একান্ত সাক্ষাতকারে পৌর মেয়র হাজী আঃ লতিফ
“শাহরাস্তি পৌরসভাকে নান্দনিক রুপে সাজাতে চাই ”
স্টাফ রিপোর্টারঃ শাহরাস্তি পৌরসভা মেয়র হাজী আঃ লতিফ জানান, মেয়রের দায়িত্বকে তিনি চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছেন, তাই এ পৌরসভাকে তিনি সাজাতে চান নান্দনিকতাময় নতুন রুপে।
সোমবার দুপুরে একান্ত সাক্ষাতকারে মুখোমুখি হলে মনের এমন ইচ্ছের কথাই জানান শাহরাস্তি পৌরসভার নির্বাচিত পৌরপিতা, বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ি, জেলা আওয়ামীলীগের সবেক সদস্য, টঙ্গী আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি, উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির প্রধান হাজী আঃ লতিফ। দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি জয়ী হয়ে ২৮ মার্চ দায়িত্বভার নেন তিনি। দীর্ঘ আলোচনায় উঠে আসে এ পৌরসভা নিয়ে তার পরিকল্পনার আরো নানা দিক।
প্রঃ শাহরাস্তিকে নান্দনিক শহরে পরিণত করতে আপনার কি পরিকল্পনা রয়েছে?
হাজী আঃ লতিফ : দ্রুত অগ্রসরমান উপজেলা শাহরাস্তি। অর্থনীতি, শিল্প-সাহিত্য থেকে সব দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে এ উপজেলা। আর তাই উপজেলা শহর হিসেবে শাহরাস্তি পৌরসভাকে নান্দনিক রুপে গড়ে তোলা সময়ের দাবী। এ পৌরসভাকে নান্দনিক রুপ দিয়ে আধুনিকিকরণের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমার পরিষদের। ইতোমধ্যে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য নানা প্রকল্পের কাজ চলছে। পৌরসভার সামনের অংশকে সাজানো হয়েছে নতুন রুপে।
প্রঃ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আপনার ভূমিকা কেমন হবে ?
হাজী আঃ লতিফ: স্থানীয় সংসদ সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের ১ নং সেক্টর কমান্ডার ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম উন্নয়নমুখী জনপ্রতিনিধি। সরকারের পূর্ব ও চলতি মেয়াদে তিনি এ এলাকার উন্নয়নে ব্যপক কর্মকান্ড করেছেন। তাঁর স্নেহধন্য হয়ে আমি জনগনকে তাদের চাহিদার আলোকে সেবা দিয়ে পৌরসভাটিকে আরো অনেকদূর এগিয়ে নিতে চাই।
প্রঃ এ বিষয়ে কি কি পদক্ষেপ নিয়েছেন?
হাজী আঃ লতিফ: এ ব্যপারে ব্যপক কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। আমার আগে দায়িত্বরত মেয়ররা ১৫ বছরে ১২ কোটি টাকার বেশী বরাদ্দ নিতে পারে নি। আমি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর ৫ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। আরো ৮ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছি। চলতি বছরে মোট ২০ কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন করার টার্গেট রয়েছে।
প্রঃ সুপেয় পানি সরবারহের জন্য একটি ওভার হেড ট্যাঙ্ক নির্মাণে আপনার পদক্ষেপ কি?
হাজী আঃ লতিফ: এ এলাকার পানিতে আর্সেনিকের পরিমান বেশি হওয়ায় সুপেয় পানি সরবারহের জন্য একটি ওভার হেড ট্যাঙ্ক নির্মাণে জায়গা সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে জনগন আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করে আসছে। পৌরবাসীর সুবিধার কথা বিবেচনা করে ১২ কোটি টাকার প্রকল্প ও স্থান সংকুলানে আমার নিজের ৭০ শতাংশ ভুমি দান করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
প্রঃ শিক্ষার প্রসারে আপনার কি পরিকল্পনা ?
হাজী আঃ লতিফ: নাগরিকের মৌিিলক চাহিদা শিক্ষার প্রসারের ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। নগরের শিক্ষা বিস্তারে আমাদেরও নানা পরিকল্পনা রয়েছে । এছাড়া আমি ২ যুগ আগ হতে ট্রাষ্ট গঠন করে এলাকার গরীব, অসহায় ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি সহ নানাবিধ সহযোগিতা করে আসছি।
প্রঃ প্রথম বারের মত দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন, এ নির্বাচনে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন?
হাজী আঃ লতিফ: প্রথম বারের মত স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন হয়েছে, স্থানীয় নির্বাচনে সব সময় প্রতিকের চেয়েও সেবার মান ও ব্যক্তি ইমেজকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে ভোটাররা। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কৌশলে অনুপ্রানিত হয়ে স্থানীয় নির্বাচনেও ভোটরা নৌকায় ভোট দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে যথাযত সেবা দিতে পারলে নৌকা প্রতীক আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। যা জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করবে।
প্রঃ পৌর কর নির্ধারণে জনগনের সাধ্যের কথা ভাবা হয় নি, এ ব্যপারে আপনার বক্তব্য জানতে চাই?
হাজী আঃ লতিফ: আমি নিজেও তো পৌরসভার একজন নাগরিক। ট্যাক্স বাড়ানোর ক্ষমতা আমার নেই। সরকারের বিধিমালা মেনেই ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়েছে। বরং অনেক ক্ষেত্রে জনগনের সাধ্যের কথা বিবেচনা করে আমার ক্ষমতাবলে ট্যাক্স কমিয়ে দিচ্ছি।
প্রঃ পৌর ভবনে এসে জনগন কেমন সেবা পাবে ?
হাজী আঃ লতিফ: ‘মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছেন এলাকার উন্নয়ন করার জন্য, তাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য, যথাযথভাবে পৌর সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার জন্য। আমাকে তাই করতে হবে। তাই মানুষের জন্য কাজ করতে চাই’। আর সেজন্যই এ পৌর ভবনে এসে সর্বোচ্চ সেবা পাবে সাধারণ নাগরিকরা। আমরা তাদের শাসক নই,সেবক হতে চাই।
প্রঃ এ পৌরসভা নিয়ে আপনার স্বপ্ন কি?
হাজী আঃ লতিফ: আমি চাই শাহরাস্তি মাদক, ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ মুক্ত একটি অত্যাধুনিক শহর হিসেবে সারা বাংলাদেশে রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করুক।