মিজানুর রহমান রানা
ডাক্তার, রোগী ও হাসপাতালে আগত মানুষদের সাথে র্দুব্যবহার, কর্তব্য কাজে গাফেলতি, স্বেচ্ছাচারিতা এবং ডাক্তার সুলভ আচরণ না করা, সাংবাদিকদের কর্তব্য কাজে বাধা এবং অসদাচারণ এসব হাজার অভিযোগ রয়েছে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার হামিমা বেগমের বিরুদ্ধে। চাঁদপুরের কয়েকটি দৈনিক এসব বিষয় নিয়ে গত সপ্তাহে বেশ ক’টি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তত্ত্বাবধায়ক, সিভিল সার্জন ও বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলে এ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও এখনও জরুরি বিভাগের মতো একটি স্পর্শকাতর স্থানে বহাল তবিয়তে শির টান টান করে বসে আছেন ডাক্তার হামিমা।
এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক, সিভিল সার্জন, বিএমএ চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার মাহমুদুন নবী মাসুম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বললেও বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি। সেজন্যে ডাক্তার হামিমা বেগম তার স্বেচ্ছাচারিতার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছেন।
সরেজমিনে গত মঙ্গলবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডাক্তার হামিমার কাছে রোগী আসলেই তিনি রোগীদের সাথে নানা বাগবিতন্ডা শুরু করেন। এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী বলেই বসেন, ডাক্তার আপা আপনি কি ডাক্তার নাকি দারোগা? দারোগার মতো আমাদের সাথে এভাবে মেজাজ দেখিয়ে কথা বলছেন কেনো? একথা শুনে ডাক্তার হামিমা আরো চটে যান এবং রোগীকে জরুরী বিভাগ থেকে বের করে দেন।
ডাক্তার হামিমার এমন অডাক্তার সুলভ আচরণ সম্পর্কে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. প্রদীপ কুমার দত্তের সঙ্গে কথা বললে তিনি বিষয়গুলো নোট করে নেন এবং তিনি জানান ডাক্তার হামিমার স্বেচ্ছাচারিতার এসব বিষয় তিনি জানেন না। এই মাত্র জানলেন। তিনি নোট করে নিয়েছেন এবং অভিযোগের সত্যতার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তবে সাধারণ রোগী ও অভিজ্ঞমহলের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তত্ত্বাবধায়ক আসলেই সবই জানেন এবং সবই বুঝেন। ডাক্তার হামিমার এসব খামখেয়ালিপনা, স্বেচ্ছাচারিতা আজকের বিষয় নয়। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি এমনটা করে আসছেন। তিনি বেশ কিছুদিন পূর্বে ডাক্তার মাহমুদুন নবী মাসুমের এবং ডাক্তার হারুনুর রশিদ সাগরের রেফার করা রোগীর ব্যবস্থাপত্রও জিদ করে ছিড়ে ফেলেছেন। অভিজ্ঞমহল জানায়, এসব তিনি করতে পারেন কারণ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে তত্ত্বাবধায়ক ডা. প্রদীপ কুমার দত্ত অপরাগ। কারণ ডাক্তার হামিমার হাত বেশ লম্বা। সেজন্যেই তিনি হাসপাতালের মতো একটি পবিত্র কর্মময় স্থানে বসে নিজের খামখেয়ালিপনা, স্বেচ্ছাচারিতা করে যাচ্ছেন। অনেক তাকে পাগল বা মানসিক রোগী অভিহিত করলেও আসলে তিনি সুস্থ কিন্তু অসুস্থের ভান করে হাসপাতালে নিজের আধিপত্য বিস্তার করে আর্থিক লাভবান হওয়ার জন্যে পাগল বা অসুস্থের ভান করছেন।
সাধারণ রোগীদের অভিমত, এমন মানসিক ভারসাম্যহীন একজন ডাক্তার জরুরি বিভাগের মতো স্পর্শকাতর স্থানে কোনোমতেই রাখা উচিত নয়। কারণ জরুরি বিভাগে চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দুর্ঘটনা, পোড়া যাওয়া, মুমূর্ষ রোগীরা তাৎণিক চিকিৎসার জন্যে আসে। কিন্তু সেই বিভাগে রোগীর পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রতি নজর না দিয়ে নিজের খামখেয়ালীপনা করে কাজ করে যাওয়া কোনো মতেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই অবিলম্বে ডাক্তার হামিমাকে ওটি, জরুরি বিভাগসহ চাঁদপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যকাজ থেকে বিরত রেখে জেলার অন্য কোথাও বদলি করলে চাঁদপুরের অসহায় রোগীদের উপকার হবে বলে মনে করেন তারা।
শিরোনাম:
রবিবার , ১৫ জুন, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ১ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।