স্টাফ রিপোর্টার ॥
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামছুন্নাহারের নিদ্দের্শে অবশেষে বখাটে যুবক সুমন বেপারী(২৪)কে চাঁদপুর নৌ-পুলিশ আটক করেছে। পুলিশ যখন তাকে আটকের জন্য বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক তৎপরতা সুরু করে, এ খবর জানতে পেরে গতকাল বুধবার গভীর রাতে সুমন লঞ্চ যোগে পালিয়ে যাওয়ার জন্য তার পিতা শওকত বেপারীর সহযোগীতায় লঞ্চে উঠে। পুলিশ খবর পেয়ে তাকে আটক করলেও পিতাকে আটক করেনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে বখাটে যুবক সুমনকে পুলিশ আদালতে প্রেরন করলে আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেলা কারা গারে পাঠিয়ে দেয়।
গত ১৮জুলাই শহরের যমুনা রোড টিলা বাড়ি এলাকায় রাত আনুমানিক ৩ টায়, বখাটে যুবক সুমন বেপারী ধর্ষনে ব্যর্থ হয়ে গৃহবধুর স্তন সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে মারাত্বক জখম করে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর মডেল থানায় লঞ্চ সুপারভাইজার শওকত বেপারীর ছেলে সুমন বেপারী (২৪) সহ ৩ জনকে আসামী করে গৃহবধুর স্বামী জেলে হারুন মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজেষ বড়–য়া।
গৃহবধুর সাথে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানায়, আমার স্বামী নদীতে মাছ শিকারে যাওয়ার পর মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৩ টায় লঞ্চ সুপারভাইজার শওকত বেপারীর ছেলে সুমন বেপারী তার সাথে থাকা ৩-৪ জন সন্ত্রাসী যুবক সহ আমাদের মাটির বসত ঘরে সিঁধ কেটে প্রবেশ করে। তারপর আমার মুখে চাপ দিয়ে ধরে আমাকে জোর পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় আমি চিৎকার দিলে সুমন বেপারী তার হাতে থাকা ছুরি দেখিয়ে আমাকে ভয় দেখায়। তারপরও আমি চিৎকার দিলে সুমন বেপারী আমার স্তন সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে।
এ সময় গৃহবধু বখাটে যুবক সুমনকে আটকে রাখার চেষ্টা করলে সে ঘরের দরজার খিল ভেঙ্গে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী তাৎক্ষনিক ঘটনাটি জানতে পেরে রক্তাক্ত জখম আহত গৃহবধুকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে।
অভিযোগের ভিত্তিতে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই রাজেষ বড়–য়া তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গৃহবধু চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছে।
ঘটনাটি নিয়ে এলাকার শত-শত নারী-পুরুষ,যুবক ও যুবতী জনগণ বিচারের দাবীতে গতকাল বুধবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান। তিনি তাদেরকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে বলে আস্বস্ত করলে এলাকাবাসী চলে আছে এবং বিকেলে এলাকার শত শত জনগণ রাস্তার দু’ পাশে দাড়িয়ে বিভিন্ন প্লে কার্ড হাতে নিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচারের দাবীতে মানবন্ধন ও বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে। পরে পুলিশ সুপার শামছুন্নাহার ঘটনাস্থলে গেলে শত শত মহিলাসহ এলাকাবাসী সুমন বেপারী সহ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তিদাবী করেন।
পুলিশ সুপার শামছুন্নাহার বলেন, কেহই আইনের উর্ধ্বে নয়। অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আপনারা এ ঘটনার সঠিক বিচার পাবেন এবং আগামী রবিবার বিকেল ৩টায় একটি সমাবেশ করা হবে। সেখানে সকল অত্র এলাকার দু:স্থ অসহায় মানুষের দূরদশার কথা শুনবেন এবং সকলকে ওই পুলিশি সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানান।
এ সময় পুলিশ সুপারের সাথে উপস্থিত ছিলেন, নবাগত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালী উল্যাহ ওলী, স্থানীয় কাউন্সিলর শাহ আলম বেপারী, মহিলা কাউন্সিলর ফরিদা ইলিয়াস, সাবেক কাউন্সিলর আলী আহমেদ সরকার, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর সাধারণ সম্পাদক সুফি খায়রুল আমিন খোকন।