শওকত আলী:
চাঁদপুরে বিআইডাব্লিউটিএ কর্মকর্তারা বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৫০ লক্ষ টাকার কাঠ সহ আটক ৮টি অবৈধ বাল্কগেটকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করে। নৌ-যানে থাকা ৫৬ জন শ্রমিককে আদালতে প্রেরণ করলে তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলা কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে।
বুধবার বিকেল ৫টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কামাল মোঃ রাশেদ চাঁদপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়িতে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে জব্দকৃত ৮টি বাল্কগেট কে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করে নগদ অর্থ আদায় করেন। ভ্রাম্যন আদালত পরিচালনার সময় চাঁদপুর নৌ-বন্দরের উপ-পরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, বি.আই.ডব্লিউ.টি এর পরিদর্শক মোঃ রেজাউল করিম,নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ মোশারফ হোসেন সহ সঙ্গীয় ফোর্স ও বাল্কগেটের মালিকরা উপস্থিত ছিলেন। এসত্যতা স্বীকার করে নিশ্চিত করেছেন নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ ।
৮টি বাল্কগেটে থাকা আটককৃত ৫৬ জন শ্রমিককে গতকাল বুধবার দুপুরে চাঁদপুর আদালতে প্রেরন করা হলে বিচারক তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দ্দেশ প্রদান করেন।
উল্লেখ্য,মঙ্গলবার বিশেষ অভিযান চালিয়ে সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সদর উপজেলার মেঘনা নদীর ল¹িমারারচর, আখনের হাট হরিনা, আলু বাজারসহ কয়েকটি এলাকা থেকে অবৈধ ৮ টি বাল্কগেট সহ ৫০ লক্ষ টাকার কাঠ ও ৫৬ জন শ্রমিককে আটক করে চাঁদপুর বিআইডাব্লিউটিএ কর্মকর্তারা । ১৯৭৬ সালের ইংল্যান্ড শিফিং আইনের ৮১ ধারা মোতাবেক নৌ-যানগুলো কোন কাগজপত্র না থাকায় এগুলোকে জব্দ করা হয়।
জরিমানা দেওয়া বাল্কগেট গুলো হচ্ছে এমভি আরিফুল, এমভি আফছানা মিমি, মায়ের বাধন, মায়ের দোয়া, অনিক-অনিকা, ফজর, মারূফ সাফুর, রফিক-নুরূল পরিবহন।
খবর নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশ সমুদ্র অধিপ্তরের পরিবহন বিভাগের সার্ভে রেজিস্ট্রেশন ও চাঁদপুর নৌ-বন্দর কর্তৃপক্ষের কনজারভেটিভ অনুমতি বা ছাড়পত্র না থাকায় এসব বাল্কগেট জাতীয় জাহাজ অবৈধ যাতায়াত করায় এগুলোকে আটক করা হয়। নৌ-বন্দর কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রেজাউল করিম, নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ মোশারফ হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স ও ৮০ জন শ্রমিককে সাথে নিয়ে চাঁদপুর নৌ-সীমানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এ সব জাহাজগুলোকে আটক করা হয়।
চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অবৈধভাবে মেঘনায় দীর্ঘদিন একটি চক্র কাঠ, তেলসহ বিভিন্ন চোরাকারবারি করে আসছিলো। এরই সুত্র ধরে উদ্ধার হওয়া গাছ ও বাল্কগেট আটক করা হয়। ১৯৭৬ সালের ইংল্যান্ড শিফিং আইনের ৮১ ধারা মোতাবেক নৌ-যানগুলো কোন কাগজপত্র না থাকায় এগুলোকে জব্দ করে নৌ-ফাঁড়ি পুলিশের হেফাজতে দিয়ে দেওয়া হয়।
আটককৃত অবৈধ গাছ স্বরুপকাঠি থেকে ঢাকা মুন্সিগঞ্জ সহ আশে পাশের এলাকায় পাচার হচ্ছিলো। খবর পেয়ে মেঘনা নদীর ল¹িমারার চর এলাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে একে একে অভিযান চালিয়ে ৮ টি বাল্কগেট সহ ৫০ লক্ষ টাকার গাছ ও ৫৬ জন শ্রমিককে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জব্দকৃত বাল্কগেটগুলোর প্রত্যেকটিকে ১ লক্ষ টাকা হতে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান থাকায় জেলা প্রশাসন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে জাহাজগুলোকে জরিমানা করা হবে বলে বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান।
এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কামাল মোঃ রাশেদ,বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান ,পরিদর্শক রেজাউল করিম নৌ-ইনচার্জ মোশারফ হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স সহ ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান কালে বুধবার সন্ধ্যায় মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়ে ঢাকা-লালমোহনগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি ফারহান-৩ হতে ৩ হাজার মিটার কারেন্টজাল ও অবৈধ নিষিদ্ধ ঘোষিত ১০ বস্তা পলিথিন জব্দ করে । যার ওজন প্রায় ১০মন, মূল্য ১ লক্ষ টাকা । পরে পলিথিন ও জালগুলো নৌ-বন্দর ঘাটে এনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে ধ্বংস করা হয়।