হাজীগঞ্জের স্কুলছাত্র মারুফ হোসেন রিয়াদ (১৬) হত্যা মামলার প্রধান ও পলাতক আসামী ফারুক হোসেন (২৮)কে আটক করা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাতে ময়মনসিংহ থেকে তাকে আটক করা হয়। থানা পুলিশ আর পিবিআই অভিযানটি পরিচালনা করে। আটককৃত ফারুক কচুয়া উপজেলার মালচোঁ গ্রামের জিন্নাত আলীর ছেলে। রিয়াদকে হত্যার পর থেকে ফারুক পলাতক ছিলো। তাকেসহ রিয়াদ হত্যা মামলায় মোট ৯ জনকে আটক করলো পুলিশ।
এদিকে আটককৃত আসামীদের ৫ দিন করে আদালতে রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। এর আগে গত সোমবার আটককৃত ৮ আসামীকে গত সোমবার চাঁদপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন রনি ও চাঁদপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্মকর্তা মোঃ মাহবুব আলম।
আটককৃতরা হলেন : পৌরসভাধীন মকিমাবাদ গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে রাকিব (২১), মোস্তফার ছেলে সাকিব (২০), মুকবুলের ছেলে রাকিব (২২), হানিফের ছেলে রাব্বী (২১), স্থানীয় আবুল কাশেম, দোকানের মালিক ফরিদ, চাচা শাকিল (১৮) ও সুইপার নূরুল আমিন।
পুলিশের সূত্র জানায়, হত্যার উদ্দেশ্যে রিয়াদকে একাধিক ছুরিকাঘাত করা হয়। হত্যাকারীরা রিয়াদের হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হবার পর স্কুলসংলগ্ন টয়লেটের ট্যাংকিতে লাশ গুমের চেষ্টা চালায়। আর এজন্যে ২টি টয়লেট পরিষ্কার করে রেখেছে আর আটককৃত সুইপার নূরুল আমিন বিষয়টি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।
পুলিশ আরো জানায়, আমিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরায় শনিবার দিবাগত রাত ১১টার পর ফুটেজে থাকা রাব্বী, সাকিব, রাকিব, কাশেম ও রাকিবকে রোববার রাতে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার আটককৃত ফারুককে একই ফুটেজে দেখা গেছে।
ঘটনার দিন রিয়াদের বাবা ৫ জনের নামীয় ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজন মিলিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পুলিশ ইতিমধ্যে প্রধান আসামীসহ ৪ জনকে আটক করেছে। অন্যদিকে সিসিটিভির ফুটেজসহ সন্দেহজনক আরো ৫ জনকে ইতিমধ্যে আটক করে জেলহাজতে পাঠায়।
প্রধান আসামী ফারুক হোসেনকে ময়মনসিংহ থেকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলমগীর হোসেন রনি চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেন, আটক ৮ জনকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামীদের জন্যে ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন চাওয়া হয়েছে। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করলেই এ মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন হবে।
উল্লেখ্য, গত রোববার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় হাজীগঞ্জের মকিমাবাদ গ্রামের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারুফ হোসেন রিয়াদ দুর্বৃত্তের হাতে হত্যার শিকার হয়। পরদিন ভোরে স্থানীয় আমিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের একটি দোকান থেকে গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রিয়াদ হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের মকিমাবাদ গাইন বাড়ির ফরিদ হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ প্রাথমিকভাবে ২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আটক করে। ঘটনার পর পর হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি, ডিবি ও পিআইবি ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ আলামত উদ্ধার করেছে। এদিকে যে দোকান থেকে রিয়াদের লাশ উদ্ধার করা হয় সেই দোকান কর্মচারী ফারুক হোসেন (২৮) ঘটনার পর থেকে আটক হওয়ার আগ পর্যন্ত পলাতক ছিলো। রিয়াদ স্থানীয় আমিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।