শাখাওয়াত হোসেন শামীম, হাজীগঞ্জ, (চাঁদপুর)সংবাদদাতা
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে নানামূখী গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। চিকিৎসক ও থানা পুলিশ এটিকে বিষ পানে আত্মহত্যা বলছে। তবে নিহতের পরিবার ও গ্রামবাসির দাবি শ্বশুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিত ভাবে তাকে হত্যা করে মুখে বিষ দিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজাতে চাইছে। এলাকাবাসী এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ স্বরূপ স্বামীর ঘরের সদর দরজার সামনে গৃহবধূকে কবর দিয়েছে।
নিহত গৃহবধূর নাম সালমা আক্তার (২৫)। তার স্বামীর নাম জহিরুল ইসলাম পাটওয়ারী। বাড়ি হাজীগঞ্জ পৌরসভাদ্বীন বদরপুর গ্রামে। স্বামী জহিরুল ইসলাম সৌদি আরবে থাকেন। রোজার আগে সে দেশে এসেছেন।
গতকাল সরজমিনে বদরপুর গ্রামের পাটওয়ারী বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কবর দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে পুরুষ-মহিলা আসা যাওয়া করছেন। গৃহবধূর পরিবারের লোকজন জানান, এখন পর্যন্ত থানা পুলিশের কোন কর্তা ব্যক্তি ঘটনাস্থলে আসেননি।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান জানান, সালমা আক্তারকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ১ টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ ঘন্টা পর সে মারা যায়। শুক্রবার সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ থেকে খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত্মের জন্য চাঁদপুরের সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্রে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফেরদাউস ওয়াহিদ সালমা আক্তার বিষ পানে মারা গেছেন বলে লিখেছেন।
তবে সালমার বাবা জিতু মিয়া দাবি করেন, তার মেয়ের জামাই, শ্বশুর-শাশুড়ী ও দেবর মিলে পরিকল্পিত ভাবে তার মেয়েকে হত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার দিনের বেলায় তার মেয়েকে শ্বশুর বাড়ীর লোকজন কয়েকবার মেরেছে। জিতু মিয়া আরো বলেন, ঈদের আগে জামাইকে একটি মাইক্রোবাস কেনার জন্য আমি জমি বিক্রি করে দেড় লাখ টাকা দিয়েছি। তারপরও তারা আমার মেয়েকে বাঁচতে দিলো না।
সালমার আত্মীয়-স্বজনের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সালমার ৬ বছর বয়সী ছেলে সানিম পাটওয়ারীকে শাশুড়ী মাছুমা বেগম নানীর কাছে পাঠিয়ে দেয়। সানিম তার নানীকে বলেছে, দিনের বেলায় তার দাদা-দাদী ও চাচা কয়েক বার তার মাকে মেরেছে। সালমার স্বামীর বাড়ি ও বাবার বাড়ি পাশাপাশি অবস্থিত।
মামলার তদন্ত্ম কর্মকর্তা ও হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক নেপাল কৃষ্ণ বলেন, এ ঘটনায় মেয়ের বাবা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন। লাশ ময়নাতদন্ত্মের প্রতিবেদনে অস্বাভাবিক কিছু পেলে তখন এটি হত্যা মামলা নেওয়া হবে। ঘটনার স্থলে না যাওয়ার কারণ হিসেবে নেপাল কৃষ্ণ বলেন, ওসি স্যারের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবো।
সালমার শ্বশুর বাড়ীর লোকজন পলাতক থাকায় এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানা যায়নি। বাড়িতে থাকা সালমার চাচী শাশুড়ী জাহানার বেগম বলেন, তাদের সাথে আমাদের জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।
হাজীগঞ্জ এ.এসপি সার্কেল আবু তারেক বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। মেয়ের পক্ষ হত্যা মামলা করতে চাইলে মামলা নেওয়া হবে।
শিরোনাম:
বৃহস্পতিবার , ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ , ২৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।