ফাহিম শাহরিয়ার কৌশিক খান ঃ
চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের ৫১নং মৈশাদী বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ইয়াছমিন সুলতানার বিরুদ্ধে স্কুল ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মৈশাদী ইউনিয়নের মিজি বাড়ির অসহায় হতদরিদ্র গার্মেন্টস কর্মী জেসমিন বেগমের ৮ বছরের শিশু কন্যা কুলছুমাকে আটকে রেখে শারিরিক নির্যাতন করে ১ বছর পর মুক্তি দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ইয়াছমিন সুলতানা স্কুলের স্কুল পড়–য়া ছাত্রীদের বাসায় নিয়ে আটকে রেখে জোরপূর্বক জিয়ের কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। ৮ বছরের শিশু কন্যা কুলছুমাকে ১ বছর বাসায় রেখে অমানুষিক নির্যাতন করে বাসা থেকে বের করে দেওয়ার থলের বিড়ালের মত চাঞ্চল্যকর এ তথ্য বেরিয়ে আসে। একজন প্রধান শিক্ষিকা নিজের স্বার্থ হাসিল করতে তার স্কুল পড়–য়া ছাত্রীদেরকে বাসায় নিয়ে আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক জিয়ের কাজ করিয়ে অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনা চাঁদপুরে এই প্রথম পাওয়া গেছে। স্কুল ছাত্রী কুলছুমার নির্যাতনের ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার ধামাচাপা দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষিকা দৌড়ঝাপ শুরু হয়েছে। চাঁদপুরের রাজনীতিকও বিভিন্ন মিডিয়ার ব্যাক্তিদের ম্যানেজ করে নিরিহ শিশু কুলছুমার স্বজনদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্যাতনের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চালায়।
ঘটনার বিবরনে জানাযায় পশ্চিম মৈশাদী গ্রামের মৃত খলিল মিজির মেয়ে জেসমিন আক্তারের সাথে ওয়াললেছের সেলিম মিজির সাথে বিয়ে হয়, বিয়ের পর পারিবারিক কহলের জেরধরে উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনের কুলছুমার জন্ম হয়। পারিবারিক অভাব অনটন সইতে না পেরে কুলছুমার মা জেসমিন বেগম ঢাকায় গারর্মেন্স চাকরি নেয়। কুলছুমাকে স্কুলে ভর্তি করার জন্য তার নানী রোকেয়া বেগম ১ বছর পূর্বে ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি কারার জন্য নিয়ে যায়। ঐসময় বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা ইয়াছমিন সুলতানা তাদের দুর্ভলতার সুযোগ নিয়ে কুলছুমাকে তার বাসায় রেখে স্কুলে পড়া লেখা করাবে বলে তার নানীকে জানান। প্রধান শিক্ষিকার লোভ দেখানো প্রলভানে রোকেয়া বেগম রাজি হয়ে কুলছুমাকে তার কাছে দেয়। কিন্তু তার পর থেকে কুলছুমা স্কুলে না এনে বাসায় আটকে রেখে জোরপূর্বক জিয়ের কাজ করিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করতো। গত শুক্রবার কুলছুমাকে বেদুম মারধুর করে। শিশু কুলছুমা বাসা থেকে এক পর্যায়ে পালিয়ে বাড়িতে এসে তার উপর অমানুষিক নির্যাতনের কথা সকলকে বলে। শিশৃু নির্যাতনের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। অভিযোক্ত প্রধান শিক্ষিকা ঘটনা ধামাচাপা দিতে রাজনীতিক ও সামাজিক ব্যাক্তিবর্গের কাছে সরনাপর্ন হয়।
ঘটনার সত্যতা জানার জন্য গত রবিবার দুপুরে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় স্কুল চালাকালীন সময় প্রধান শিক্ষিকা অনুস্থিত রয়েছে। স্কুলের সহকারী শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাথে নির্যাতিত ছাত্রী কুলছুমার বিষয়ে জানতে চাইল তারা বলেন এই স্কুলে কুলছুমা নামে কোন ছাত্রী নেই। এসময় বিদ্যালয়ের উপস্থিত খাতা খুলে দেখাযায় ৪৩ রোল নং কুলছুমার নাম রয়েছে। খাতায় প্রতিদিন শ্রেনী শিক্ষিক কামরুন নাহার কুলছুমার উপস্থিত দিয়ে আসছে। কিন্তু ভর্তি হওয়ার পর থেকে শিশু কুলছুমা স্কুলের মুখ দেখেনি, এমনকি বিদ্যালয়ের শ্রেনী শিক্ষক ও তাকে চিনেনি, শুধু প্রধান শিক্ষিকার অনুমতিক্রমে তাকে উপস্থিতি দেখানো হচ্ছে বলে শিক্ষিকা কামরুনাহার জানান। সরজমিনে কুলছুমার বাড়িতে গিয়ে দেখাযায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার অমানুষিক নির্যাতন করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ দেখাযায়। এ বিষয়ে শিশু কুলছুমা জানান, প্রায় ১ বছর তার বাসায় আটকে রেখে জোরপূর্বক বাসায় সকল কাজ করাতো, যে কাজ করা সম্ভাব নয়। তাদের কথা মত কাজ না করায় বিভিন্ন সময় আমার উপর নির্যাতন চালায়। এব্যাপারে প্রধান শিক্ষিকার ব্যবহৃত ০১৭৩৮৮৬০২৯৭ নাম্বারে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় দিলে ফোন রিচিব করে কথা বলেননি। পরে তার এক শুভাকাংক্ষিত মাধ্যমে সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য চেষ্টা চালায়। এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাজমা বেগমের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান বিষয়টি আমার জানানেই। তবে ঘটনাটি প্রমান হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে একটি সূত্রজানায় কুলছুমাকে ১ বছর অমানুষিক নির্যাতনের মূল্য ৩৫হাজার টাকা দিয়ে তিনি ঘটনা ধামাচাপা দেয়। এ ছাড়া ও বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনীর ১২ রোল নং আমেনাকে দিয়েও একই ভাবে জিয়ের কাজ করাতো।