প্রতিনিধি
ফরিদগঞ্জ-চাঁদপুর-শরীয়তপুর যাতায়াতে হরিণা ফেরি ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারের ক্ষেত্রে দ্বিগুণ টোল আদায় করা হচ্ছে। গোপন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টোল আদায়ের নামে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি। নির্ধারিত ১৪শ’ টাকার টোলের স্থলে আদায় করা হচ্ছে ৩ হাজার টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অংকের।
ওই ঘাটে অতিরিক্ত টাকা দিলেই পাওয়া যায় সিরিয়াল কিংবা স্পেশাল লাইন। নচেৎ ঘণ্টার পর ঘণ্টা নয়, দিনের পর দিন পণ্যবাহী ট্রাক আটকে থাকে। আর যথাসময়ে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার না হতে পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকসহ ব্যবসায়ীরা। নিয়ম রয়েছে কাঁচামাল পরিবহন গাড়িগুলো সিরিয়াল কিংবা স্পেশাল হিসেবে গণ্য হয়। তবে বাস্তবতা হচ্ছে নির্ধারিত টোলের দ্বিগুণ কিংবা তার বেশি টাকা প্রদানে দর কষাকষিতে সম্মতি হলেই লোহা ভর্তি ট্রাকও স্পেশাল হিসেবে গণ্য হয়ে যায়। এতে রাজি না হলে ট্রাকগুলো সারিবদ্ধভাবে রাখা হয় ঘাটের পার্শ্ববর্তী বিআইডাব্লিউটিএ�র হরিণা ঘাট ফেরি টার্মিনালে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ওই ফেরি ঘাট দিয়ে খুলনা, বরিশাল, যশোর, বেনাপোল ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শত শত ট্রাক চলাচল করে থাকে। ফরিদগঞ্জ-শরীয়তপুর সড়কে যাতায়াতের ক্ষেত্রে হরিণা ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারে প্রতিটি গাড়ি বাবদ সরকার নির্ধারিত ১৪শ� টাকা টোল আদায় করার নিয়ম রয়েছে। ইজারাদারের লোকজন গাড়ি সিরিয়াল দেয়া কিংবা স্পেশালের নামে আদায় করছে ৩ হাজার টাকা থেকে ৪-৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। গাড়ির জটলা বেশি হলে ওই টোল আদায়ের পরিমাণ আরো বেড়ে যায় বলে বেশ ক�জন ট্রাক ড্রাইভার জানিয়েছে।
গত মঙ্গলবার সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঘাট ইজারাদারের পক্ষের লোকজন দিনে রাতে ডিউটি করে এ টোল আদায় করেই যাচ্ছে। আর দেয়া হচ্ছে নির্ধারিত ১৪শ� টাকা টোল আদায়ের রসিদ। এর সাথে আদায় করা বাকি টাকার কোনো রসিদ দেয়া হয় না। রসিদ ছাড়া আদায় করা টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা হয়ে বিভিন্ন পকেটে চলে যাচ্ছে।
টোল আদায়ের জন্য বিআইডাব্লিউটিসির নাম দিয়ে ছাপানো রসিদে টোল ১৪শ� টাকার কথা উল্লেখ থাকলেও ওই রসিদে রহস্যজনক কারণে নেই ইজারাদারের নাম ঠিকানা কিংবা যোগাযোগের নেই কোনো মাধ্যম।
যশোর এলাকার এক ট্রাক ড্রাইভার আমিন বলেন, দেশের মধ্যে আরো যে ক�টি ফেরি আছে এর মধ্যে শরীয়তপুর ফেরি পারাপার হতে নির্ধারিত টোলের চেয়ে দ্বিগুণ টোল দিতে হচ্ছে। এ টাকা না দিলে শুধু ঘণ্টা নয়, দিনের পর দিন এখানে আটকে থাকতে হয়। টোল আদায়ের দ্বিগুণের চেয়ে বেশি টাকা দিতে রাজি হলেই সিরিয়াল কিংবা স্পেশাল হিসেবে ফেরি পার হওয়া যায়। নোয়াখালীর আরেক ট্রাক ড্রাইভার সলেমান জানান, ড্রাইভারদের জিম্মি করে এ ঘাটের টোল আদায়ের নামে প্রকাশ্যে চলছে চাঁদাবাজি। টোল আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশে প্রতিবাদও করার সাহস পাচ্ছে না।
উক্ত ফেরিঘাটের টোল আদায়ে ইজারাদারের নিয়োগকৃত হাজ্বী সাত্তার রাঢ়ী মুঠোফোনে নিজেকে ইজারাদারের ক্যাশিয়ার দাবি করে বলেন, ঘাটের পাশে থাকা টার্মিনাল পার্কিং চার্জসহ লাইনম্যানের মজুরি বাবদ কিছু টাকা বাড়তি নেয়া হয়। তবে সব গাড়ি থেকে দ্বিগুণ টোল আদায়ের কথা সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন।