শওকত আলী,:
চাঁদপুর রেলওয়ে সফিউদ্দিন ইনস্টিটিউটের (রেলওয়ে ক্লাব) দীর্ঘ ৪ বছর যাবৎ বিরোধের জটিলতা নিরশন কল্পে বাংলাদেশ রেলওয়ে মহা ব্যবস্থাপক (পূর্ব) এর নির্দেশে একটি প্রতিনিধি দল চাঁদপুর আসেন মঙ্গলবার। তারা চাঁদপুর অফিসার্স রেস্ট হাউজে স্থানীয় রেলওয়ে কর্মকর্তাদের নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে বৈঠকে বসেন। চট্টগ্রামস্থ রেলওয়ে ওয়েলফেয়ারের কর্মকর্তারা এ ইনস্টিটিউটের জটিলতা নিরশনে পুরাতন ও নতুন কমিটির সাথে আলাপকালে ব্যপক তদন্ত শেষে বিষয়টি মিমাংসার জন্য এক সিদ্ধান্তে উপনিত হন।
জানাযায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের চাঁদপুরস্থ শত শত রেলওয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিনোদনের জন্য রেলওয়ে সফিউদ্দিন ইনস্টিটিউট (রেলওয়ে ক্লাব) সৃষ্টি হয়। এ ইনস্টিটিউটের আসবাবপত্র, দোকানপাট একটি বিশাল পুকুর এ দায়িত্ব হস্তান্তর ও বুঝে নেওয়া নিয়ে দীর্ঘ বহু বছর যাবৎ জটিলতার সৃষ্টি হয়। গত প্রায় ৪ বছর যাবৎ ইনস্টিটিউটের পুরাতন কমিটির সাথে নতুন কমিটির বিরোধ চলে আসছিল। এর ফলে এ বিরোধ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। পূর্বের কমিটির পুকুরটিতে চাষকৃত মাছ থাকা অবস্থায় সে মাছ তাদেরকে বিক্রি বা নিয়ে যাওয়ার সময় না দিয়ে তারা বিশাল পুকুরটি দখল করে। তারা বহিরাগত লোকদের মাছ চাষের অনুমতি দেয়। সে মতে বহিরাগত লোক মাছ চাষ করে যাচ্ছে। নতুন কমিটি দায়িত্ব ভার বুঝে না নিয়ে পেশি শক্তি ব্যবহার করে বেআইনী ভাবে পুকুরটি তাদের দখলে নিয়ে যায়। যার ফলে বিরোধ আরো বেড়ে যায়। রেলওয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীরা এ ইনস্টিটিউটের বিনোদন থেকে বঞ্চিত হয় এবং ২ বছর যাবৎ ১৬ ডিসেম্বর পালন থেকে ও ক্লাবের সদস্যরা উপহার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। পূর্বে সাধারণ সম্পাদক আঃ হান্নানের আবেদনের পেক্ষিতে চট্টগ্রামস্থ মহা ব্যবস্থাপক পূর্ব (জি.এম) এর নির্দেশে চট্টগ্রাম ও ঢাকার রেলওয়ের ওয়েলফেয়ার ইনিসপেক্টর মোঃ আবুল হাসেম ও মোঃ নাজমুল আলম এসে স্থানীয় কর্মকর্তাদের সাথে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বসে জটিলতা নিরশনে ব্যাপক তদন্ত করেন। এছাড়া নতুন ও পুরাতন কমিটির উভয় কর্মকর্তাসহ উভয়ের কথা শুনে বিষয়টি মিমাংসার যোগ্য হওয়া ও উভয়ের মধ্যে ফলপশু আলোচনা হওয়ায় মিমাংসার সিদ্ধান্তে উপনিত হন। বর্তমান সফিউদ্দিন ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক মাজ হারুল ইসলাম নতুন কমিটির সদস্যদের সাথে আলাপ আলোচনার অজুহাত দেখানোর কারনে বিষয়টি পরিপূর্ণ নিষ্পত্তি হয় নি। এছাড়া সাবেক কমিটির কোষাধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাঙালী তার দায়িত্বকালীন সময়ে ২০০৯ সাল থেকে ২ বছরের হিসাবের ভাউচার উপস্থাপন না করতে পারায় হিসাব বুঝে নেয়নি সাবেক সাধারণ সম্পাদক আঃ হান্নান। পরে কোষাধ্যক্ষ বিষয়টি মিমাংসার জন্য ওয়েলফেয়ার ইনিসপেক্টর দ্বয়কে জানালে, তারা মিমাংসার লক্ষে সাবেক কমিটির সাথে একমত পোষন করে নতুন কমিটিকে পূর্বের কমিটির সাথে সমজোতার সুযোগ প্রদান করেন। আগামী ৪ দিনপর পূণরায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক সফিউদ্দিন ইনস্টিটিউটের জটিলতা নিরশন কল্পে সকল কার্যক্রম করার আশ্বাস প্রদান করেন এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নিবেন বলে একমত পোষন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে সফিউদ্দিন ইনস্টিটিউটের সভাপতি কামরুজ্জামান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাজ হারুল ইসলাম, রেলওয়ে শ্রমিকলীগ সভাপতি মোঃ মাহাবুবুর রহমান টিটি, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান, হেড টিএক্সআর এটিএম হাসান, আবুল কাশেম টিএক্সআর, রেলওয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের ফোর ম্যান মোঃ বেলাল হোসেন, এসএই/কার্য চাঁদপুর জান শরীফ, কমিটির সদস্য আবুল কাশেম, ইসমাইল হোসেন, তাফাজ্জল হোসেন, রেল কর্মচারী জুয়েল, ছলেমান সহ অসংখ্য রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মহা ব্যবস্থাপক পূর্ব এর কাছে পেরিত আদেশ থেকে জানাযায়, বর্তমান কমিটি বে-আইনী ও অবৈধ ভাবে বহিরাগত লোকদের কাছে ১২ লক্ষ টাকা নিয়ে রেলওয়ে সফিউদ্দিন ইনস্টিটিউটের পুকুরটি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে চাষাবাদের অনুমতি দেন যা সম্পূর্ণ রেলওয়ে আইনের পরিপন্থি।