গতকাল রোবরাব দুপুরে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জের উদ্যোগে মিলাদ-কি্বয়াম বিষয়ে বিতর্ক নিয়ে থানায় একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মিলাদ-কি্বয়ামের পক্ষের আলেমগণ উপস্থিত হলেও বিপক্ষের লোকজন উপস্থিত না হওয়ায় আগামী ১৮ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অধ্যাপক আঃ রশিদ মজুমদারের অফিসে পুনরায় বৈঠকের উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সভায় বিপক্ষের লোকজন উপস্থিত না হওয়ায় অফিসার ইনচার্জ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আজ সোমবার হাজীগঞ্জ বাজারস্থ বালুর মাঠে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ও হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ মাঠে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির মাহফিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। একই সময়ে ৫০ গজের মধ্যে দুটি মাহফিল অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির আশঙ্কা করে হাজীগঞ্জ থানা প্রশাসন এদিন থানায় ওই সভার আহ্বান করে। এ সভায় হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুর রউফ উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও তিনি আসেন নি। মিলাদ-কি্বয়াম বিষয়ে হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের খতিব মুফতি আঃ রউফের বক্তব্য নিয়ে যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের পক্ষে মাওঃ আবু সুফিয়ান খান আবেদী আল কাদেরী আলোচনা করেন। তখন সভায় উপস্থিত জেলা মুজাহিদ কমিটির সভাপতি ও বড় মসজিদের সাবেক খতিব মাওলানা রফিকুল ইসলাম জানান, আমরা এ বিষয়টি নিয়ে এখানে আসিনি। আমাদের আগামীকালের (আজ সোমবার) ওয়াজের বিষয়ে কথা বলতে এসেছি।
এর পরেই প্রশাসনের অনুরোধে মাওঃ আবু সুফিয়ান আল কাদেরী বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এলাকার শান্তি রক্ষার্থে আমরা আমাদের মাহফিলের তারিখ পিছিয়ে নিলাম। পরে আলোচনাক্রমে সভায় সিদ্ধান্ত হয়, মুজাহিদ কমিটির মাহফিলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকায়েদের কোনো বিষয়ে কটাক্ষ করে কেউ বক্তব্য দিতে পারবে না।
সহকারী পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) মোঃ আব্দুল হানিফ বলেন, এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ক্বাওমী ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের পক্ষের ৫ জন করে আলেমকে একত্রিত হয়ে ১৮ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আলোচনা হবে। সেখানে কোনো প্রকার সমাধান না হলে মাননীয় পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা নেয়া হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদার, সহকারী পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) আব্দুল হানিফ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোঃ মুর্শিদুল ইসলাম ও থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ আলম।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের পক্ষে মাওঃ আবু সুফিয়ান আল কাদেরীর নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন আলীগঞ্জ হযরত মাদ্দাহ খাঁ (রঃ) জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি আঃ রব আল কাদেরী, আল্লামা রুহুল আমিন মানছুরী, চান্দ্রা দরবার শরীফের পীরজাদা আল্লামা হুজ্জাতুল্যাহ, অধ্যক্ষ মাওঃ মোহাম্মদ আলী নঙ্বন্দী, মাওঃ আবুল হাশেম শাহ মিয়াজী, মাওঃ মামুনুর রশীদ আজহারী, হাফেজ জুনায়েদুল হক ও মাওঃ গাজী মোঃ আব্দুর রাহীম।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার আহ্বানে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আলেমগণ উপস্থিত হলেও হাজীগঞ্জ বড় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুর রউফ আসেন নি। তবে তিনি তার বক্তব্য লিখিত পাঠিয়েছেন। মিলাদ-কি্বয়ামকে কটাক্ষ করে তার বক্তব্য থেকেই মূলত উত্তেজনা পরিস্থিতি এবং মাহফিলের পাল্টা মাহফিলের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আগামী ১৮ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অফিসে এ বিষয়ে উভয় পক্ষের আলেমদের নিয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে।