চাঁদপুর প্রতিনিধি : মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প নির্মাণের পর চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ব্যাপক হারে আখ চাষ শুরু হয়েছিল। উৎপাদন খরচ না উঠায় ৬/৭ বছর আগে থেকে আখ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিল কৃষকরা। চলতি মৌসুমে কৃষকরা আবার ঘুরে দাড়িয়েছে। আখের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং ভালো দাম পাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত মোসুমে আখের চাষ হয়েছিল ১৫০ হেক্টর। তার মধ্যে জাত চাঁদপুর গেন্ডারি ১২০ হেক্টর, মেস্ত্রিমালা ২০ হেক্টর, অমৃত ১০ হেক্টর । চলতি মৌসুমে মতলব উত্তরে আখের আবাদ হয়েছে ১৫৫ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে জাত চাঁদপুর গেন্ডারি ১৩০ হেক্টর, মেস্ত্রিমালা ১০ হেক্টর, অমৃত ১০ হেক্টর ও ইশ্বরদী ৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে আখ চাষ করতে খরচ হয় ১লাখ২৪ হাজার টাকা এবং বিক্রি করা যায় ২লাখ ৭১ হাজার টাকা। উৎপাদন হয় হেক্টর প্রতি ১১৪ মেঃটন। তবে কৃষি অফিসের এই হিসাব এ এলাকার জন্য বাস্তবিক নয়।
৬/৭ বছর আগে মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের ফরাজীকান্দি, হলদিয়া, লেদামদী, মাথাভাঙ্গা, পাঁচআনী, কলাকান্দা, হানিরপাড়, গজরা, ছেংগারচর, কেশাইর কান্দি, কালিপুর, নিশ্চিন্তপুর, শিকিরচর, বারআনী, ফতেপুর ঘনিয়ার পাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক আখের চাষ হতো। মাঝ খানে কৃষকর লোকসানের কারনে আবাদ কমিয়ে দিলেও চলতি মৌসুমে দেখা যাচ্ছে আখের আবাদ বেড়েছে।
উৎপাদনে লাভ হওয়ায় কৃষকরা এবার ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে। আখের ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা আখ ও আখের গুড়ের ভালো দাম পাচ্ছে। প্রতি কেজি গুড় পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা ও প্রতি পিচ আখ বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা। বর্তমানে গুড় ও আখের যে মূল্য ৬/৭ বছর আগে তা ছিল না। গুড় ১৫/২০ ও প্রতিটি আখ ২/৩ টাকা। তখন কৃষকদের আখ বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠতো না। যার কারনে কৃষকরা আখের আবাদ কমিয়ে দেয়।
হানির পাড় গ্রামের আখ চাষী জাকির হোসেন জানান, আমাদের এলাকায় ব্যাপক ভাবে আখ চাষ হতো। কৃষক ১টি আখ ২/৩ টাকা বিক্রি করতে পারতো না। কৃষকের খরচ উঠতো না। এ এলাকা গুড় তৈরি হতো না। এখন গুড় তৈরি হচ্ছে। দামও ভালো । আখ চাষে আমারা এখন লাভবান হওয়ায় চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী আখ চাষের পরিমান আরো বাড়বে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ছাইফুল আলম বলেন,তথ্যমতে সেচ প্রকল্প নির্মানের পর এ এলাকায় ব্যাপক আখের চাষ হয়েছে। দাম না পাওয়া মাঝখানে চাষ কমেছিল। এখন আবার চাষ বাড়ছে।