শওকত আলী, ॥
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের ইশানবালা গ্রামে গত এক সপ্তাহ যাবত মেঘনা নদীর ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে মেঘনা গর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে ঘর-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি। ভাঙনের কারণে ওই গ্রামের শত শত মানুষ এখন সব কিছু হারিয়ে ছিন্নমূল হয়ে পড়ছে। সোমবার ভাঙ্গন কবলিত স্থানে গেলে শত শত ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবী তাদের আকুতি জানাতে সাংবাদিকদের কাছে এসে ভির জমায় এবং তাদের ক্ষতি গ্রস্থ বাড়ি ঘরের বর্ণনা তুলে ধরেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বাশার মাষ্টার জানান, বর্ষা আসলে প্রতিবছর এই গ্রামে ভাঙন দেখা দেয়। আর এই ভাঙনে প্রতিবছরই বহু পরিবার ছিন্নমূল হয়ে পড়ে। বাড়ি-ঘর সম্পত্তি হারিয়ে মানুষ আত্মীয় স্বজনের নিকট আশ্রয় নিচ্ছে। ভাঙ্গন প্রতিরোধে সরকারি ভাবে কোন স্থায়ী ব্যবস্থা নেয় হচ্ছে না।
ওই গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ পেদা আলোকিত বাংলাদেশকে জানান, ইশানবালা গ্রামটি শরীয়তপুর-চাঁদপুরের সীমান্ত এলাকায়। গ্রামটি নদীর পশ্চিম পাড়ে হওয়ার কারণে প্রশাসনিক লোকদের সাথে যোগাযোগ কম থাকে। তাদের বসত ভিটা ও ফসলি জমি মেঘনায় বিলিন হওয়ার কারণে তারা এখন মেঘনার পূর্ব পাড়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে। ভাঙনের মুখে বহু পরিবার এখন আতংকগ্রস্থ। সরকারের পক্ষ থেকে ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি প্রদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
হাইমচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারী জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য ডাঃ দীপু মনি এমপি হাইমচরের মেঘনা উপকূলীয় এলাকা ভাঙনরোধে এর পূর্বে বড় ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বিশাল এলাকা রক্ষায় ব্যবস্থা নিয়েছেন। ইশানবালা ভাঙনের বিষয়টি তাঁকে জানানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কারিগরি কমিটি ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিক উল্লাহ জানান, ঈশান বালায় ব্যাপক নদী ভাঙ্গন চলছে। প্রতিরোধে একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে কারিগরি কমিটি পরিদর্শন করেছে। আশা রাখি আগামী শুষ্ক মৌসুমে সরকারি বরাদ্দ পাওয়া গেলে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। শত শত এলাকাবাসীর অভিমত সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেরি হওয়ায় এলাকাবাসী প্রতিদিনই ভাঙ্গনের স্বীকারে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এ ব্যাপারে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তারা সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।