দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। একদিনে রেকর্ড ৬৩৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে একজনের। এ নিয়ে এ বছর ৫৬ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। নতুন ডেঙ্গু রোগী নিয়ে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৫৮ জনে। গতকাল সারা দেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৬৩৫ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৫১৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ১১৭ জন। ঢাকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১ হাজার ৬৪৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫০০ জন। এতে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরের ১লা জানুয়ারি থেকে ১লা অক্টোবর পর্যন্ত হাসপাতালে সর্বমোট রোগী ভর্তি ছিলেন ১৬ হাজার ৭২৭ জন। সেপ্টেম্বর মাসে দেশে সর্বমোট ৯ হাজার ৯১১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মারা গেছে ৩৪ জন রোগী।
দেশের ৫০টি জেলাতেই এ বছর ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলা কক্সবাজারে। এ জেলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ১৮৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৭৮ জন, সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন ১ হাজার ৯০ জন আর মারা গেছেন ১৮ জন। ২০০০ সালের পর থেকে প্রতিবছর বহু মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে, মৃত্যুও হচ্ছে। করোনা মহামারি শুরুর বছর ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম ছিল। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৮ হাজার ৪২৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়। করোনা মহামারি শুরুর আগে ২০১৯ সালে এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন।
প্রতি বছরের মতো এ বছর বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখা রাজধানীতে মশার জরিপ করেছিল। জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছিল, গত বছরের চেয়ে এ বছর একই সময়ে রাজধানীতে এডিস মশার লার্ভা বেশি দেখা গেছে। এরপর কীটতত্ত্ববিদ ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলেছিলেন, এ বছর বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি হওয়ার ঝুঁকি আছে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগও নেয়া হয়। পরিচালনা করা হয় অভিযান। বিভিন্ন বাসা বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় জরিমানা করা হয়। এসব উদ্যোগের পরও সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় এডিস মশার ঘনত্ব দেখা যাচ্ছে।