প্রতিনিধি=
হাজীগঞ্জের স্বদেশ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. গ্রাহকের ১৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা নিয়ে উদাও হয়েছে সমিতির কর্তৃপক্ষ। দায় এড়াতে সমিতির সাবেক কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন করে কমিটি গঠন করেছে। গ্রাহকদের টাকা ফেরত পেতে গতকাল হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্টেট হোসনা আফরোজার সভা কক্ষে ঘণ্টা ব্যাপী এক রুদ্রধার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সমিতির বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের কাছে ইউএনও হিসাব দেখতে চাইলে হিসাবে ব্যাপক গড়মিল পাওয়া যায়। গ্রাহকের আমানতের টাকার সাথে সমিতির সম্পত্তি, ঋণের টাকা, অফিসের জামানত, দোকানের মালামাল সহ দোকানের পজিশান জামানতের টাকার সাথে মিল নেই। এছাড়াও ১৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা চাঁদপুর, হাজীগঞ্জ ও কচুয়া শাখা মিলিয়ে টাকার হিসাব দেখায়। তিনটি শাখা অফিসের ১৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা হয়ে থাকলে হাজীগঞ্জ উপজেলা গ্রাহকদের ১৫ কোটি টাকা গেলো কোথায় এমন প্রশ্ন উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি ও প্রশাসনের লোকদের মনে জন্মেছে। এ বৈঠক শেষে সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কাছ থেকে সাদা কাগজে মুছলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। এমনও রয়েছে সমিতির বর্তমান সভাপতি(সম্পাদকের স্ত্রী) অফিসের কাজ না করেই মাসিক বেতন ৪০ হাজার টাকা ঢাকা বসে নিয়ে যেতেন। সভাপতির স্বামী সোহাগ আহমেদ মাসে ২/৪ দিন অফিস করে ৮০ হাজার টাকা বেতন উঠিয়ে নিতেন। সাবেক সম্পাদক জামাল হোসেন নিজের সৌখিনতার জন্য মাস শেষে বেতন উঠাতেন ৯৫ হাজার টাকা। এভাবেই সাবেক ও বর্তমান কমিটির লোকজন গ্রাহকের আমানতের টাকা সংগ্রহ করে নিজের সৌখিনতার কাজে ব্যবহার করতেন।
তবে কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির নেতারা বার বার স্বদেশ মাল্টিডপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক করে। এতে কর্তৃপক্ষ তাদের কথা সারা দেননি। জানা যায়, ৮ বছর পূর্বে উপজেলা থেকে নিবন্ধন নিয়ে হাজীগঞ্জ বাজারে স্বদেশ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি নামে একটি সমিতি গঠন করেন। এটি গঠনের পর গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করার জন্য জামাল হোসেন ও তারই জেঠাত ভাই সোহাগ আহমেদ লোক দিয়ে টাকা সংগ্রহ করতেন। মাস শেষে গ্রাহকদের টাকা হারে লভ্যাংশ দিয়ে থাকতেন। এভাবে টাকা আদায়ের পর কয়েকটি শাখাও নিয়ে থাকেন। গ্রাহকদের আমানতের ৫/৬ কোটি টাকা তিনটি শাখা অফিস থেকে ব্যবসার নাম করে আত্মসাৎ করেন বর্তমান সম্পাদক ও সাবেক সম্পাদক। এই টাকা নিয়ে বর্তমান সম্পাদকের সাথে জামাল হোসেনের বাকবিতন্ডা হয়। এর জেরধরে জামাল হোসেন কিছু দিন পূর্বে আত্মহত্যা করতে বিষ প্রাণ করেন। সমিতির বর্তমান ও সাবেক কমিটির লোকজন একে অপরকে দোসারফ করলেও গ্রাহকদের টাকা কিভাবে ফেরত পাবে এ নিয়ে কোন সুরাহ নেই। তারই প্রেক্ষিতে গতকাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বৈঠক হয়। ওই সময় প্রায় তিন শতাধিক গ্রাহক তাদের আমানতের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনা আফরোজা চাঁদপুর বার্তাকে বলেন, আমি তাদের সাথে বৈঠকে করে দেখতে পেলাম হিসাব গুলোতে ব্যাপক গড় মিল রয়েছে। সমিতির সম্পত্তি, ঋণের টাকা এবং সমিতির মাধ্যমে অন্য ব্যবসার টাকার সাথে গ্রাহকদের আমানতের টাকা সমিতির মধ্যে নেই বললেই চলে। বৈঠক শেষে সমিতির সম্পত্তির দলিল সহ যে সকল প্রকল্প রয়েছে তার কাগজপত্র ও বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদকের পাসপোর্ট ২ দিনের মধ্যে থানা অফিসার ইনচার্জ শাহ্ আলমের কাছে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেই এবং সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
শিরোনাম:
সোমবার , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৮ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।