স্টাফ রিপোর্টার ॥
হজীগঞ্জ উপজেলার ২নং বাকিলা ইউনিয়নের লোত পাড়া গ্রামের ভূইয়া বাড়ির খাজা আহমেদের স্ত্রী ২ সন্তানের জননী মনোয়ারা বেগম (২৮) কে ঈদের কেনাকাটা ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে ভাসুরের স্ত্রী ও সন্তানরা কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ঘটনাটি ঘটেছে ১ জুলাই শুক্রবার দুপুরে।
আহত মনোয়ারার বোন শারমীন জানান, শুক্রবার দুপুরে আমার বোনকে তার ভাসুরের স্ত্রী ও সন্তানরা মারধর করেছে বলে আমাদেরকে জানালে আমি ও আমার ভাই সহ ঘটনাস্থলে যাই। তখন আমরা মনোয়ারার মাথায় কয়েকটি সেলাই ও সারা শরীর রক্তে ভেজা দেখতে পাই। এ ব্যাপরে মনোয়ারাকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় ঈদের মার্কেটিংকে কেন্দ্র করে আমার ভাসুরের স্ত্রী রোকেয়া বেগম, মেয়ে লাভলী, ছেলে বায়োজীদ অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে, লাভলী ও বায়োজীদ আমাকে লাঠি ছঠা দিয়ে এলোপাতারী আঘাত করে এবং একপর্যায়ে রোকেয়া আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে দা দিয়ে মাথায় কোপ মেরে রক্তাক্ত জখম করলে আমি মাটিতে লুঠিয়ে পড়ি। পরে আমার স্বামী ও বাড়ির লোকজন গ্রাম্য ডাক্তার অরুনের কাছে নিয়ে আমার মাথায় কয়েকটি সেলাই করে বাড়িতে নিয়ে আসে।
শারমীন আরো জানান, আমার বোনের অবস্থা খারাপ দেখে আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বোনকে চাঁদপুরে নিয়ে আসতে চাইলে এলাকার মোড়ল নব্য মানিক মেম্বার আমাদেরকে আসতে দেয় নাই এবং আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে। মনোয়ারার অবস্থা গুরুতর দেখে তার স্বামী ও ভাসুর চাঁদপুর বেলভিউ হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার দেলোওয়ার হোসেন তাকে দেখে হাসপাতালে ভর্তির জন্য পরামর্শ¦ দেন। কিন্তু তার ভাসুর মাওলানা জামাল ওরফে মোহেববুল্লাহ ভর্তি না করিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে নিলে তার অবস্থা আরো অবনতি হতে থাকে। বিষয়টি মানিক মেম্বারকে জানালে ও তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর কথা বললে মেম্বার আমাদের সাথে পূণরায় খারাপ আচরন করে এবং হুমকি দিয়ে বলে বিষয়টি মিমাংসা ছাড়া তাকে বাড়ি থেকে বের করা যাবে না এবং আমাকেও বাড়িথেকে বের হতে দেবেনা। মেম্বারের নেতৃত্বে আমার বোনের ভাসুর সহ আমাকে আটকে রাখে। বিষয়টি আমার ভাইদেরকে জানালে তারা মানিক মেম্বারকে ফোন করলে তাদের সাথেও খারাপ আচরণ করে।
আহত মনোয়ারা জানায়, আমরা যদি এ বিষয়ে কোন মামলা করি তাহলে আমার ভাসুরের স্ত্রী রোকেয়া তার বাবা দেবপুরের হাফেজ তোহা ও ভাই কাজী দ্বীন মোহাম্মদসহ ওই এলাকার সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজন দিয়ে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে ও আমার পরিবারের লোকজনকে মারধর করবে বলে হুমকী দেয়। এছাড়াও ইতিপূর্বে তারা আমাকে একাধিকবার মারধর করেছে।
আহত মনোয়ারার ভাই শফিক মিজি জানায়, আমার বোনের শরীরের অবস্থা খারাপ হতে দেখে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সহযোগীতায় গতকাল সোমবার চাঁদপুর সদর হাসপাতালে এনে ডাক্তার দেখাই। পরে চাঁদপুর শহরের দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করাই। বর্তমানে সে ডাঃ হাসানুর রহমানের তত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে মনোয়ারার পরিবারের লোকজন জানায়।