পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উপলক্ষে চাঁদপুর শহরে বিশাল জশ্নে জুলুছ (বর্ণাঢ্য র্যালী) অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এই জশ্নে জুলুছ অনুষ্ঠিত হয়। চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জমায়েত ও ঈদে মিলাদুন্নবীর তাৎপর্যের উপর আলোচনা শেষে এখান থেকে শহরে জুলুছ বের হয়। জুলুছ শহর ঘুরে বাসস্ট্যান্ডস্থ শেরে বাংলা ছাত্রাবাস মসজিদ প্রাঙ্গণে গিয়ে মিলাদ-কিয়াম ও মুনাজাত শেষে তবররুক বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
আলোচনায় ওলামায়ে আহলে সুন্নাত তাঁদের বক্তব্যে বলেন, আল্লাহর সৃষ্টি জগতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত হচ্ছে নবী রাহমাতুলি্লল আলামিন হুজুর পাক (দঃ)। তাই সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত প্রাপ্তির দিবসই তো হবে মহা আনন্দের দিন, সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদের দিন। মহান আল্লাহ কোরআন মাজীদেও তাই ঘোষণা দিয়েছেন। সে জন্যে প্রিয় নবী (দঃ)-এর শুভাগমন দিবসে ঈদ উদ্যাপন করা ঈমানের দাবি। ঈমানদার মুসলমানরা এদিন খুশি উদ্যাপন করে মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে, এটাই তো ঈমানের পরিচায়ক। আর ঈদে মিলাদুন্নবীর বিরুদ্ধে যারা নানা ফতোয়াবাজি করে, বুঝতে হবে তারা ইসলাম এবং মুসলমানদের দুশমন। যারা বলে দুই ঈদ ছাড়া ইসলামে অন্য কোনো ঈদ নেই, তারা কোরআন-হাদীসের ব্যাপারে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। নবীজীর মিলাদ তথা শুভাগমন উপলক্ষে ঈদ উদ্যাপন করার সপক্ষে কোরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াসে অসংখ্য দলিল রয়েছে। কিন্তু বিরুদ্ধবাদীদের বক্তব্য মনগড়া এবং কোরআন ও হাদীসের অপব্যাখ্যা।
আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ মাওঃ আনম মুহিবুল্লাহ। পরিচালনা করেন ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উদ্যাপন পরিষদ চাঁদপুর-এর আহ্বায়ক মাওঃ এএইচএম আহসান উল্লাহ। ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ)-এর তাৎপর্যের উপর বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওঃ আবু জাফর মোঃ মাঈনুদ্দিন, জেলা গাউছিয়া কমিটির সভাপতি প্রফেসর শাহ জামাল তালুকদার, অধ্যক্ষ মাওঃ জসিম উদ্দিন, অধ্যক্ষ নূরুল আলম মজুমদার, পীরজাদা মাওঃ খাজা মোঃ জোবায়ের, মোঃ হুমায়ুন কবির, গাজী মোঃ আবদুর রাহীম, মাওঃ তাজুল ইসলাম, মাওঃ মামুনুর রশিদ, মোঃ আতিকুর রহমান, আবদুল্লাহ আল বাকী, মোঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ শামছুদ্দিন প্রমুখ। আলোচনা শেষে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিশাল জশ্নে জুলুছ বের হয়। জুলুছে নাত শিল্পীরা নাতে রাসুল, দরূদ, সালাম ও মিলাদ শরীফ সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন করেন। বর্ণাঢ্য এই জুলুছ পুরো শহর প্রদক্ষিণ করে বাসস্ট্যান্ড এলাকাস্থ শেরে বাংলা ছাত্রাবাস মাঠে গিয়ে শেষ হয়।
পথিমধ্যে বাসস্ট্যা- মসজিদের সামনে পথসভায় গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন চান্দ্রা দরবার শরীফের পীরজাদা আল্লামা হুজ্জাতুল্লাহ নক্শবন্দী মোজাদ্দেদী। ছাত্রাবাস মসজিদে মিলাদ-কিয়াম ও মোনাজাত শেষে তবররুক বিতরণ করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন পীরজাদা মাওঃ খাজা মোঃ জোবায়ের।
জুলুছে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর, রামপুর, বাগাদী, শাহমাহমুদপুর ও ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন থেকে জুলুছ নিয়ে নবী প্রেমিক সুন্নী মুসলমানরা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত, ইসলামী ফ্রন্ট, গাউছিয়া কমিটি, ইসলামী ছাত্র সেনা ও ইসলামী যুবসেনার নেতা-কর্মীরা মিছিল সহকারে অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।
–