চাঁদপুর নিউজ রিপোর্ট
চাঁদপুর জেলার পাঁচ পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আজ ৩০ ডিসেম্বর বুধবার। পৌরসভা পাঁচটি হচ্ছে মতলব উত্তরের ছেঙ্গারচর, মতলব, হাজীগঞ্জ, কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ। এই পাঁচ পৌরসভায় মেয়র, সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মহিলা কাউন্সিলরসহ সর্বমোট প্রার্থী হচ্ছে ২শ’ ৭০ জন। এঁদের মাঝে গোপন ব্যালটে আজ ভোটযুদ্ধ হবে। প্রার্থীদের মধ্যে মেয়র পদে ১৯, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১শ’ ৯৯ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫২ জন।
আজ বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। পাঁচটি পৌরসভায় ৭৯টি ভোটকেন্দ্রে এ ভোট হবে। মোট ভোটার ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯শ’ ৬৭ জন। ৭৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫৪টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর মধ্য রাত থেকে পৌর এলাকাগুলোতে বিজিবি ও র্যাবের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রেগুলোতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকবে।
চাঁদপুরের পাঁচ পৌরসভার মধ্যে হাজীগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র পদে ৬, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪২ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৪ জন; ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র পদে ৪, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫৪ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৯জন; কচুয়ায় মেয়র পদে ৫, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩১ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৯ জন; মতলব পৌরসভায় মেয়র পদে ৩, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৮ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১০ জন এবং ছেঙ্গারচর পৌরসভায় মেয়র পদে ১, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৪ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে ছেঙ্গারচর পৌরসভায় মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ কি অবৈধ তা আদালতে ঝুলে যাওয়ায় মেয়র পদে আর একজনমাত্র প্রার্থী থাকায় এ পৌরসভায় মেয়র পদে ভোট হচ্ছে না। একমাত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের রফিকুল আলম জর্জকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন চিঠি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাকে। তিনি কমিশনের নির্দেশনা পেয়ে গতকাল রফিকুল আলম জর্জকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
এদিকে পাঁচ পৌরসভার প্রায় দেড় লাখ ভোটারের জন্যে ৭৯টি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৪টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রশাসন ও জেলা নির্বাচন অফিস সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
চাঁদপুরের ডিআইও-১ মোঃ মনিরুজ্জামানের সাথে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমরা ৭৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৪টিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে নিয়েছি। সেগুলো হচ্ছে : মতলবে ১৫, ছেঙ্গারচরে ৯, ফরিদগঞ্জে ৯, হাজীগঞ্জে ১৫ ও কচুয়ায় ৬। এ কেন্দ্রগুলোর প্রতি প্রশাসনের বিশেষ নজরদারি থাকবে।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, হাজীগঞ্জ, ছেঙ্গারচর, মতলব, কচুয়া ও ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় মোট ৪৮টি ওয়ার্ড রয়েছে। এসব ওয়ার্ডের বিপরীতে ৭৯টি ভোট কেন্দ্র ও ৪শ’ ৭১টি বুথ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অস্থায়ী ভোট কেন্দ্র ৮টি এবং অস্থায়ী বুথ ৪৪টি। ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯শ’ ৬৭ জন। তাদের মাঝে পুরুষ ৭৩ হাজার ৫শ’ ৮২ জন ও নারী ভোটার ৭২ হাজার ৩শ’ ৮৫ জন।
হাজীগঞ্জ পৌরসভায় ১২টি ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্র ২০টি। বুথ থাকবে ১শ’ ২৮টি। মোট ভোটার ১৯ হাজার ৬শ’ ৪৬ জন। পুরুষ ১৯ হাজার ৬শ’ ৪৬ জন ও মহিলা ভোটার ১৮ হাজার ৮শ’ ১৮ জন। কচুয়া পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে কেন্দ্র ৯টি। বুথ থাকবে ৫২টি । মোট ভোটার ১৫ হাজার ৬শ’ ৫৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭ হাজার ৯শ’ ৩৪ জন ও মহিলা ৭ হাজার ৭শ’ ২১ জন। মতলব পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে কেন্দ্র ২২টি। বুথ থাকবে ১শ’ ৩১টি। মোট ভোটার ৪০ হাজার ৮শ’ ৬৩ জন। পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ২০ হাজার ২শ’ ৬৮ ও মহিলা ২০ হাজার ৫শ’ ৯৫ জন। ছেঙ্গারচর পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্র ১৫টি। মোট ৮৫টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হবে। মোট ভোটার ২৫ হাজার ৯শ’ ২০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ৯ জন ও মহিলা ১২ হাজার ৯শ’ ১১ জন ভোটার। ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে ভোট কেন্দ্র ১৩টি। মোট বুথ থাকবে ৭৫টি। মোট ভোটার ২৫ হাজার ৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১২ হাজার ৭শ’ ২৫ জন ও মহিলা ভোটার ১২ হাজার ৩শ’ ৪০ জন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতাউর রহমান জানান, সব ভোটকেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ভেবে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে সকল প্রস্ততি সম্পন্ন করেছি।