ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি–
ফরিদগঞ্জ উপজেলার শোভান গ্রামের শহীদ তালুকদার দীর্ঘ ৩৫বছর মৌসুমী ভিবিন্ন সব্জি চারা উৎপাদন করে ও সব্জির চাষ করে এখন তিনি স্বাবলম্বী। শুধু ফরিদগঞ্জ নয়, জেলা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে তার সব্জির চারা উৎপাদন এখন মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চাঁদপুর-রায়পুর সড়কের শোভান গ্রামের ব্রিজ সংলগ্ন মোড়ে ও ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে মনোরম স্থানে এই সবজি চাষের দৃশ্য নজর কাড়ে। সারিবদ্ধভাবে যতœসহকারে উৎপাদনের কাজ করেন শহীদ তালুকদারসহ বেশ কয়েকজন কৃষক। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা এ কৃষি কাজে সময় দেন। সব্জির বীজ সংগ্রহ করে চারা উৎপাদনের পাশাপাশি তারা বিভিন্ন শাক-সব্জিরও উৎপাদন করেন। তাদের চারা লাগানো প্লটের চারপাশ ঘিরে রয়েছে অনেক পেঁপে গাছ। এসব গাছগুলোতে অনেক পেঁপে ধরেছে। অর্থ্যাৎ, কৃষকদের জমির পরিমাণ কম হলেও শহিদ তালুকদারের সব জায়গাটুকু শতভাগ কাজে লাগাচ্ছেন।
কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা হয় তারা জানায়, কৃষি কাজ সম্পর্কে বলার জন্য। অনেকেই গুছিয়ে কথা বলতে না পারায় সবচেয়ে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কৃষক শহীদ তালুকদারকে দেখিয়ে দেয়।
কৃষক শহীদ তালুকদার জানায়, তার ২ ছেলে ১ মেয়ে। বড় ছেলে এ বছর এইচ.এস.সি. পাস করেছে। তার পরেরজন এইচ.এস.সি. পরীক্ষা দিবে ২০১৪ সালে। আর ছোট মেয়ে স্কুলে পড়ে। কৃষি কাজ করেই তার সংসার চলে। প্রতি বছর কমপেক্ষ মৌসুমে ১ লাখ টাকার অধিক মূল্যের চারা বিক্রি করেন।
খুব ছোট বেলা থেকেই তার বীজের চারা উৎপাদন আগ্রহ জাগে। সে থেকেই কোন পরিকল্পনা ছাড়াই এ কৃষি কাজে জড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে তার বয়স প্রায় ৫০ এর কাছে। তার এ দীর্ঘদিনের মধ্যে এ বছর ছাড়া বিগত বছরে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ নিয়েছে কৃষি কাজের উপর। উপজেলায় যে সব কৃষি কর্মকর্তা আসেন, অনেকেই তার এ প্লটগুলো পরিদর্শন করেন এবং যাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, বাস্তবে দেখানোর জন্যও এখানে নিয়ে আসেন।
শহীদ আরো জানায়, কুমিল্লা, লাকসাম, লক্ষ্মীপুর, ও নোয়াখালী জেলা থেকে পূর্বে যারা চারা ক্রয় করতে আসতো, তারা অনেকেই এখন আর আসেন না। তারা আমার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেরাই চারা উৎপাদন করছে। এছাড়াও গত বছর সিলেট থেকে ট্রাক নিয়ে ব্যবসায়ীরা এসে চারা নিয়েছে এবং উৎপাদনের কৌশল জেনে গেছে। তারা তাকে সিলেটে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য।
তিনি এ চারা উৎপাদনে সাড়া না পেলেও এখন এসব চারা বিক্রি করে নিজের সংসার খরচ চালিয়ে ভালো সঞ্চয় করতে পারেন। তার দেখা-দেখি তার বাড়ীর মিজান, ভুট্টো, আলমগীর, ইব্রাহীম তালুকদার, বাবুল গাজী পাশাপাশি চারা উৎপাদন শুরু করেছে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী টুব্গী গ্রামের মিলন, মিন্টু, জসিম ও লোকমান শেখ নতুন করে এ কৃষি কাজে অংশগ্রহণ করেছে।
বেকার যুবকদের বসে না থেকে যাদের জমি রয়েছে প্রশিক্ষণ নিয়ে এ ধরনের উৎপাদনমূখী লাভজনক কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষক শহীদ তালুকদার। পাশাপাশি কৃষি কর্মকর্তাদের এসব উদ্যোক্তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