চলমান এসএসসি পরীক্ষায় নিয়মিত ও অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর প্রশ্ন নিয়ে যে সমস্যা হয়েছে সে সব উত্তরপত্র আলাদা করে রাখা হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেছেন, পরীক্ষার্থীরা যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষা শুরুর দিন বিভিন্ন কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নে অর্থাৎ নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের অনিয়মিত এবং অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মূলত প্রথম দিন প্রশ্ন বিতরণে সমস্যা হয়েছে। আমাদের প্রায় ৫২ হাজার কক্ষে পরীক্ষা হয়। সম্ভবত ১৫টি কক্ষে সমস্যা হয়েছে। সেই অর্থে সংখ্যার হিসেবে হয়তো খুবই নগণ্য। কিন্তু এটি কেন হবে? শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যে শিক্ষক সেখানে আছেন যিনি প্রশ্নপত্র দেবেন তিনি প্রথমে কেন্দ্র সচিব, ট্যাগ অফিসার, পুলিশের প্রতিনিধিসহ সেটি খোলার প্রক্রিয়া দেখবেন। তারপর শিক্ষকরা সেট কোড অনুযায়ী দেখে বের করবেন। যে শিক্ষক বিতরণ করতে যাচ্ছেন তার দেখার কথা। পরীক্ষার্থীরা যে প্রশ্ন পান তারও দেখার কথা। যেখানে সমস্যা হয়েছে সবগুলো ধাপেই সমস্যা হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা তখন পরীক্ষার উৎকণ্ঠায় থাকেন, সে না দেখতে পারে কিন্তু বাকিদের সেটি দেখা অবশ্য কর্তব্য এবং দেখতেই হবে।
‘নিয়মিত ও অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের একসঙ্গে না বসাতে বোর্ডের যে নির্দেশনা সেটি হয়তো কোথাও কোথাও মানা হয়নি বলেই এই সমস্যা হয়েছে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নিয়মিত ও অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর প্রশ্ন নিয়ে সমস্যা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা সে সব উত্তরপত্র আলাদা করে রেখেছি এবং সেগুলো যেন পরীক্ষার্থীরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। বিষয়গুলো আগে যা হতো তার থেকে কমে এসেছে, একেবারেই যেন না থাকে এটাকে শূন্যের কোটায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে এবং সেটা থাকবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
গাইড বই থেকে এসএসসির প্রশ্ন করা নিয়ে এক প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোনো প্রশ্ন একেবারে রিপিট হবে না সেটা করা কিন্তু কঠিন। ৫ হাজার ৫৮০ সেট প্রশ্ন প্রণয়ন করা হয়েছে। কী বিশাল কর্মযজ্ঞ একবার শুধু চিন্তা করে দেখেন। সেখান থেকে ২ হাজার ৭৯০ সেট প্রশ্ন ছাপানো হয়েছে। অনেক সেটার ও মডারেটর লাগে। যারা প্রশ্ন সেট করেন সেটি যেমন বোর্ডের কেউ দেখতে পারেন না, দেখার সুযোগ থাকে না।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কিছু না কিছু প্রশ্ন সারা জীবনেই রিপিট হয়। আমরা তো তার আগের ১০ বছরের প্রশ্ন দেখে আন্দাজ করে পড়তাম। একেবারেই কোনো প্রশ্ন কোনো দিন রিপিট হবে না এটা কিন্তু ইম্পসিবল প্রায়। তাহলে একদম বইপত্রই পুরো পাল্টে ফেলতে হবে। তবে একদম হুবহু না হওয়াই উচিত। কে ওই প্রশ্নপত্র করেছেন সেটি শনাক্ত করেছি। গাইড বই, নোটবই ব্যবহার আমরা বন্ধ করতে চাই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের এখন সৃজনশীল পদ্ধতিতে গাইড বইয়ের প্রয়োজন হওয়ার কথা নয়। গাইড বই, নোট বই মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান তারা অনৈতিকভাবে কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের আর্থিকভাবে প্রভাবিত করে বাধ্য করে শিক্ষার্থীদের এসব কিনতে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। নোট বই, গাইড বই বিক্রি বন্ধের ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনেরও একটু সহযোগিতা চাই। কারণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে কিন্তু সারা দেশে, প্রতিটি জায়গায় এ বিষয়গুলো বন্ধ করা এককভাবে কোনো দিনই সম্ভব নয়, যদি আমরা সবারর সর্বাত্মক সহযোগিতা না পাই।