হাজীগঞ্জে মিলাদ-কি্বরাম বিষয়ে বিতর্ক নিয়ে গতকাল শুক্রবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিলো তা এক পক্ষীয় বৈঠক হয়েছে। প্রতিপক্ষ তথা মিলাদ-কি্বয়ামের বিরোধী পক্ষ এবারো আসেন নি। ফলে এ বিতর্ক নিয়ে উভয় পক্ষের বাহাস বা সমাধানে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বারবার বৈঠকে মিলাদ-কি্বয়ামের পক্ষ তথা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের ওলামায়ে কেরাম উপস্থিত হলেও প্রতিপক্ষ গ্রুপ না আসায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মিলাদ-কি্বয়ামের বিরোধী পক্ষ বিষয়টি জিইয়ে রাখতে চাচ্ছে। কিন্তু এটি কারো জন্যই শুভ হবে না বলে মনে করেন হাজীগঞ্জবাসী। গতকাল প্রতিপক্ষ না আসায় ১২ জানুয়ারি পুনরায় উভয় পক্ষের সর্বোচ্চ ৭ জন করে আলেমকে নিয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও থানার অফিসার ইনচার্জের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। ওইদিন সকাল ১১টায় হাজীগঞ্জ থানায় এ বৈঠক হবে।
গত ৫ ডিসেম্বর হাজীগঞ্জের মকিমাবাদ গ্রামের একটি মিলাদ মাহফিলে মিলাদ-কি্বয়াম নিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুর রউফ। তিনি মিলাদ-কি্বয়ামের সাথে অপ্রাসঙ্গিক রাসুল (দঃ)-এর ইলমে গায়েব ও হাজের নাজের বিষয়টি টেনে এনে নানা যুক্তি দেখিয়ে মিলাদ-কি্বয়ামকে শিরক-বিদ্আত ফতোয়া দেন। তার এ বক্তব্যে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের ওলামায়ে কেরামের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। আহ্লে সুন্নাতের পক্ষে আল্লামা আবু সুফিয়ান আবেদী আল-কাদেরীর নেতৃত্বে বেশ ক’জন আলেম গত ১০ ডিসেম্বর হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুর রউফের সাথে সাক্ষাৎ করে তার বক্তব্য লিখিত আকারে চান। কিন্তু তাতে তিনি রাজি হননি। পরে ১২ জানুয়ারি উভয় পক্ষের পাঁচ জন করে আলেম খতিবের অফিসে বসার সিদ্ধান্ত হয়। একদিন পরই আবার খতিব বসার ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানান। সেদিন আহলে সুন্নাতের ওলামায়ে কেরাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জের সাথে সাক্ষাৎ করে উভয় পক্ষের আলেমদের নিয়ে বসার ব্যাপারে তাঁদের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টায় উভয় পক্ষের পাঁচ জন করে আলেম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে বসার কথা থাকলেও প্রতিপক্ষ আসেনি। আল্লামা আবু সুফিয়ান আল-কাদেরীর নেতৃত্বে নির্ধারিত সময়ের আগেই আহলে সুন্নাতের ওলামায়ে কেরাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে উপস্থিত হন। আলেমদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন মুফতি রুহুল আমিন মানছুরী, মুফতি আবদুর রব আল-কাদেরী, মুফতি মোঃ ছায়েদুল ইসলাম মুনাজেরী, আল্লামা এসএম হুজ্জাতুল্লাহ নক্শবন্দী মোজাদ্দেদী, অধ্যক্ষ মাওঃ আবু জাফর মোঃ মাঈনুদ্দিন, অধ্যক্ষ মাওঃ মোহাম্মদ আলী নক্শবন্দী, আল্লামা আবুল হাশেম শাহ মিয়াজী, আল্লামা মামুনুর রশিদ আজহারী, আল্লামা মুফতি ফজলুল কাদের বাগদাদী, মাওঃ আবদুর রাহীম, হাফেজ মাওঃ জুনায়েদ। কিন্তু প্রতিপক্ষ মুফতি আবদুর রউফ গ্রুপের কেউ আসেনি। ওলামায়ে কেরাম বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুর রশিদ মজুমদার ও থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ আলমের সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। এরপর আগামী ১২ জানুয়ারি পুনরায় বৈঠকের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।