ফাহিম শাহরিন কৌশিক খান*
চাঁদপুর মেঘনা নদীতে আলু বাজার সংলগ্ন ঘাড়–য়ার চর এলাকায় যাত্রীবাহী ট্রলারে গতকাল ১০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ডাকাতি সংঘটিত হয়। এ ঘটনায় ট্রলারের চালকসহ সন্দেহভাজন ৩ জনকে আটক করেছে চাঁদপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি।
জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় চাঁদপুর পুরাণবাজার ভূঁইয়ার ঘাট থেকে সকাল সাড়ে ৭টায় ৩০/৩৫ জন যাত্রী নিয়ে শরীয়তপুরের উদ্দ্যেশে একটি যাত্রীবাহী ট্রলার রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে আলু বাজার এলাকার ঘাড়–য়ার চর নামক স্থানে একটি স্প্রিড বোর্ট নিয়ে ৭/৮ জন ডাকাত দল ওৎ পেতে থাকে যাত্রীবাহী ট্রলারটি নদীর মাঝখানে গতীরোধ করে। এসময় ডাকাতদল ধারারো অস্ত্র দিয়ে ট্রলারের যাত্রীদের মারধর করে নগদ টাকা, মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ খবর আলু বাজার পুলিশ ফাঁড়ি ও চাঁদপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়িকে জানানো হলে যাত্রীবাহী ট্রলারের মালিক শুকানি ও সারেংকে খবর দিয়ে নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম ট্রলারে থাকা ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সন্দেহ জাগে। তাদের কথা এলোমেলো দেখে ডাকাতির সময় পুলিশ তাদেরকে আটক করে এবং তাদের দেহ তল্লাশী করে নগদ ৫৬ হাজার টাকা উদ্ধার করে। আটককৃতরা হলোঃ শরীয়তপুর জেলার কালা (২৫), কেরামত মাঝী (৪৮), কালিমুদ্দিন বালা (২২)। এ ঘটনায় মামলা প্রস্তুতি চলছে বলে জানা যায়।
এদিকে নৌ-পুলিশ মেঘনায় অভিযান চালিয়ে ৬টি স্প্রিড বোর্ট জব্ধ করে নিয়ে আসে। আলু বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ শরীয়তউল্যাহ্ ডাকাতি হওয়া ট্রলারের যাত্রী ফেরি ঘাটের দুলালকে সাথে নিয়ে ¯িপ্রড বোর্ট যোগে চাঁদপুরের ১১টি স্প্রিড বোর্ডের মধ্যে ৯টি স্প্রিড বোর্ট দেখে ডাকাতদের স্প্রিড বোর্ট শণাক্ত করতে পারেনি। বাকি দু’টি জনৈক বালুমহলের মালিকের স্প্রিড বোর্ট হওয়ায় সেগুলো দেখার সুযোগ হয়নি। ট্রলারের যাত্রী দুলাল জানায়, চাঁদপুর থেকে সকালে ট্রলারযোগে আলুর বাজার ফেড়িঘাট যাওয়ার পথে পথিমধ্যে লাল বর্ডারের একটি স্প্রিড বোর্ট নিয়ে ৭/৮ জনের একটি ডাকাত দল অস্ত্র নিয়ে এসে ট্রলারে যাত্রীদের বেদম মারধর করে টাকা-পয়সা, মোবাইলসহ বিভিন্ন সামগ্রী ছিনতাই করে। এদের মধ্যে হারুন কবিরাজের ৫০ হাজার টাকা, আহাম্মদ আলীর ৬ হাজার টাকা ও তার নিজের ১১ হাজার ৫শ’ টাকাসহ কয়েকজনের মোবাইল ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যায়।
ট্রলারের চালকের সাথে স্প্রিড বোর্টের ডাকাতদের যোগসাজসে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। কারণ, ডাকাতি হওয়া ৫৬ হাজার টাকা চালকের কাছ থেকে উদ্ধার করে। ডাকাত দল জনৈক বালুমহল মালিকের স্প্রিড বোর্টটি নিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। আলুর বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ শরীয়তউল্যাহ্ নদীতে অভিযান পরিচালনার সময় খবর পেয়ে ডাকাতদলের ব্যবহৃত স্পিড বোর্টটি অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রাখে। নদীতে ডাকাতির ঘটনার খবর পেয়ে চাঁদপুরের প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা নৌ-ফাঁড়িতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে ঘটনা সম্পর্কে জানেন। এ ব্যাপারে নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম জানায়, নদীতে ট্রলারের ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে প্রাথমিকভাবে ট্রলারের চালককে সন্দেহ করা হয়। কারণ, ডাকাতি হওয়া টাকা তার কোমড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কোন যাত্রী এখনো অভিযোগ দায়ের করেনি। নদীতে এ ডাকাতির ঘটনার সাথে যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হবে।
এসকল স্প্রিড বোর্ট দিয়ে রাতের আঁধারে অভয়াশ্রম চলাকালীন সময়ে ইলিশ মাছ ঢাকায় পাচার করে ও বিভিন্ন ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। এদিকে মেঘনা নদীতে এসকল স্পিড বোর্টগুলো সম্পূন্নরূপে বন্ধ করে দেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানায় ভুক্তভোগী মহল।
শিরোনাম:
সোমবার , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৮ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।