শওকত আলী॥
আজ ৩০ নভেম্বর চাঁদপুরে রেলওয়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান হচেছনা বলে জানিয়েছেন,চট্রগ্রাম বিভাগীয় ভু-সম্পত্তি কর্মকতা ইসরাত রেজা ও হাইকোটের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এ খবরটি বুধবার রাতে জানিয়েছেন।
এ দিকে চট্রগ্রাম বিভাগীয় একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানান, অবৈধ ভাবে স্থাপনা নির্মানকারীদের পক্ষ থেকে হাই কোটে একটি রিট করা হয়েছে। এ রিটের কপি আজ বৃহস্পতিবার চট্রগ্রাম ভু-সম্পত্তি কর্মকতার কার্যালয়ে এসে পৌছবে। এ ছাড়া চট্রগ্রাম বিভাগীয় ভু-সম্পত্তি কর্মকতা জানান, চাঁদপুরে ৩দিন ব্যাপী আঞ্চলিক বিশ^ ইজতেমার শুরু হয়েছে। এজন্য জেলা প্রশাসন থেকে ম্যাজিস্ট্যেট ও পুলিশ প্রশাসন থেকে-পুলিশ দিতে পারছেনা। যার ফলে পুলিশ ম্যাজিস্ট্যেট না দিতে পারায় উচেছদ অভিযান করা যাচেছনা। যার ফলে আজ ৩০নভেম্বর অবৈধ উচেছদ অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। পরবতীতে উচেছদ অভিযানের সিদ্বান্ত হলে যথা সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। ভু-সম্পত্তি কর্মকতার অফিসের একটি সূত্র জানান আগামী ১১ ডিসেম্বর পুনরায় অবৈধ উচেছদ অভিযান করার সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে চাঁদপুর-লাকসাম রেল পথের হাজীগঞ্জ থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত রেল লাইনের পাশের ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্তৃপক্ষ। এ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও এস্টেট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করার সিদ্বান্ত ছিল।
গতকাল বুধবার দুপুরেও মুঠোফোনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্তৃপক্ষের সাথে এ প্রতিনিধি যোগাযোগ করলে তারা জানান, চাঁদপুর- লাকসাম রেলপথের হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর শহরের ওয়ারলেছ এলাকার বিশ্ব রোড, মিশন রোড, রেলওয়ে হকার্স মাকেটের পিছনের অংশের ৯শ বর্গফুট, চাঁদপুর কোর্ট স্টেশন, শহরের বকুল তলা, আক্কাস আলী রেলওয়ে এলাকা ও চাঁদপুর স্টেশন এলাকায় অবৈধ ভাবে নির্মিত রেল লাইনের দু’পাশে ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শত শত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়ে ছিল। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন সহ সকল সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে উপস্থিত থেকে সহযোগীতা করার জন্য চিঠি প্রেরণ করাও হয়।
এ ছাড়া শহরের রেলওয়ে হকার্স মার্কেটের পূর্বদিকে এস বি খালপাড় সংলগ্ন রেলওয়ের মালিকানাধীন ভূমিতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধভাবে নির্মিত অবকাঠামো ব্যবসায়ীদের কাছে লাখ লাখ টাকায় বিক্রি করেন একটি ভুমিদস্যু চক্র। এ অবৈধভাবে নির্মিত অবকাঠামো স্বেচ্ছায় ভেঙ্গে ফেলার সময়সীমা দিয়ে চট্রগ্রামের দায়িত্বরত ভু-সম্পতি কর্মকতার দপ্তর থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এরই মধ্যে সে সময় ও শেষ হয়ে গেছে। নোর্টিশে বলা হয়েছে আগামী ৩০ নভেম্বর চাঁদপুরের সকল স্থাপনা উচেছদ করা হবে । এই সময়সীমার মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত একটি উচ্ছেদ নোটিস ইতি মধ্যে উক্ত হকার্স মার্কেটের তিনজন কর্মকর্তার