দেশে সব ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়ানো হতে পারে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর চার দিনের গণশুনানি। আজ শুনানি হবে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানির (জিটিসিএল) প্রস্তাবিত সঞ্চালন মূল্যহার বাড়ানোর ওপর।
এবারের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের একটি বিশেষ দিক হলো, এবারই প্রথম সম্পদ হিসেবে প্রতি ইউনিট (এক হাজার ঘনফুট) গ্যাসের দাম ২৫ টাকা ধার্য করা হচ্ছে। বাপেক্সসহ বিভিন্ন উত্তোলনকারী কোম্পানি যে গ্যাস উত্তোলন করে, তার ওপর এই দাম ধার্য হবে। এই বাবদ পাওয়া অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হবে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা রক্ষার কাজে ব্যয় হবে। এখন পর্যন্ত উত্তোলনকারী কোনো কোম্পানিকে গ্যাসের দাম দিতে হয় না।
সম্পদ হিসেবে গ্যাসের ওপর দাম আরোপ করায় গ্যাসের দাম বৃদ্ধি প্রায় নিশ্চিত। এর আগে সব ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম সর্বশেষ বাড়ানো হয় ২০০৯ সালের জুলাই মাসে, যা ওই বছরের ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হয়। এরপর দুবার কেবল সিএনজির দাম বাড়ানো হয় জ্বালানি তেলের বর্ধিত দামের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য।
বিভিন্ন কোম্পানির দেওয়া প্রস্তাবে আবাসিক খাতে সবচেয়ে বেশি হারে দাম বাড়ানোর দাবি করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই চুলার জন্য বর্তমান দাম ৪৫০ থেকে বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করার প্রস্তাব রয়েছে (বৃদ্ধির হার ১২২ দশমিক ২২ শতাংশ)। এক চুলার ক্ষেত্রে বর্তমান দাম ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৫০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে (বৃদ্ধির হার ১১২ দশমিক ৫০ শূন্য শতাংশ)।
আবাসিক গ্রাহকদের মধ্যে যাঁরা মিটার ব্যবহার করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট গ্যাসের বর্তমান দাম ১৪৬ টাকা ২৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৩৫ টাকা করার কথা বলা হয়েছে (বৃদ্ধির হার ৬০ দশমিক ৬৮ শতাংশ)।
আবাসিক খাতের পর সবচেয়ে বেশি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব ক্যাপটিভ বিদ্যুতে (বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য মালিকদের নিজস্ব উৎপাদিত বিদ্যুৎ)। এ ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট গ্যাসের বর্তমান দাম ১১৮ টাকা ২৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৪০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে (বৃদ্ধির হার ১০২ দশমিক ৯৪ শতাংশ)।
শিল্পে বর্তমানে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ১৬৫ টাকা ৯১ পয়সা। এটি ২২০ টাকা (বৃদ্ধির হার ৩২ দশমিক ৬০ শতাংশ) করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাণিজ্যিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে বর্তমান দাম ২৬৮ টাকা ৯ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩৫০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে (বৃদ্ধির হার ৩০ দশমিক ৫৫ শতাংশ)।
সিএনজির দাম ৩৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। সিএনজি স্টেশনে সরবরাহ করা গ্যাসের দাম এখন ৬৫১ টাকা ২৯ পয়সা। এটি বাড়িয়ে ৯০৫ টাকা ৯২ পয়সা (বৃদ্ধির হার ৩৯ দশমিক ১০ শতাংশ) করার প্রস্তাব করা হয়েছে। চা-বাগানে ব্যবহৃত গ্যাসের বর্তমান দাম ১৬৫ টাকা ৯১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকা (বৃদ্ধির হার ২০ দশমিক ৫৫ শতাংশ) করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতি ইউনিট গ্যাসের বর্তমান দাম ৭৯ দশমিক ৮২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৪ টাকা (বৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ) করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সার উৎপাদনে বর্তমানে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ৭২ দশমিক ৯২ টাকা। এটি বাড়িয়ে ৮০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে (বৃদ্ধির হার ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ)।
আজ সকাল ১০টায় বিইআরসি কার্যালয়ের মিলনায়তনে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। কাল থেকে তা টিসিবি মিলনায়তনে হতে পারে।
শিরোনাম:
রবিবার , ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৪ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।