হাজীগঞ্জ: হাজীগঞ্জে উৎপাদিত পাটের সুতলি (পাটের সরূ রশি) রপ্তানি হচ্ছে ভারত ও রাশিয়ায়। এটি শুধু হাজীগঞ্জের গর্ব নয়, সমগ্র চাঁদপুরের গর্ব। আর এ কাজটি করছে হাজীগঞ্জের টোরাগড়স্থ সাবেক হামিদিয়া জুট মিল বর্তমানে হাজীগঞ্জ জুট স্পিনিং মিল প্রাইভেট লিমিটেড।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানি নাগরিক হামিদ খান হামিদিয়া জুট মিল নামে এ জুট মিলটি হাজীগঞ্জে প্রতিষ্ঠা করেন। চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের দক্ষিণ পাশ থেকে শুরু করে সর্ব দক্ষিণে ডাকাতিয়ার কোল পর্যন্ত প্রায় ১৮ একর জমির উপর মিলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। শুরু থেকে এ মিলটিতে পাটের সামগ্রী তৈরি হতো। এরপর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মিলটি পারিপার্শ্বিরকতার কারণে বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় এখানে অর্থাৎ মিলের অভ্যন্তরে পাক বাহিনী হাজীগঞ্জে তাদের কিছু দোসর নিয়ে তৈরি করে টর্চার সেল। পাকবাহিনী মিলটির যথেষ্ট ক্ষতিসাধন করে। এরপর বেশ কয়েক বছর কেটে যায়। তারপর জোড়া তালি দিয়ে ৭০ দশকের শেষ দিকে এটি পুনরায় চালু হয়। সর্বশেষ ২০০৭ সালে হাজীগঞ্জ জুট স্পিনিং মিল প্রাইভেট লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটি সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে এটি লিজ গ্রহণ করে। এরপর স্থানীয় ও অন্য জেলা থেকে শ্রমিক এনে এ মিলের কার্যক্রম শুরু করে।
মিল ম্যানেজার ইদ্রিস আলী জানান, এ মিলে প্রধান ও একমাত্র কাঁচামাল হচ্ছে পাট। শুকনো পাটকে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অর্থাৎ স্পিনিং পদ্ধতিতে প্রায় ৬ রকমের সুতলি তৈরি করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে উন্নত মানের যে সুতলি তৈরি করা হয় তার ভাল বাজার রয়েছে ভারত ও রাশিয়ায়।
তিনি আরো জানান, গত বছরের শেষে ও চলতি বছরের বেশ কয়েকটি চালান ভারত ও রাশিয়ায় পৌঁছেছে। এর মধ্যে ভারতের সুতলি বেনাপোল হয়ে ভারতে ও রাশিয়ার সুতা কন্টেইনারে করে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানি করা হয়। প্রতি চালানে ২০ থেকে ৩০ টন সুতলি রপ্তানি হয়। এর মধ্যে গত কয়েক মাসে রাশিয়ায় ৭টি চালান ও ভারতে ৩০টি ট্রাকে করে মাল পাঠানো হয়েছে। বাকি সুতলি ঢাকাসহ স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করা হয়।
মিল ম্যানেজার আরো জানান, এ মিলে ২ শিফ্টে ৪শ’ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে উৎপাদনে বেশ সমস্যা তৈরি হয়। কারণ, শ্রমিকরা কাজে এসে বিদু্ৎ না পেলে বসে বসে সময় কাটায়। প্রতি লোডশেডিংয়ে ২শ’ শ্রমিক বসে থাকে।