ফরিদগঞ্জে মাছের ঘেরের বাঁধ কাটা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে সাবেক যুবলীগ নেতা কুখ্যাত সন্ত্রাসী হাজী মাকসুদুল বাসার বাঁধন পাটওয়ারী আটক হয়েছে। এ সময় তার কাছ থেকে চাইনিজ কুড়াল, ছোরা ও ককটেল সদৃশ ৪টি বস্তু উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ব্যাপারে গতকাল শুক্রবার বিকেলে পুলিশের উপর হামলা ও অস্ত্র এবং বিস্ফোরক আইনে দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। ঘটনাটি শুক্রবার সকালে ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার চরকুমিরা গ্রামে ঘটে। যদিও আটক বাঁধন পাটওয়ারী এ ঘটনাকে পরিকল্পিত ও তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন।
জানা গেছে, ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের চরকুমিরা গ্রামে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন বাবুল পাটওয়ারী গং এবং একই গ্রামের মরহুম মাহবুবুল বাশার কালু পাটওয়ারীর ছেলে ফরিদগঞ্জ পৌর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদগঞ্জ পৌর নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী মাকসুদুল বাসার বাঁধন পাটওয়ারী গংয়ের পাশাপাশি দুটি মাছের ঘের রয়েছে। দুটির মধ্যেই মাছের আবাদ হয়। গত ক’দিন ধরেই একে অপরের বিরুদ্ধে ওই ঘেরের বাঁধ কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার রাতে ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন বাবুল পাটওয়ারী গংয়ের আবাদকৃত মাছের ঘেরের বাঁধ কেটে দেয়ার ঘটনা ঘটে। এতে পানির স্রোতে মাছ ভেসে যায়। ওই মাছের ঘেরের পাহারাদার সাহাবুদ্দিন জানান, বাঁধ কেটে দেয়ার পর বাঁধন পাটওয়ারী নিজে ওই মাছের ঘেরের বাঁধের পাশে দাঁড়িয়ে থাকে। সে বাঁধ কাটা স্থানের কাছে যেতে চাইলে বাঁধন পাটওয়ারী তাকে বাধা দেয় এবং অস্ত্র দিয়ে মারার হুমকি দেয়। পরে মাছের ঘেরটি রক্ষার জন্যে মালিকপক্ষ থানা পুলিশের শরণাপন্ন হয়। গতকাল শুক্রবার সকালে ফরিদগঞ্জ থানার এসআই নাছিরের নেতৃত্বে একটি দল সেখানে গেলে তাদের সাথে বাঁধন পাটওয়ারীর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় পুলিশ তার কাছ থেকে একটি চাইনিজ কুড়াল, একটি ছোরা এবং ককটেল সদৃশ ৪টি বস্তু উদ্ধার করে এবং তাকে আটক করে। পরে বিকেলে এসআই নাছির উদ্দিন বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধা, অস্ত্র আইন ও বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার ব্যাপারে গিয়াসউদ্দিন বাবুল পাটওয়ারীর ভাই সালাউদ্দিন পাটওয়ারী জানান, গত ক’দিন ধরে তারা মাছের ঘের থেকে মাছ ধরছেন। বাঁধন পাটওয়ারী তাদেরকে নানাভাবে বাধা দিচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি ঘেরের বাঁধ কেটে দেন। এতে তাদের বিপুল পরিমাণ মাছ ভেসে গেছে।
ঘটনার বিষয়ে আটক বাঁধন পাটওয়ারী জানান, তাকে মিথ্যা ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে। এটি পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। তিনি পুলিশের উপর হামলা করেননি। মাছের ঘেরের বাঁধ তারা কেটে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদ হোসেন জানান, আটক বাঁধন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গত কয়েক বছর আগে বাঁধন পাটওয়ারী ফরিদগঞ্জে প্রকাশ্যে অস্ত্র (পিস্তল) উঁচিয়ে আলোচনায় আসে। তার বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জে সন্ত্রাসী কর্মকা-ের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।