এলএসডি প্রতিটন ধানে ১হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়েছে ……………
হাজীগঞ্জের কৃষকদের কাছ থেকে কার্ড নেয়া হলেও কর্তৃপক্ষ ধান নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা
রফিকুল ইসলাম বাবু ঃ
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের কৃষকদের কাছ থেকে কার্ড নেয়া হলেও ধান নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা। আবার অনেক এলাকার কৃষকরা জানেই না ধান কোথায় বিক্রি করবে। অথচ ঘরে ধান বস্তা ভর্তি করে রেখেছেন তুলনামুলক বেশি লাভের আশায়। উপজেলা ধানক্রয় কমিটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান ক্রয় করছে বলে কৃষকরা জানায়। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, যথাযত নিয়ম মেনেই ধান ক্রয় করা হচ্ছে। কোনো প্রকার অনিয়ম হয়নি। ধান কেনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ভাগ ধান কিনতে পেরেছে খাদ্য বিভাগ। যদিও কোনো কোনো এলাকার কৃষকরা ধান বিক্রি করতে পারেনি। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃষক কার্ড সংগ্রহ করে ধান ক্রয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ কৃষকদের। অনুসন্ধানে জানা যায়, হাজীগঞ্জে দুইটি সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে দেশের উত্তর পশ্চিম অঞ্চল থেকে ধান কিনে এনে গোডাউন ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লার বিজয়পুর, হদ্দার বাজার ও বিজরা এলাকা থেকেও অল্প দামে ধান কিনে এসেছে। এসব সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিয়েছে ফারুক, মতিন মিয়া, আতিক উল্ল্যাহ, আউয়াল, শাহাজানসহ আরো প্রায় ২৫জনের একটি গ্রুপ। যে কারণে চাঁদপুরের সবচেয়ে বেশি ধান কিনতে পেরেছে ১ হাজার ১শ ২১ টন। তাদের লক্ষ্যমাত্র ১৪শ ৭ টন। এক্ষেত্রে অন্য উপজেলা গুলো অনেক পিছিয়ে আছে। তবে মতবল দক্ষিণ তার চেয়ে ব্যতিক্রম। তারা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান কিনতে পেরেছে। মতলব দক্ষিণের দুইটি এলএসডিতে ৭শ ৪৬টন ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও ইতোমধ্যে তারা কিনেছে ৮শ ৩১ টন। জানা যায় এক্ষেত্রে কিছু সহজসরল কৃষকের কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে। বিনিময়ে কিছু কিছু কৃষক এক হাজার টাকা করে পেয়েছে। এছাড়া অনেক কৃষকের কার্ড ফেরত দেয়া হয়। হাজীগঞ্জের সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য মতিন মিয়া ও আতিক উল্লাহ জানান, কৃষকদের সাথে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এদিকে হাজীগঞ্জ উপজেলার হাটিলা ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষক জানান, আমরা ধান বিক্রি করতে চাই। সরকারের কাছে বিক্রি করলে ভালো টাকা পাওয়া যায় শুনেছি। কিন্তু বিক্রি করতে পারি না। হাজীগঞ্জের সিন্ডিকেট চক্রের কয়েকজন মূল হোতা এসব ধান ক্রয়ে এলএসডি গোডাউন ভর্তি করেছে। এর সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে হাজীগঞ্জ এলএসডি গোডাউনের কর্মকর্তারা। প্রতিটন ধনে তারা ১হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়েছে। চাঁদপুর সদর উপজেলা সিএসডি’র ব্যবস্থাপক সালমা আক্তার জানান, আমরা সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করছি। যদি কোনো কৃষক তার ধান বিক্রি করতে না পারে তাহলে সেখানে অন্য কোনো সমস্যা থাকতে পারে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার খামখেয়ালী কিংবা অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে না। বরঞ্চ আমি বিভিন্ন সময়ে মাইকিং করেছি, স্থানীয় গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি যেন কৃষকরা তাদের ধান বিক্রি করতে নিয়ে আসে। এব্যাপারে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি কোথাও কোনো প্রকার অনিয়মের খবর পাইনি। ইতোমধ্যে আমাদের পঞ্চাশ ভাগ ধান কেনা হয়েছে। বাকী সময়ের মধ্যে আমাদের ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা পৌছুতে পারবো। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চাঁদপুরের আট উপজেলার ৩লাখ ৪২ হাজার ৭শ ৩২জন কৃষক কৃষাণীর মধ্যে প্রায় দেড় হাজার কৃষকের তালিকা দেয়া হয়েছে। এ বছর চাঁদপুরে ৬২ হাজার ৬শ ২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান উৎপাদন হয়েছে ৩লাখ ৬৮ হাজার ৫শ ২১ মে.টন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আলী আহমদ জানান, আমরা শুধু মাত্র কৃষকদের তালিকা দিয়েছি উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে। এছাড়া আর কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।