অনাহারে দিন কাটাচ্ছে নিহত তিন যুবদল নেতার পরিবার
প্রতিনিধি
আজ সেই ২৫ অক্টোবর। ফরিদগঞ্জবাসীর জন্য এক ভয়াবহ ও বীভৎস ঘটনার দিন। এই দিনেই রাজনৈতিক সহিংসতায় বলি হয়েছিল তিন যুবদল নেতা। গত বছর এ দিনেই হঠাৎ হিংস্র হয়ে উঠেছিল ফরিদগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গন। বিভীষিকাময় এই দিনে আঁতকে উঠেছিল পুরো ফরিদগঞ্জবাসী। এই দিন ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরে রাজনীতির কালো মেঘের ছায়া ভর করে যে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তা আজও শিহরিত করে প্রত্যক্ষদর্শীদের। গুলিতে বাবুল, আরিফ এবং জাহাঙ্গীর নামে তিনটি তাজা প্রাণ ঝড়ে গেল সেদিন। কিন্তু সে গুলি কার? পুলিশ নাকি কোনো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীর তা এখনো অধরাই রয়ে গেলো। পুলিশি তদন্তে এখনো তা বেরিয়ে আসেনি। সেদিন বিএনপি তথা ১৯ দলীয় জোট নিহত এই তিনজনকে যুবদলের কর্মী আখ্যা দিয়ে তাদের জন্য সবকিছু উজাড় করে দেয়ার কথা বললেও বাস্তবতা ভিন্ন। আজ সেই দুঃসহ ঘটনার বর্ষপূর্তি হলো। দুঃখজনক হলেও সত্য-মৃত্যুর কয়েকদিন পর্যন্ত নেতা-কর্মী, বড় বড় রাজনৈতিক নেতারা প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চোখের ক’ ফোটা জল ফেলে এলেও আজ পর্যন্ত কেউই সে পথ আর মাড়াননি। দু একজন ছাড়া কেউই দেয়া ওয়াদা রাখেননি। এমনকি ওই তিন পরিবারের একজনের স্ত্রীর হাতে জনৈক জনপ্রতিনিধির দেয়া টাকাও মেরে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। দেনার দায়ভারে কেউ বাড়িতে এসে খোঁজ করলেও লুকিয়ে থেকে পাওনাদার কিনা, তা নিশ্চিত হয়ে তারপর ঘরে ফিরে। অথচ এ নিহত যুবদল কর্মীদের পরিবারের লোকজন তাদের একমাত্র উপার্জমক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে যখন দিশেহারা তখন ফরিদগঞ্জ উপজেলার স্বনামধন্য প্রভাবশালী ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা এগিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় তারা যে আশার আলো দেখেছিল, সে স্বপ্নে তাদের গুড়েবালি। বদরপুর গ্রামের কাঠমিস্ত্রী বাবুল ভূঁইয়া, টাইলস মিস্ত্রী আরিফ হোসেন এবং একটি সমবায় সমিতিতে চাকুরি করা জাহাঙ্গীর হোসেনের পরিবারের সেই দুঃখ গাঁথা দেখার কেউ নেই। আজ এক বছর পর সে বিভীষিকাময় মুহূর্তগুলো যেন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে নিহতের পরিবারদের।
যা ঘটেছিল সে দিন :
গত বছর ২৫ অক্টোবর, শুক্রবার বিএনপি তথা ঐ সময়ের ১৮ দলীয় জোটের আহ্বানে ঢাকায় মহা-সমাবেশের পাশাপাশি সারাদেশে জেলায়-উপজেলায় বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়। সে অনুয়ায়ী ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপি, জামায়াত ইসলামী তথা ১৮ দলীয় জোট বিক্ষোভ কর্মসূচি সফল করতে কাজ শুরু করে। জুম্মার নামাজের পরপরই দুপুর ২টা থেকে ফরিদগঞ্জ-রায়পুর সড়কের আল-মদিনা হাসপাতালের সামনে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা আস্তে আস্তে জড়ো হতে থাকে। বেলা ৩টার পর ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের একটি বিশাল বাহিনী সুসজ্জিতভাবে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নেয়। পরে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সেখানে আসেন। ফরিদগঞ্জ উপজেলার ইতিহাসে স্বাধীনতার পর সবচে’ বড় রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো সেদিন। এর দায় কি সেদিনকার