নিজস্ব প্রতিরনধি-
‘আঁর হোলায় মরি যাইবো, এডা যদি আগে জাইনতাম তাইলে আঁর হোলারে সিহল দি বাঁধি রাইকতামরে ভাই। এডা কোন্ রাজনীতি, কী অপরাধ কইচ্ছেরে ভাই আঁর হোলায়’। এমন কথা বলে অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে মুর্ছা যাচ্ছেন বারপাইকা গ্রামের নিহত যুবদল নেতা আরিফ হোসেনের বৃদ্ধা মা হাজেরা বেগম। আরিফের ২ বছরের এক শিশু কন্যা রয়েছে। যার নাম রাখা হয়েছে হাফছা।
অপরদিকে বদরপুর গ্রামের নিহত বাবুলের স্ত্রী রোকেয়া বেগম রঙ্গিন শাড়ি ছেড়ে সাদা শাড়ি পড়তে বাধ্য হলেন। আর্তনাদ করে রোকেয়া বেগম বলেন, ‘কোন্ ডাহাইতে আঁর স্বামীরে কাইড়া নিলোরে ভাই। আঁর হোলারা অহন কারে বাপ কইয়া ডাকবো’।
পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী জানায়, এদের পাশাপাশি গ্রাম। দুই পরিবারের মাঝেই ছিল সুখের আনন্দ। পেশায় দু’জনই ছিল দিন মজুর। নিহত আরিফের মা হাজেরা বেগম জানান, তার ছেলে আরিফ দুপুরে জুমার নামাজ পড়তে বাড়ি থেকে বের হয়। নামাজ পড়ে সে আর জীবিত ফিরে আসেনি। ফিরে এসেছে লাশ হয়ে। সক্রিয়ভাবে রাজনীতি না করলেও আরিফ যুবদলের একজন কর্মী। বিএনপি ও যুবদলের বিভিন্ন মিটিং-মিছিলে অংশ নিতো সে।
বদরপুর গ্রামের ৯নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ছিলেন বাবুল হোসেন (৩৫)। দিনমজুরের কাজের পাশাপাশি সক্রিয়ভাবে তিনি যুবদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। গত শুক্রবার বাবুলের স্ত্রী রোকেয়া বেগমের ধারণা ছিলো তার স্বামী কাজে রয়েছে। যথাসময়ে বাবুল বাড়ি না আসায় পরিবারের সদস্যদের ধারণা ছিলো সে কাজ শেষে হয়ত ঘরের বাজার নিয়ে বাড়ি ফিরবে। কিন্তু বাড়ি ফিরেছে ঠিকই, তবে জীবিত নয়, বাবুল ফিরেছে লাশ হয়ে।
গত শুক্রবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে সারাদেশের ন্যায় ফরিদগঞ্জে বিএনপি ও জামায়াত যৌথভাবে বিক্ষোভ মিছিল করার সময় সরকারি দলের বাধার মুখে পড়ে। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় গুলিতে যুবদলের ৩ নেতা-কর্মী নিহত হয়।