এম. সাখাওয়াত হোসেন মিথুনঃ
আইনজীবীদের নিয়ে কটুক্তি করায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্র্মকর্তা মো: এমরান হোসের্নে বিরুদ্ধে চীফ জুডিশিয়াল আদালতে মামলা করেছে চাঁদপুর বারের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড. জহিরুল ইসলাম। মামলা নং ২৭৮/২০১২ইং।
আজ সোমাবার দুপুরে চাঁদপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চমন আরা বেগম এর আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলাটি আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুরের স্থানীয় একটি পত্রিকায় হাজীগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো: এমরান হোসেন আইনজীবীদের নিয়ে ” উকিল ও বেশ্যা একই” এমন মন্তব্য করেন।
প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো-
‘উকিল আর বেশ্যা একই’- নির্বোধ, অজ্ঞ আর বেহানুষের মতোই গত ২৯ জুলাই হাজীগঞ্জ পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভায় বললেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন। ওই কলেজের পরিচালনা পর্ষদের বিদ্যুৎশাহী সদস্য জাকির হোসেন মিয়া নিশ্চিত করে বলেন, এই নির্বাহী কর্মকর্তা সভার সভাপতিত্ব করতে গিয়ে উক্তিটি করেন। আমরা সকলে লজ্জিত হলাম। কিন্তু তিনি একজন নিবার্হী কর্মকর্তা, এমন আচরণ করলেন যা অবশ্যই বেমানান।
মাত্র মাস পাঁচেক হলো এই নির্বাহী কর্মকর্তা এখানে যোগদান করছেন। তিনি আশার পর থেকেই নিজেকে উদাস মনোভাব নিয়ে একাধিকবার আচরণ ভঙ্গির প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। হাজীগঞ্জ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠান, সভা, সেমিনারে, শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নানান বেহুশ কূরম্নচিপূর্ণূ অশিস্নল কথাবার্তা বলে আসছেন।
চলতি বছরের গত ২৮ জুন হাজীগঞ্জ মডেল কলেজে একাদশ শ্রেণীর ক্লাশ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একটি হাদিস পাঠ করেন। পরে হাদিসটির বাংলায় ব্যাখ্যা করলেন নিজেই। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বললেন, ‘আপনারা আপনাদের যৌনাঙ্গ হেফাজত করবেন।’ বিষয়টি কলেজের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিশ্চিত করেছেন।
পরদিন ২৯ জুন স্কাউটের উপজেলা ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে বলেন,’ দেশ ভ্যবিচারে ভরে গেছে। বিভিন্ন স্থানে দুজন দেখবেন, সন্ধ্যা হলে ১ জন হয়ে যায়’।
গত ২৯ জুলাই পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের এক সভায় বলেন, ‘সবজিনিসের নিয়ম আছে, সহবাসেরও নিয়ম আছে’।
২৮ জুলাই উপজেলা ই-সেন্টারে কোচিং বাণিজ্য বন্ধের সভায় বলেন,’সরকারী নীতিমালায় স্ত্রী লিঙ্গ, অর্থাৎ অনেক ফাঁক আছে।’
২৪ অক্টোবর হাজীগঞ্জ মডেল কলেজে ছাত্রীদের উদ্দেশ্য বললেন,’মেয়েদের রোগ আছে, এখন মেয়েরা বুকের দুধ বাচ্চাদের খাওয়ায় না।’
সর্বশেষ তিনি গত ৮ নভেম্ববর উপজেলার ৭ নং বড়কুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মুন্সী নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট ফোন করে বলেন, ‘স্যার, আমার এলাকার বখাটে এক প্রতিবেশী প্রবাসীর স্ত্রীকে কামড় দিয়েছে। প্রতি উত্তর মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, কামড়টি উপরে দিয়েছে নাকি নিচে দিয়েছে। উভয়কে আমার কাছে নিয়ে আসো, তারপর দেখবো কোথায় কামড় দিয়েছে।’
ওইসব অশ্লিল আচরণে ক্ষুব্দ হয়ে পড়ছে হাজীগঞ্জ উপজেলা বাসী। এর আগে যারা এ উপজেলায় এসছেন সবার আচরণ আর চাল-চলন কতটা মাজর্নীয় ছিল তা উপজেলাবাসী পরিস্কার। কিন্তু এমন কর্মকর্তা হাজীগঞ্জে আর না আসুক এটাই সবার প্রত্যাশা।
পত্রিকায় ওই সংবাদটি দেখার পর আইনজীবীরার ক্ষুদ্ধ হন। পরে আইনজীবীদের পক্ষে এড. জহিরুল ইসলাম মামলাটি দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে হাজীগঞ্জ ইউএনওর মো: এমরান হোসেন জানান, হাজীগঞ্জ পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের গর্ভনিং বডির সভায় এধরণের বক্তব্য হয়েছে বলে যে সংবাদটি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ কলেজটি ধ্বংস করার জন্যে ষঢ়যন্ত্র করে একটি কুচক্রি মহল এ ধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ বিষয়ে গভনিং বডির সদস্যরা মিলে তাৎক্ষণিক সোমবার সভা করে এর প্রতিবাদ করেছি।
চাঁদপুরের সহকারী পিপি মাহাবুব-এ-খোদা বলেন, আইনজীবী সম্পর্কে একজন সরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এমন বেফাস মন্তব্য করা সত্যিই দূ:খজনক।
শিরোনাম:
সোমবার , ২১ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৮ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।