প্রতিনিধি
মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়নের কাজিয়ারা গ্রামের মৃত চেরাগ আলীর ছেলে মোঃ আক্কাছ আলী (৬৫)। ভিক্ষাবৃত্তিই আক্কাছ আলীর পেশা। পারিবারিক জীবনে দু’টি বিয়ে করেন। তিনি এখন তিন ছেলে ও চার মেয়েসহ ৭ সন্তানের জনক। দুজন স্ত্রীই বেঁচে আছে। প্রতিদিন ভিক্ষা করে ২শ’ ৫০ টাকা থেকে ৩শ’ টাকা উপার্জন করে যা পান তা দিয়েই চলে তার সংসার। আক্কাছ আলী পঙ্গু হলেও তার জীবন সংগ্রাম থেমে নেই। লাঠি ভর করে ভিক্ষাবৃত্তি করছেন।
১৯৯১ সালে খয়রাতি চালের জন্যে নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তৎকালীন চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন প্রধান তাকে খয়রাতি চাল দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ থেকেই তার মনে ক্ষোভ জন্মায় যে, ভিক্ষা করলেও ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ১৯৯২ সালে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ঘোড়ায় চড়ে আলী আক্কাছ চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তার প্রতীক ছিল চাকা। ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন মোঃ জয়নাল আবেদীন প্রধান, মোহাম্মদ আলী ও মোঃ মোশারফ হোসেন তালুকদার। তাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আলী আক্কাছ (চাকা) ২ হাজার ২শ’ ৫০ ভোট পেয়ে তৃতীয় হন। আলী আক্কাছের প্রতিদ্বন্দ্বী তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থীই ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। বেঁচে আছেন একমাত্র আলী আক্কাছ। গত ১২ জানুয়ারি আলী আক্কাছকে লাঠি ভর করে ভিক্ষা করতে দেখা যায় মতলব বাজারের স্থানীয় রিঙ্া স্ট্যান্ডে। তার সাথে কথা হয় এ প্রতিনিধির। তিনি আবেগাপ্লুত ভাষায় বলেন, ১৯৯২ সালে চাকা মার্কা নিয়ে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি ভিক্ষাবৃত্তির আয় দিয়ে। আর এখন নির্বাচন চলে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। কিন্তু ভিক্ষা ছাড়িনি। ভিক্ষাই আমার একমাত্র সম্বল। এ আয় দিয়ে তিন ছেলে ৪ মেয়েকে মানুষ করেছি।