আন্দোলনের চূড়ান্ত ক্যালেন্ডার তৈরি করেছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। সমঝোতা না হলে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পর থেকে সরকার পতনের আগ পর্যন্ত এই ক্যালেন্ডার ধরে আন্দোলন চলবে। শুরুতে লাগাতার অবরোধ এবং তারপর অসহযোগ আন্দোলন। বিচ্ছিন্নভাবে চলবে হরতাল। তারপরও একতরফা নির্বাচন হলে ওই দিন ‘গণকারফিউ’র ডাক দেওয়া হবে। বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতাদের সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, আন্দোলনের বর্তমান পর্যায়ে চলমান অবরোধ-হরতালও আন্দোলনের পরিকল্পিত ছক ধরেই চলছে। ধারাবাহিকভাবে এই আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নেওয়া হবে। সর্বশেষ গণকারফিউ দিয়ে অচল করা হবে দেশের প্রতিটি এলাকা। জোট নেত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া নিজেই এমন কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন।
গুলশানের অভিজাত একটি হোটেলে অবস্থানরত বিএনপির প্রভাবশালী এক নীতিনির্ধারক নেতা গতকাল বুধবার কালের কণ্ঠকে জানান, ১৩ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মসূচি থাকলেও হরতাল-অবরোধ থাকছে না। বিজয় দিবস ও বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি এবং মাঝে ১৫ ডিসেম্বর জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ ও ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার কর্মসূচি রয়েছে। ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি চাওয়া হয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে। এখনো অনুমতি মেলেনি। অনুমতি না দিলে বিকল্প কর্মসূচির চিন্তাভাবনা রয়েছে।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির দায়িত্বশীল এক নেতা জানান, আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে নতুন করে আন্দোলন শুরু হবে। ওই কর্মসূচি অনুযায়ী শুরু হবে লাগাতার অবরোধ। পরিস্থিতি বুঝে শুক্রবার আন্দোলনে নিহত নেতা-কর্মীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় গায়েবানা জানাজা এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করে দোয়া মাহফিলের কর্মসূচি পালন করা হবে।
নীতিনির্ধারক পর্যায়ে বিএনপির একাধিক নেতা জানান, ডিসেম্বর মাসজুড়ে এভাবেই আন্দোলন চলবে। আর জানুয়ারির শুরু থেকেই অসহযোগ আন্দোলনে যাবে ১৮ দলীয় জোট। এরপরও একতরফা নির্বাচন করলে ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে ‘গণকারফিউ’ কর্মসূচি ঘোষণা করবে তারা। এসব কর্মসূচি ছাড়াও নির্বাচন কমিশন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বঙ্গভবন ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচির কথাও ভাবছেন নেতারা। সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে এসব কর্মসূচিতে কিছুটা পরিবর্তন-পরিবর্ধন আসতে পারে।
সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচনের দাবিতে সরকারের সঙ্গে সংলাপের দরজাও খোলা রাখবে ১৮ দল। দায়িত্বশীল এক নেতার মতে, গণতন্ত্র ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আলোচনা ও সংলাপের পাশাপাশি আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।