রূপালী ব্যাংক লিঃ হাজীগঞ্জ শাখার তিন কর্মকর্তার সর্বমোট ৫৫ বছরের জেল হয়েছে। ব্যাংকের ভোল্টে রক্ষিত টাকা আত্মসাতের কারণে তাদেরকে এ সাজা দেয়া হয়েছে। চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিজ্ঞ বিচারক মোঃ মাহাবুবুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন : অফিসার (ক্যাশ) মোঃ আবুল বাশার ভূঁইয়া (৬০) (তার বাড়ি হাজীগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর বাজার সংলগ্ন ওড়পুর নোয়াপাড়া গ্রামে), শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ ইয়াকুব আলী (৫৫) (তার বাড়ি হাজীগঞ্জ উপজেলার নাসিরকোর্ট গ্রামে। তিনি বর্তমানে কুমিল্লা আঞ্চলিক কার্যালয়ে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত) এবং অন্যজন ওই শাখার তৎকালীন দ্বিতীয় কর্মকর্তা প্রিন্সিপাল অফিসার মোঃ শহীদুল ইসলাম (৫৫) (তার বাড়ি কচুয়া উপজেলার পাক শ্রীরামপুর এলাকার বুরগী গ্রামে)। মামলার পর তারা জামিনে থাকলেও গতকাল রায়ের পর তাদের ৩ জনকেই জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
২০০৯ সালে রূপালী ব্যাংক লিঃ-এর নিরীক্ষা দল হাজীগঞ্জ শাখার ভোল্টে রক্ষিত ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার ৯শ’ ২৭ টাকা বুঝে নিতে গিয়ে দেখেন সেখানে মাত্র ১৬ লাখ ৭ হাজার ৩শ’ ২৭ টাকা আছে। অর্থাৎ ২২ লাখ ২৭ হাজার ৬শ’ টাকা কম আছে। নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকের ভোল্টের চাবি ব্যবস্থাপক, দ্বিতীয় কর্মকর্তা এবং ক্যাশিয়ারের কাছে ৩ ভাগে থাকে। তাই প্রাথমিক নিরীক্ষায় ধরে নেয়া হয়েছে ২২ লাখ ২৭ হাজার ৬শ’ টাকা দায়িত্বশীল ওই তিন কর্মকর্তা আত্মসাৎ করেছেন। ফলে তাদের বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় ৪০৯, ১০৯ দণ্ডবিধি এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়।
থানার এসআই মোঃ কামাল হোসেন তদনত্দের পর মামলাটি দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট বিষয়ক দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়। কমিশনের কুমিল্লা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মোঃ ফজলুল হক তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পান। তার মতে ওই তিন কর্মকর্তাই পরস্পর যোগসাজশে ভোল্ট থেকে টাকা আত্মসাৎ করেন। ফলে কমিশন প্রধান কার্যালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে ওই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১৯/০১/২০১০ তারিখে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। বিজ্ঞ আদালত প্রয়োজনীয় সাক্ষ প্রমাণ শেষে গতকাল রায় ঘোষণা করেন।
বিচারকের রায়ে আবুল বাশার ভূঁইয়াকে ৪০৯ দণ্ডবিধির অপরাধে ১০ বছর, দুদক আইনের ৫(২) ধারার অপরাধে ৭ বছর এবং ৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে দু’ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ইয়াকুব আলী ও মোঃ শহীদুল ইসলাম দু’ জনকে ৪০৯ দণ্ডবিধিতে ১০ বছর, দুদক আইনের ৫(২) দণ্ডবিধিতে ৭ বছর এবং ২ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন দুদকের পিপি অ্যাডঃ আলী নেওয়াজ মজুমদার।