শওকত আলী:
চাঁদপুরের মতলব উওর উপজেলা থেকে বাবা-মায়ের অজান্তে এলাকার ছোট্ট শিশুদের সাথে খেলা করা থেকে অপহরন চক্র সুন্দর ফুটফুটে শিশু আফরিন জাহান(২)কে কৌশলে অপহরন করে চাঁদপুরে নিয়ে আসে। যে কোন অজ্ঞাত কারনে চক্র শিশুটিকে ওয়ারল্যাসে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় বলে পুলিশের ধারনা।
শনিবার দুপুর থেকেই শিশু আফরিন জাহান নিখোঁজ হয় । তার পিতা-মাতা-আত্বীয় স্বজন এখানে সেখানে শিশুটির সন্ধান করছিলেন পাগল হয়ে। বাবা-মা আর স্বজনরা দিশে হারা হয়ে যায়। পরে রবিবার এলাকাবাসী একজন জানালো ফেসবুকে শিশুটির ছবি প্র্রকাশ হয়েছে। সে এখন চাঁদপুর শহরে আছে । এরপর রবিবার রাতে বুকফাঁটা হৃদয় নিয়ে বাবা-মা ছুটে এলেন চাঁদপুর থানায়। রাতে চাঁদপুর মডেল থানা থেকে শিশুটিকে নিয়ে মতলব উওর এলাকায় বাড়িতে ফিরলেন তার বাবা-মা ।
শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে সাতটার দিকে শহরের চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় সৌদিয়া সিটির সামনে শিশুটিকে পাওয়া যায়। মা-বাবার কাছে যাবে বলে শিশুটি ক্রগাগত কেঁদে চলছিল। স্থানীয় দুই জন আইনজীবী দেখতে পেয়ে ফুটফুটে শিশুটিকে উদ্ধার করে। কিন্তু শিশুটি তার পরিচয় বলতে পারার মত কথা শেখেনি এখনও। কে তার বাবা, কে মা, সে কীভাবে এখানে এলো, তার কিছুই বলতে পারছিল না এলাকাবাসী।
পরে শিশুটিকে উদ্ধার করা আইনজীবী ফয়সাল ও মোবারক হোসেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার পরামর্শে চাঁদপুর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে। পরে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে তাদের তত্ত্বাবধানে নিয়ে যান শিশুটিকে।
এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশুটির তিনটি ছবি পোস্ট করেন একজন। আর তখনই তার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে চাঁদপুরে। জানতে পারেন শিশুটির বাবাও মা।
ফেসবুকে নিজের ছেলের ছবি দেখে ছুটে আসেন বাবা নজরুল ইসলাম ও মা ফাতেমা আক্তার। তাদের বাড়ি একই জেলার মতলব উত্তর এলাকার মান্দার তলী প্রধানীয়া বাড়ি,তার দাদার নাম মোস্তফা কামাল প্রধানীয়া।
বাবা-মা চাঁদপুর থানায় আসার পর জিম্মাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। তারা শিশুটিকে নিয়ে আসে থানায়। রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে চাঁদপুর মডেল থানা থেকে শিশুটিকে বুঝে নেন তার বাবা-মা। শিশুটির বাবা-মা সঠিক কিনা তার জন্য পরীক্ষাও দিতে হয় বাবা-মাকে । থানার ডিউটি অফিসার এএস আই দেলোয়ার হোসেন শিশুটিকে বাবা-মায়ের কাছে তুলে দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেন।
বাবা মা জানান, শিশুটির নাম আফরিন জাহান। তবে শিশুটি কীভাবে সেখানে গেলো সেটি তারা বলতে পারেননি। তারা জানান, শনিবার দুপুর থেকেই তাদের মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। নানান জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে হয়রান হচ্ছিলেন । এর মধ্যে একজন ফেসবুকে তার মেয়ের ছবি দেখান,তাতে তিনি স্বস্তি পান। ।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অলিউল্লাহ অলি জানান, আমাদের ধারণা, পাচারকারী চক্র শিশুটিকে নিয়ে এসেছিল। কোনো কারণে বেকায়দায় দেখে হয়ত তাকে ফেলে রেখে সটকে পড়েছে।শিশুটিকে বাবা-মা পেয়ে কোলে নিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং জড়িয়ে ধরে চুমু খায় ’