প্রশাসন এড়াতে পারবে? বিকেল সাড়ে ৩টার পর থেকে খুব দ্রুত ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদেরও সংখ্যা বাড়তে লাগলো। ক্রমেই শ্লোগানে শ্লোগানে ওই এলাকা প্রকম্পিত হতে লাগালো। নেতা-কর্মীদের রাস্তার একপাশে নিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে যুবদল ও ছাত্রদলের বেশ কিছু নেতাকে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দুই ৩ সহস্রাধিক লোকের সমাবেশ ফরিদগঞ্জ টিএন্ডটি চত্বর পেরিয়ে যায়। এ সময় সমাবেশের ভেতরে থাকা কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মীকে লাটিসোটা নিয়ে টিএন্ডটি এলাকায় বেশ কয়েকটি ফেস্টুন ভাংচুর করতে দেখা গেছে। পরে উপজেলা ১৮ দলের নেতারা দ্রুত মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ফরিদগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড হয়ে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের মোড়ে এলে বাজারের দিকে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। এসময় মিছিলের সামনে নেতাদের সাথে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের কথা বলার এক পর্যায়ে তারা টিএন্ডটির দিকে চলে যেতে উদ্যত হলে মিছিলের পেছনের একটি অংশ থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ও লাঠিসোটা নিক্ষেপ শুরু হলে মুহূর্তেই পাল্টে যায় পরিস্থিতি, পুলিশ একশানে যায়। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পুলিশের সাথে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যোগ দিলে এটি ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষে রূপ নেয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে একের পর এক টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ছুড়তে থাকে। গুলিবিদ্ধ হয় কয়েকজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সাংবাদিকরা নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে পালায়। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ছবি তুলতে গিয়ে ১৮ দলীয় জোটের কর্মীদের ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হন ইলশেপাড়ের সাংবাদিক নারায়ণ রবিদাস। ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের সামনে পড়ে গুরুতর আহত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকারসহ শতাধিক নেতা-কর্মী। গুলিবিদ্ধ আরিফ ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, জাহাঙ্গীর চাঁদপুর সদর হাসপাতালে এবং বাবুল ঢাকায় নেয়ার পথে মারা যান। ফরিদগঞ্জ উপজেলার দীর্ঘদিনের শান্ত রাজনৈতিক ইতিহাসে লেগে যায় রক্তের দাগ। হঠাৎ ঘটে যাওয়া তিনটি মৃত্যু তিনটি পরিবারের মধ্যে প্রলয় বইয়ে দেয়। সাজানো গোছানো তিনটি সংসার মুহূর্তেই তছনছ হয়ে যায়। বাবা-মা হারায় ছেলেকে, স্ত্রী হারায় স্বামীকে এবং তিনটি পরিবারের ছোট ছোট ৫টি শিশু তাদের পিতাকে হারিয়ে ফেলে। ঐ সব পরিবারে নেমে আসে দুর্যোগের ঘনঘটা।
যেমন কাটছে তিন নিহতের
পরিবারের দিনগুলো :
