ফাহিম শাহরিন কৌশিক
চাঁদপুর শহরের কুমিল্লা রোডস্থ সরকারি কলেজ সংলগ্ন আকবরী হোটেলে লক্ষ্মীপুরের মরিয়ম আক্তার রুনাকে আটকে রেখে ৬ দিন নির্যাতন করার পর হোটেল মালিক কাজী আলী এলিনের ছদ্মবেশী মুখোশ আমাদের অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে উন্মোচিত হওয়ার পর ও পুলিশি অভিযানের ভয়ে অবশেষে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। গত মঙ্গলবার সকাল ৮টায় নির্যাতিত মরিয়ম আক্তার রুনাকে বন্দিখানা থেকে মুক্তি দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। চাঁদপুরের অপরাধ জগতের ঠিকানা আকবরী হোটেলে দেহ ব্যবসা, মাদক ও জোরপূর্বক মেয়েদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আটকে রেখে সিসি ক্যামেরায় গোপন দৃশ্য ধারণ করে প্রতারণা করার ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় চাঁদপুরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। অজানা ঘটনা জানার পর সকলে সচেতন হয়ে যায়।
বহুল আলোচিত আকবরী হোটেলের মালিকের মৃত্যুর পর তার একমাত্র ছেলে কাজী এলিন এখানে গডফাদারের ভূমিকা পালন করে তার এসব অপকর্ম চালিয়ে গেছে। লক্ষ্মীপুর জেলার মধ্য বানচা নগরের বাইন্না বাড়ির কালু বাইন্নার মেয়ে রুনা আক্তার মরিয়ম (২৮)কে মোবাইলে ফোন করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ছদ্মবেশি এলিন তার নাম সুমন পরিচয় দিয়ে তার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। একবার ওই এলাকায় হাতে নাতে ধরা পড়ে এলাকাবাসীর উত্তম মধ্যমের শিকার হয় এলিন। সেই ঘটনারই প্রতিশোধ নিতে কৌশলে মরিয়ম আক্তার রুনাকে চাঁদপুরে এনে আকবরী হোটেলে ৬ দিন যাবৎ আটকে রেখে ব্যাপক নির্যাতন চালায়।
সাংবাদিকরা জানতে পেরে তার হোটেলের চতুর্থ তলায় গিয়ে ইয়াবা সেবন করা অবস্থায় এলিনকে দেখতে পায়। সে ঘটনাটি অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য মরিয়ম আক্তার রুনাকে পতিতা ও নারী পাচারকারী অপবাদ দিয়ে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। অসহায় নির্যাতিত মরিয়মের করুণ কাহিনী শুনে প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হয়। মেয়েটিকে হোটেল থেকে বের করে রিক্সায় উঠিয়ে দেয়ার পর মাদকাসক্ত এলিন তাকে রাস্তা থেকে টেনে হেঁচড়ে আবার হোটেলের কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ দীর্ঘ সময় পর আকবরী হোটেলে গিয়েও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি। গত মঙ্গলবার ১৯ আগস্ট আকবরী হোটেলের একাংশের মালিক কাজী আলী এলিনের জীবন ইতিহাস ও মানুষের সাথে প্রতারণার ফাঁদ এবং কৌশলগুলো প্রকাশিত করার পর প্রশাসন সজাগ হয়। হোটেলের ৭৫% এর মালিক কাজী আলী এলিনের ভগ্নিপতি যুবতিকে ৬ দিন আটকে রেখে নির্যাতন করার ঘটনা জানার পরও তার শ্যালককে বাঁচাতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন। অবশেষে প্রত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর ও পুলিশি অভিযানের ভয়ে কাজী আলী এলিন মেয়েটিকে গতকাল সকালে ছেড়ে দেয়। একটি সূত্র জানায়, নির্যাতিত নারী মরিয়ম আক্তার রুনা নরপশু কাজী আলী এলিনের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আকবরী হোটেলে একাংশের মালিক কাজী আলী এলিনের মুখোশ উন্মোচিত হওয়ায় চাঁদপুরে ব্যাপক আলোড়ন ও গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে ও নিজের অপকর্ম ঢাকতে কাজী আলী এলিন বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে।
–