চাঁদপুর নিউজ রিপোর্ট ॥ দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার দরুণ চাঁদপুর নদী-বন্দরে ২নম্বর বিপদ সংকেত বলবৎ রাখা হয়েছে। মেঘনার পানি বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও ৩৫ থেকে ৪০ সে:মি: পানি জোয়ারে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্রোত ও ঢেউ তীব্র থাকায় গতকাল শনিবার সারাদিন চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌরুটে কোন ফেরী চলাচল করেনি। স্রোত ও ঢেউয়ের কবলে চাঁদপুর গামী একটি লঞ্চ (ইমাম হাসান) মেঘনার আমিরাবাদ এলাকায় ইঞ্জিন বিকল হয়ে পরে। শুক্রবারের ন্যয় গতকাল শনিবার বৃষ্টির মধ্যে সারাদিন অতিবাহিত হয়।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় কোমেনের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে যে নিম্মচাপ দেখা দিয়েছে এর প্রভাব উপকূলীয় এলাকার সাথে চাঁদপুরেও পড়েছে। নিম্মচাপের কারণে গতকাল শনিবার মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাতের মধ্য দিয়ে সারাদিন অতিবাহিত হয়েছে। আগের দিন শুক্রবার একই পরিস্থিতি বিরজমান ছিল। গত ২ দিন বৃষ্টি থামাথামি নেই। কখনো গুড়িগুড়ি আবার কখনো ভারী বৃষ্টি হতে দেখা যায়। এতে চাঁদপুরের জন-জীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। বৃষ্টিতে ভিজে মানুষকে দৈন্দদিন কাজ করতে হয়েছে। অনেকে বাসাবাড়িতে বন্ধি অবস্থায় থেকেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর ও চাঁদপুর নদীবন্দর সূত্রে জানা যায়, বৈরি আবহাওয়া বলবৎ থাকায় চাঁদপুর নদী-বন্দরে ২ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মেঘনা নদী ফুলে ফেঁপে উত্তাল হয়ে উঠেছে। নদীতে তীব্র স্রোত আর ঢেউ বইছে। পূর্ণিমা জোঁর কারণে চাঁদপুর জেলার ৩ নদী মেঘনা, ধনগোদা ও ডাকাতিয়া নদীর পানি জোয়ারে বৃদ্ধি পেয়েছে। চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং নদী বন্দর কর্মকর্তা জানান, গতকাল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে মেঘনা নদীতে ৩৫ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বোচ্চ পানির বৃদ্ধির রেকর্ডের পরিমান ছিল গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩.৬৫ সেন্টিমিটার। চাঁদপুর নদীবন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ৪.০০সে:মি: উপর দিয়ে মেঘনার পানি অতিক্রম করলে বিপদসীমা হিসেবে আমরা নির্ণয় করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত চাঁদপুর মেঘনার পানি বিপদসীমার নিচে প্রভাবিত হচ্ছে। তিনি আরো জানান, ঢাকা থেকে চাঁদপুর গামী এম.ভি ইমাম হাসান লঞ্চটি বিকাল ৩টা নাগাদ মেঘনা নদীর আমিরাবাদ এলাকায় ইঞ্জিন বিকল হয়ে পরে। বিকাল পনে ৪টায় খবর পেয়ে নৌ-পুলিশের সহযোগীতায় বিকল্প ব্যবস্থায় এম.ভি ময়ূর-৭ লঞ্চটি পাঠিয়ে ইঞ্জিন বিকল হওয়া লঞ্চ থেকে সকল যাত্রীকে উদ্ধার করে চাঁদপুর পৌছে দেওয়া হয়েছে। ঐ কর্মকর্তা আরো জানান, বড় বড় লঞ্চগুলোর ঢাকা- চাঁদপুর রুটের যাতায়াত অব্যাহত রয়েছে। তবে ৬৫ ফুটের নিচে লঞ্চ চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না। গতকাল বিকেল ৪টায় এম.ভি মিলা নামে নারায়নগঞ্জ গামী একটি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর ঘাট থেকে ছেড়ে যেতে চাইলে নদী উত্তাল থাকায় সেটির যাত্রার তাৎক্ষনিক বাতিল করে দেওয়া হয়।
এদিকে বিআইডাব্লিউটিসির চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌ-ফেরী রুটের কর্মাশিয়াল ম্যানেজার ইমরান খান জানান, নদীতে গতকাল শনিবার সকাল থেকে প্রচন্ড ঢেউ ও স্রোত থাকার কারণে ফেরী চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ফেরী কলমিলতার মাষ্টার আশ্রাফ উদ্দিন জানান, নদীতে স্রোত ও ঢেউ এতটাই প্রকট যে কারনে আমরা ফেরী চালাতে সাহস পাচ্ছি না। আবহাওয়া ভালো হলে ফেরী চলাচল স্বাভাবিক হবে।
শিরোনাম:
বুধবার , ১৪ মে, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৩১ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।