড)সহ চাঁদপুর শহরের মূল অংশ ও পুরাণবাজারের অস্তিত্বকে সম্পূর্ণ বিপন্ন করার সমূহ সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে।
ব্লক বা পাথর দিয়ে এ ভাঙ্গনরোধের চেষ্টা করা হলেও ঘূর্ণিস্রোতে নদীর তলদেশে অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়ে তা চাঁদপুর শহরের মোলহেড ও পুরাণবাজারসহ অন্যান্য অংশে এক সময় ভূমিধসের সৃষ্টি করবে। এতে বড় বড় স্থাপনাসহ মাটি নিচের দিকে দেবে নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ জন্য মেঘনা ও পদ্মার মিলনস্থল রাজরাজেশ্বর ঠোঁডার ব্যাপক ড্রেজিং করে এ দুটি নদীর মিলিত স্রোতকে পশ্চিম দিকে বা মাঝ বরাবর ফিরিয়ে দিতে হবে। আর এখানে ড্রেজিংকৃত মাটি দিয়ে বিপরীত দিকে বড় স্টেশন মোলহেডের উত্তর দিক থেকে উজানে অন্তত ২০ কিলোমিটার নদী তীর ভরাট ও তা বাঁধাই করতে হবে। ভরাট ও বাঁধাইকৃত স্থানে রাজরাজেশ্বর ও তৎসংলগ্ন যে সমস্ত মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাদেরকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গেলে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রশ্ন এসে যাবে। সরকার যদি এ অর্থের যোগান দিতে না পারে তাহলে দেশি-বিদেশি শিল্প উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানিয়ে মেঘনার পূর্ব তীরের শিল্প সম্ভাবনা তুলে ধরে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে হবে।
শিরোনাম:
শনিবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৬ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।