রমজানে চালু থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রাথমিক স্কুল চলবে ২০ রমজান পর্যন্ত। আর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত চালু রাখার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হলেও তা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
আগামীকাল ৩ এপ্রিল থেকে পবিত্র রমজান শুরু হতে পারে। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সেই ঘাটতি মেটাতে রমজানে নিয়মিত স্বাভাবিক ক্লাস করাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে মোতাবেক দেশের সব স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানোর প্রস্ততি নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি মেটানোর চিন্তা থেকে রমজানের মধ্যেও স্কুল-কলেজ খোলা রাখার এ সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ের।
এদিকে গতকাল একটি অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, করোনার কারণে গত দুই বছর শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ ছিল। ২০২২ সালে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের যদি ক্লাস না করানো হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়বে এবং সমস্যা হবে। বাড়িতে থাকতে থাকতে শিক্ষার্থীদের অনেক সমস্যা হয়েছে। এখন ক্লাস শুরু হয়েছে, তারা নিয়মিত ক্লাস করবে।
রোজার কারণে এখন ক্লাস বন্ধ করাটা ঠিক হবে না। তবে কত তারিখ পর্যন্ত ক্লাস হবে তা এখনো ঠিক করা হয়নি।
তবে রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের নানা মত পাওয়া গেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই ইসু্যটি গড়িয়েছে উচ্চ আদালত পর্যন্ত। উচ্চ আদালত বলছে, ‘স্কুল বন্ধ বা খোলার রাখার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না । এটি সরকারের পলিসিগত বিষয়।’
স্কুল খোলার রাখার বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় বইছে। পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত দিচ্ছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বড় একটি অংশ বলছেন, রমজানে স্কুল-কলেজ খোলা রাখলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের ভোগান্িত বাড়বে। তাদের মতে, এক দিকে গরমের তীব্রতা, এর মধ্যে আবার রোজা রেখে ক্লাস নেওয়াটা অমানবিক হবে। এছাড়া অনেক শিক্ষার্থী রোজা রাখে। রোজা রেখে তীব্র গরমে স্কুলে যাওয়া ও ক্লাসে মনযোগী হওয়া তাদের জন্য কঠিন হবে। আজিজুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক বলেন, বন্ধ রাখা উচিত। যে উদ্দেশ্যে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিলো তা কাজে আসবে না।
নুরুন্নবী নামে এক অভিভাবক বলেছেন, রমজানের রোজায় স্কুল বন্ধ করে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হোক, বিশ দিনের ক্লাসে উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি বা অগ্রগতি হবে না,এই প্রচেষ্টা আমাদের অভিভাবকদের জন্য বিশাল পেরেশানি ও কষ্টদায়ক হবে, রমজান মাসে রাস্তায় যানজট বেড়ে যায়, এখন ভীষণ গরম, তার ওপর রোজা মুখে বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে দৌড়াঝাঁপ করতে হবে, সেহরি খাওয়ার পরে স্কুলে যাওয়ার টেনশনে ঘুম বা বিশ্রাম কোনোটাই হবে না, স্কুল শেষে আবার বাচ্চাদের বাসায় নিয়ে আসার টেনশনে আরো অনেক বেশি কষ্ট ও ক্লান্তি বেড়ে যাবে।
তবে কোনো কেনো অভিভাবক এমন মতও দিয়েছেন কিছু দিনের জন্য চালু রাখা যেতে পারে। সেটা হতে পারে সর্বোচ্চ ১০ দিন। নজরুল আমিন নামে এক অভিভাবক জানিয়েছেন, সপ্তাহে দুদিন স্কুল চালু রাখা যেতে পারে। এতে স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকবে। বাকি ক্লাস হবে অনলাইনে। আবার রফিকুল ইসলাম নামে একজন অভিভাবক জানিয়েছেন, সরকারি-বেসরকারি অন্য প্রতিষ্ঠান চালু থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ থাকবে।