বছর ঘুরে আবারো ফিরে আসলো ২৫ অক্টোবর! ফরিদগঞ্জ বদরপুর ও গাজীপুর গ্রামে এতিম শিশু ও ছেলেহারা মাদের আহাজারি থামেনি গত এক বছরেও। গতকাল শুক্রবার নিহতদের স্মৃতির শেষ চিহ্নটুকু নিয়ে আহাজারি করতে দেখা যায় নিহতের পরিবারদের। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে এখন অনাহারে দিন কাটাচ্ছে হত দরিদ্র পরিবারগুলো। গত বর্ষায় ঝড়ে হেলে পড়েছে নিহত বাবুলের ঘর। ঘরটি যখন হেলে পড়ছিল তখন তিন ছেলে নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে বাবুলের স্ত্রী রোকেয়া বেগম। গতকাল জরাজীর্ণ ঘরের সেই দৃশ্যটুকু এই প্রতিবেদকদ্বয়কে দেখাচ্ছে আর চোখের জল ফেলছিল বাবুলের বিধবা স্ত্রী। গত বছর এই দিনে অসুস্থ রোকেয়া বেগম নিজের জমানো ১শ’ টাকার একটি নোট বের করে স্বামী বাবুল হোসেন ভূঁইয়ার কাছে দিয়েছিলেন তার জন্য এক কেজি বা যতটুকু পাওয়া যায় মাল্টা বাজার থেকে নিয়ে আসার জন্য। সে একশ’ টাকাসহ মোট একশ’ ত্রিশ টাকার রক্তমাখা নোটই তার স্বামীর লাশের সাথে পাওয়া শেষ চিহ্ন। এটুকুই আগলে রেখেছেন স্বামীর রক্তের চিহ্নটুকু নিজের ও তিন সন্তানের জন্য। বাবুলের বাড়িতে কেউ এলেই তার স্ত্রী আগে অন্য লোকজনের মারফত খোঁজ নেন, পাওনাদার কেউ এসেছে কিনা। পাওনাদারদের নানা কথা শুনতে আর ভাল লাগে না। সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ, সংসার খরচ এগুলো জোগাড় হবে কিভাবে সে চিন্তায় অনিদ্রায় দিন কাটাচ্ছে স্বামীহারা রোকেয়া বেগম।
বারপাইকা গ্রামের মুন্সি বাড়ির বৃদ্ধ কৃষক আব্দুল আলিমের তিন সন্তানের মধ্যে সবার ছোট আরিফ। পেশায় ছিল টাইল্স মিস্ত্রী। ২৫ অক্টোবর শুক্রবার জুমার নামাজের পর বাড়ি থেকে বের হয়ে বিএনপির মিছিলে যোগ দেয়। টাইলস মিস্ত্রী হিসেবে আরিফ শুধু বদরপুর নয় আশপাশের অনেক গ্রামেও তার সুনাম ছিল। খুব কম সময়েই তাকে অবসর কাটাতে হয়েছে। পেশার প্রতি একনিষ্ঠতার কারণে তাকে গ্রামের গণ্ডি পেরিয়ে প্রায়শই ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর এমনকি ঢাকায় পর্যন্ত যেতে হতো। ‘কি দরকার ছিল তাকে মিছিলে যাবার। না গেলেতো আমি আমার আদরের ছোট ছেলে আরিফকে হারাতাম না, ছোট্ট শিশু আফিয়া তার বাবাকে হারাতো না। এখন শুধু আরিফের কবরের দিকেই চেয়ে থাকি আর নীরবে চোখের পানি ফেলি।’ একথা বলে উচ্চ স্বরে কেঁদে উঠলেন ২৫ অক্টোবর ২০১৩ শুক্রবার ফরিদগঞ্জে নিহত তিন যুবদল কর্মীর মধ্যে অন্যতম আরিফের মমতাময়ী মা হাজেরা বেগম। গতকাল আবারো তার কান্নায় ভারি হয়ে উঠে বারপাইকা গ্রাম। গত এক বছর ছেলের জন্য কাঁদতে কাঁদতে দু’টি চোখই হারিয়ে ফেলে আরিফের বাবা আব্দুুল আলিম। মা হাজেরা বেগমও যেন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। গতকাল শুক্রবার এ প্রতিবেদকদ্বয় আরিফের বাড়িতে গেলে আরিফের ৩ বছরের মেয়ে হাফসাকে তার কবরের উপরে শুয়ে থাকতে দেখা গেছে। বাড়ির লোকজন জানায়, হাফসা প্রায়ই কবরে চুমু খেয়ে তার বাবাকে ফিরে আসার জন্য ডাকে।
নিহত আরেক যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম। গাজীপুর বাজারে একটি ঔষধের দোকান ছিল জাহাঙ্গীরের । কিন্তু ব্যবসায় ভাল করতে না পারায় মৃত্যুর ৪/৫ মাস পূর্বে ব্যবসাটি ছেড়ে দিয়ে জনকল্যাণ সমিতির গাজীপুর ব্রাঞ্চে চাকুরি নেয় সে। পূর্ব থেকে ওই ব্রাঞ্চে সহকারী ম্যানেজার হিসেবে চাকুরি করা তাসলিমা এরপর থেকে প্রতিদিন স্বামীর মোটর সাইকেলে করে একসাথেই অফিস করতেন। স্বামী চলে গেলেও ৭ বছর পূর্বে পাওয়া চাকুরিটিই তার এখন একমাত্র ভরসা। চাকুরি করে পাওয়া অর্থ দিয়ে নিজের এবং সন্তানের খরচ চালাচ্ছেন। কেমন চলছে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অনেকক্ষণ নির্বাক হয়ে থাকেন। পরে জানান, সংসার চালানোর একমাত্র উৎসই এটি তার। অন্য কেউই একটি পয়সা দিয়েও সহায়তা না করায় দু’ বেলা দু’ মুঠো ডালভাত যেন খেতে পারেন সে চেষ্টা করছেন।
নিহত পরিবারের অনুদান মাতাব্বরদের পকেটে!