নামে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া চাঁদপুর শহরকে ব্রান্ডিং জেলা ঘোষনা দেওয়ার কারনে শহরকে সুন্দর্য মন্ডিত করে তোলার জন্য জেলা প্রশাসনের অনুরোধে রেলওয়ের চট্রগ্রাম বিভাগীয় উধর্বতন কর্তৃপক্ষ রেলওয়ে হকার্স মাকেট ছাড়াও শহর ও শহরতলীর সকল অবৈধ স্থাপনা উচেছদের সিদ্বান্ত গ্রহন করে। সে মোতাবেক জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, চাঁদপুর পৌরসভা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপথ, চাঁদপুর প্রেস ক্লাব, রেলওয়ের সকল দপ্তরকে উচেছদ অভিযানে থেকে সহযোগিতা করান জন্য উচেছদের নোর্টিশ প্রেরন করা হয়।
হকার্স মাকেটের তিন কর্মকর্তা রেলের ভূমিতে অবৈধভাবে ৬০/১৫=৯০০ বর্গফুট জায়গায় নীচে১৫টি ও উপরে নামাজের জন্য অল্প জায়গা রেখে তার উপরে ১০টি কক্ষ বিশিষ্ট অবৈধ অবকাঠামো নির্মাণ করে । শুধু তাই নয়, উক্ত অবকাঠামোতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে ব্যবসা করে আসছেন, যা রেলওয়ের আইন ও প্রচলিত আইনের পরিপন্থী বিধায় তা স্বেচ্ছায় সরিয়ে ফেলতে গত ১৫ নভেম্বর উক্ত কর্মকর্তা চিঠি পাঠান। যার সময়সীমা দেয়া হয় গতকাল ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা না হলে ১৯৭০ সালের আইনের ৭ (১) ও ৭ (২) ধারা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য উক্ত চিঠির অনুলিপি চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ, জিআরপির অফিসার ইনচার্জ, চাঁদপুর, কানুনগো লাকসাম ও স্টেশন মাস্টার চাঁদপুর কোর্টকে প্রেরণ করা হয়।
এই চিঠি প্রাপ্তির পরও চাঁদপুর রেলওয়ে হকার্স মার্কেট কর্তৃপক্ষ পেশি শক্তি প্রয়োগ করে প্রতাপ খাটিয়ে শুধু রেলওয়ের সম্পত্তিই নয় চাঁদপুর শহরের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র অবলম্বন এসবি খাল দখল করেও অবৈধভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছেন। সবচেয়ে আর্শ্চাযের বিষয় হচ্ছে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে এ মার্কেটের কতিপয় ব্যক্তি জনগণকে ভুল বুঝিয়ে বা ধর্মের আড়ালে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে অবৈধভাবে নির্মিত অবকাঠামো ব্যবসায়ীদের কাছে লাখ লাখ টাকায় বিক্রি করেন বলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাদের এই অপকর্ম আড়াল করতে তারা একদিকে যেমনি মানুষের ধর্মীয় সহানুভূতি কাজে লাগাচ্ছেন তেমনি সরকার দলীয় নেতা ও জন প্রতিনিধিদেরকে ব্যবহার করছেন। তাই চাঁদপুরের সচেতন জনগণ অবৈধ দখলকারীদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালী উল্লাহর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা উচ্ছেদের চিঠি পেয়েছি। তবে এ দিন চাঁদপুরে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে। আমরা অন্য জায়গা থেকে বাড়তি ফোর্স এনেছি। বিষয়টি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে নিতে হবে।
চাঁদপুর রেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওচমান গনি পাঠানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অফিসিয়ালভাবে চিঠি পেয়েছি। বৃহস্পতিবার উচ্ছেদের প্রোগ্রাম দেওয়া আছে, আমরা প্রস্তুত আছি। লাকসামের ভারপ্রাপ্ত কানুনগো আবু সাইদ পাটোয়ারী বলেন, আমি এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।