হাইমচর :
হাইমচরে সমন্বিত মৎস্য চাষ প্রকল্পের নামে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে সরকারের ২৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পে কাজের নামে কোনো চিত্রই দেখাতে পারেনি প্রকল্প চেয়ারম্যান কিংবা মৎস্য বিভাগ।
একটি অভিযোগের ভিত্তিতে সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, হাইমচরের ৬নং চরভৈরবী ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল ও সরকারি খাস পুকুরে ৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে ২৪ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এ প্রকল্পগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত। প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প নামে ২৪ লক্ষাধিক সরকারি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয় ৫টি প্রকল্পে। প্রকল্পগুলো হলো_চরভৈরবী বেড়িবাঁধের পাশে অবস্থিত ৪টি খালের তীর উঁচু ও প্রশস্তকরণ এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল হাওলাদারের বাড়িতে সরকারি ২টি খাস পুকুর পাড় উঁচু ও প্রশস্তকরণ। এ খাল ও পুকুরগুলোর পাড় ৪ থেকে ৫ ফুট উঁচু ও ৫-৬ ফুট প্রশস্ত করার কথা থাকলেও তার কিছুই করা হয়নি। প্রকল্পগুলোর সভাপতি ও সদস্য সচিব নির্বাচিত করা হয়েছে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের। ইতিমধ্যে প্রকল্প কাজের ৬০ ভাগ অগ্রগতি দেখিয়ে ১৮ লাখ টাকা বিল প্রকল্প চেয়ারম্যানদের অনুকূলে উত্তোলন করা হয়েছে বলে প্রকল্প পরিদর্শক ও উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা এ কে এম জহিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান।
সরজমিনে প্রকল্পগুলো ঘুরে দেখা যায়, ২৪ লাখ টাকার প্রকল্পের কাজে সর্বসাকুল্যে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মাটি কাটা হয়েছে। ৪ থেকে ৫ ফুট উঁচু ও ৫-৬ ফুট প্রশস্ত করার কথা থাকলেও তার কিছুই করা হয়নি। কাজের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প চেয়ারম্যানদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, আসলে ৮-১০ বছর পূর্ব থেকেই এ খালগুলোতে আমরা মাছের চাষ করে আসছি। তেমন মাটি কাটার এখানে প্রয়োজন নেই। উপজেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার নাম উল্লেখ করে তারা বলেন, তিনি তদবির করে এসব প্রকল্প এনেছেন। আমরা নামে মাত্র কমিটি। আসলে সবকিছুই উপজেলার ঐ নেতা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাই করেন। প্রকল্পের নামে লাখ লাখ টাকা লোপাটের বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ কে এম জহিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাক্ষাতে এসে বিস্তারিত বলবেন বলে জানালেও বার বার ফোন করেও তার সাথে সাক্ষাৎ করা কিংবা প্রকল্পের ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রতন দত্তের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কাজ সঠিকভাবে সবকিছুই হয়েছে। এটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ। আপনারা সরজমিনে গিয়ে দেখে আসতে পারেন।
ভুয়া প্রকল্পের নামে সরকারের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগের বিষয়টি সরজমিনে তদন্ত করে সরকারি টাকা লোপাটের হাত থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এখনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ ও সচেতন জনগণ।