মুক্তিযোদ্ধারা দেশ ও জাতির সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সন্তান। যাদের ত্যাগের বিনিময়ে আজ স্বাধীন বাংলাদেশ। বর্তমান ও গত সরকার মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রতি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। শুধু তাই নয় সরকারি সব চাকরির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও পরিবারদের প্রতি সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছে। তবে গত সরকারের তুলনায় বর্তমান আ’লীগ সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ক্ষেত্রে সম্মানজনক ব্যবস্থা, চাকরি, বাসস্থান ও তাদের ভাতাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছে। এতসব সুযোগ-সুবিধার পরও মতলব উত্তর উপজেলার ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নের সিপাইকান্দি গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. গোলাম মাওলা নবী পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তিনি ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন দক্ষ মুক্তিযোদ্ধা (গেজেট নং-১৬৮৫, মুক্তি বার্তা নং-০২০৫০২০৩৯২, মুক্তিযোদ্ধা ভোটার নং-৫৪, ভারতের এফএফ নম্বর ৩৪৭৮২)। তিনি মতলব উত্তর উপজেলার ইন্দুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৭১ সালে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করেছিল।
১৯৭১ সালের ১ জুন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অম্পিনগর ট্রেনিং সেন্টারের ইকু কোম্পানীর ৯ নম্বর প্লাটুন থেকে উচ্চ ট্রেনিং গ্রহণ করেন। ভারতীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এ মুক্তিযোদ্ধা বর্তমানে অভাব-অনটনের মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অভাবের সংসারে তিনি স্ত্রী, ৬ ছেলে ৩ মেয়ে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছেন। জমি-জমা বলতে কিছুই নেই। সিপাইকান্দি নানার বাড়ি তার একমাত্র ঠিকানা। ৬ ছেলের মধ্যে বড় ছেলে উদ্দমদী পাম্প হাউজে ৭ শ’ টাকা বেতনে চাকরি করছে এবং অন্যান্য ছেলেরা বেকার। ৩ মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে বর্তমান সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পায়। সে থাকে শ্বশুরবাড়িতে। অপর দুই মেয়ের মধ্যে মেঝো মেয়ে এ বছর এসএসসি পাস করেছে, ছোট মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। অভাব-অনটনের সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী হলেন অসহায় মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মাওলা নবী।
তিনি জানান, আমার বড় ছেলে যে বেতন পায় তা দিয়ে সংসার তো দূরের কথা বর্তমান সময়ে চা-নাস্তার খরচও হয় না। বড় মেয়ের বেতন থেকে যা দেয়, তা দিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পান মাসিক ২ হাজার টাকা। তাই অভাবের এ সংসারে সন্তানদের জীবন বাঁচাতে আজ ফেরি করে হাট-বাজারে হাতঘড়ি বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, প্রতিদিন হাতঘড়ি বিক্রি করে গড়ে দেড়শ’ থেকে দুইশ’ টাকা আয় হয়। গ্রামের ভাষায় একটি কথা আছে ‘তোলা চাউলে পোলা বাঁেচ না’। অসহায় এ মুক্তিযোদ্ধা পরিবাদের অবস্থা তার চেয়ে কম নয়।
বর্তমান সরকারের কাছে পরিবার-পরিজন নিয়ে দু’মুঠো ভাত খাবার ও থাকার বন্দোবস্ত করার জোর দাবি জানান মুক্তিযোদ্ধা মো. গোলাম মাওলা নবী।
শিরোনাম:
বৃহস্পতিবার , ২৭ মার্চ, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ১৩ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।