নিহত তিন যুবদল নেতার মৃত্যুর পর তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় চাঁদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লায়ন মোঃ হারুনুর রশিদ, শিল্পপতি মোতাহার হোসেন পাটওয়ারী, আলহাজ্ব এমএ হান্নান, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী মোজাম্মেলসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ। অথচ এদের মধ্যে শুধুমাত্র মোতাহার হোসেন পাটওয়ারী ছাড়া বাকিদের অনুদানের অর্থ শতভাগ পৌঁছেনি নিহত পরিবারের হাতে। টাকাগুলোর অধিকাংশই গ্রাম্য মাতাব্বরদের পকেটে গেছে। জানা যায়, আরিফের স্ত্রী এ পর্যন্ত সাবেক সংসদ সদস্য লায়ন মোঃ হারুনুর রশিদের কাছ থেকে প্রায় ২৫ হাজার টাকা পেয়েছেন। অথচ বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে তাদের দেয়া হয়েছে এক লক্ষ টাকা। বাবুলের পরিবারের মধ্যে বাবুলের স্ত্রীকে যে ৫০ হাজার টাকা দেয়ার কথা তা বাবুলের স্ত্রীর হাতে পৌঁছলেও বাবুলের বাবাকে যে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল তা আজও পৌঁছেনি তার হাতে। সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী মোজাম্মেল নিহত পরিবারকে যে অনুদান প্রদান করেছিলেন তার মধ্যে শুধুমাত্র বাবুলের পরিবার সে টাকা পেয়েছে বাকি আরিফ ও জাহাঙ্গীরের পরিবার সে টাকা আজও পায়নি।
আড়াই হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ৩ মামলা অতঃপর…..
গত বছর ২৫ অক্টোবরের সংঘর্ষের ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার, খুনের ঘটনায় এবং পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় বাদী হয়ে পৃথক পৃথক বিএনপি-জামাতের ৮৮ জনকে নির্দিষ্ট আসামী করে এবং প্রায় আড়াই হাজার লোককে অজ্ঞাত আসামী করে তিনটি মামলা দায়ের করেছে। এদের মধ্যে চাঁদপুর জেলা বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, উপজেলা জামায়াতের আমির আঃ মান্নানসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল এবং পৌর জামায়াতের আমির, সেক্রেটারীসহ সুনির্দিষ্ট ৮৮ জনকেই তিনটি মামলায় আসামী করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন নিহতের ঘটনায় এসআই সিরাজ বাদী হয়ে (নং- ২৬) একটি মামলা যার আইও ছিল এসআই বাতেন, পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় এসআই সেলিম বাদী হয়ে (নং-২৭) মামলা যার আইও ছিল এসআই নাছির এবং বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারের ঘটনায় এসআই বাতেন বাদী হয়ে মামলা (নং-২৫) যার আইও ছিল এসআই আক্তার। মামলা হওয়ার পরদিন ৭ জনকে আটক করা হলেও পরবর্তীতে তারা তা থেকে পার পেয়ে যায়। এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাজমুল হক জানান, মামলাটির এখনও তদন্ত চলছে। তদন্ত কাজ শেষ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।