বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা ৭২ ঘণ্টার অবরোধের প্রথম দিনে চাঁদপুরে সড়ক ও রেল লাইনে অগ্নিসংযোগ করে অবরোধকারীরা। চাঁদপুর শহরের মঠখোলা ওয়াপদা গেট এলাকায় অবরোধকারীদের পুলিশ ধাওয়া করলে তারা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশের পিএসআই মোঃ রফিকসহ কয়েকজন আহত হয়। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মানিকুর রহমান মানিকের নেতৃত্বে ছাত্রদলের একটি গ্রুপ মিশন রোড ও বকুলতলা এলাকায় রেল লাইনে অগ্নিসংযোগ করে। সকাল ১০টায় শহরের উপজেলা পরিষদের সামনে অবরোধকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশ ধাওয়া করলে অবরোধকারীরা পালিয়ে যায়। বকুলতলা এলাকায় রেল লাইনে অগ্নিসংযোগকালে ওই এলাকা থেকে পুলিশ রুবেল নামে একজনকে আটক করে। তাছাড়া চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিক্ষিপ্ত সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ বিভিন্ন উপজেলা থেকে অবরোধের সাথে জড়িত ১০ জনকে আটক করে।
পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাহবাগে বাস পোড়ানো ও হতাহতের ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও জামায়াতে ইসলামীর ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ। ওই মামলা দায়েরের আট ঘণ্টা পর গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে আবারো সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। গতকাল শনিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ অবরোধ কর্মসূচি চলবে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত।
একতরফা নির্বাচনের তফসিল বাতিল, নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ও গ্রেফতার মামলা, জুলুম-নির্যাতন এবং বিক্ষোভ সমাবেশের অনুমতি না দেয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ঘোষণার পরই ওইদিন ভোর রাতে তাকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
চাঁদপুর ১৮ দলীয় জোটের অবরোধের প্রথম দিনে অবরোধের সমর্থনে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ১৮ দলীয় জোট নেতৃবৃন্দ। মিছিলটি দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বের হয়ে শপথ চত্বর প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এতে অংশ নেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এসএম কামাল উদ্দিন চৌধুরী, শরীফ মোঃ ইউনুছ, যুগ্ম সম্পাদক দেওয়ান সফিকুজ্জামান, শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আক্তার মাঝি, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির বিল্লাল মিয়াজী, শহর জামায়াতের সভাপতি অ্যাডঃ শাহজাহান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আরিফুল্লা, জেলা যুবদলের সভাপতি শাহজালাল মিশন, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, শহর যুবদলের আহ্বায়ক আঃ কাদির বেপারী, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মানিকুর রহমান মানিকসহ ১৮ দলীয় জোট নেতৃবৃন্দ।
প্রতিনিধি =
বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন চাঁদপুর জেলার নেতৃবৃন্দ শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। তারা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলে অংশ নেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন খান বাবুল, কাজী গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খান, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দিন শিশু, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আনোয়ার হোসেন বাচ্চুসহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
অবরোধের সমর্থনে শহরের তালতলা এলাকা থেকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর খান ও সদস্য সচিব হযরত আলী ঢালীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে অংশ নেন শহর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আকবর মাতাব্বর, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সোলেমান ঢালী, যুগ্ম আহ্বায়ক খোকন মিজিসহ জেলা, উপজেলা ও শহর নেতৃবৃন্দ।
চাঁদপুর সরকারি কলেজ গেট এলাকা থেকে অবরোধের সমর্থনে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলে অংশ নেন জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর গাজী, সদর থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, বিএনপি নেতা আজাদ, যুবদল নেতা কাইউম খান, হিরন মাঝি, স্বপন, ছাত্রদল নেতা মাসুদ মাঝিসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।
এছাড়া সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থানে অবরোধকারীরা অংশ নেন এবং অগ্নিসংযোগ করে। গতকাল অবরোধের প্রথম দিন চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে দূরপাল্লার বাস না ছেড়ে গেলেও ট্রেন ও লঞ্চ চলাচল করেছে। সন্ধ্যার পর শহরের কোড়ালিয়া মোড় এলাকায় ও বকুলতলা এলাকায় অবরোধকারীরা একটি অটোরিক্সায় ও রিক্সায় অগ্নিসংযোগ করে। বেলা ১১টার পর থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ সদস্যরা ডিউটিরত ছিলেন।