মিজানুর রহমান
৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে চাঁদপুরের রাজপথে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ছাত্রলীগ কর্মী জিয়াউর রহমান রাজু। এরপর চাঁদপুরে রাজনৈতিক সহিংসতায় আর কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু ২৯ জানুয়ারি ২০১২ হতে ৩ ডিসেম্বর ২০১৩ প্রায় এক বছর ১০ মাস এ সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে চাঁদপুরে গুলিতে মারা গেছে ৮ জন। এদের মধ্যে চাঁদপুর শহর এলাকায় ৫ জন ও ফরিদগঞ্জে ৩ জন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরো অনেকে। নিহতের মধ্যে ৬ জন বিএনপির, ১ জন জামায়াতের ও ১ জন সাধারণ দিনমজুর।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বিএনপির নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় কর্মসূচী গণমিছিল চাঁদপুরে পালনকালে হাসান আলী হাই স্কুল মাঠ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কে মিছিলকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সে সময় গুলিতে লিমন ছৈয়াল নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক কর্মী ও আবুল হোসেন মৃধা নামে বিএনপির এক কর্মী নিহত হয়। পুলিশ তখন বলেছিলো আবুল ও লিমন পুলিশের গুলিতে মারা যায়নি। এরপর চলতি ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর ফরিদগঞ্জে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ১৮ দল মিছিল বের করলে সে মিছিলে গুলিতে বাবুল, আরিফ ও জাহাঙ্গীর নামের ফরিদগঞ্জ যুবদল ও ছাত্রদলের ৩ নেতা-কর্মী নিহত হন। এ ঘটনার রেশ না কাটতেই ৩ দিনের মাথায় ২৮ অক্টোবর বিরোধী দলের ডাকা টানা ৩ দিনের হরতালের ২য় দিন চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার নতুন রাসত্দায় পুলিশের সাথে হরতালকারীদের সংঘর্ষের সময় আরজু (১৪) নামে এক নিরীহ কিশোর মারা যায়। সবশেষে নির্মম ঘটনাটি ঘটে গতকাল ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে চাঁদপুর শহরের জেএম সেনগুপ্ত রোডস্থ পূরবী মার্কেটের সামনে। বিএনপির ডাকা ১৮ দলের টানা ৬ দিনের অবরোধ কর্মসূচির ৪র্থ দিনে গতকাল অবরোধের সমর্থনে বিএনপি ও জামায়াত শহরে মিছিল বের করলে ওই সময় পুলিশ ও অবরোধকারীদের সাথে সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে তাজুল ইসলাম রতন (২৬) নামে কলেজ ছাত্রদলের এক নেতা ও শিবির কর্মী জেডিসির ফলপ্রার্থী সিয়াম (১৩) নিহত হন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের ৫ বছর সময়কালে চাঁদপুর ও ফরিদগঞ্জে ৮ জন নিহত হবার ঘটনাকে জনগণ এবং রাজনৈতিক বিশেস্নষকরা ভালো চোখে দেখছে না। এ সব হত্যাকাণ্ডের আজ পর্যনত্দ সঠিক তদনত্দ ও বিচার না হওয়ায় ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে চাঁদপুরের জন্যে তা অশনি সঙ্কেত বলে মনে করছেন তারা।