
আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। এ দিবসটি বাঙালির এবং
বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের একটি স্বর্ণোজ্জ্বল দিন। জাতির ইতিহাসে
উল্লেখযোগ্য এ দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এটি ব্যাপক আয়োজন এবং উৎসাহ
উদ্দীপনায় পালিত হয়ে আসলেও এবারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। করোনাভাইরাসের
কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এবার স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি একেবারেই
সংক্ষিপ্ত করে আনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার থেকে শুরু করে জেলা পর্যন্ত
সর্বত্র সরকারি সকল কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। জনসমাগমের কোনো কর্মসূচি
নেই। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই প্রথম প্রকৃতির কাছে যেনো হেরে গেলো
বাঙালি। করোনা নামে মহামারীর কারণে এই প্রথম একেবারেই নিরস ও সাদামাটাভাবে
স্বাধীনতা দিবস পালিত হচ্ছে।
১৯৭১ সালের এ দিনে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় রক্তক্ষয়ী
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। এ দিনটি বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচে
গুরুত্বপূর্ণ দিন। এদিনে বাঙালি জাতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানের আহ্বানে পাকিস্তানি শোষণ, অত্যাচার, নিপীড়ন ও জুলুমের বিরুদ্ধে
সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুজিবনগর সরকারের
দিকনির্দেশনায় ও নেতৃত্বে বাঙালি মুক্তি সংগ্রাম চালিয়ে যায়। এ দিনটি আসলেই
বাঙালির মনে পড়ে যায় নিরস্ত্র বাঙালির উপর পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের
দোসরদের সেই বর্বর কাহিনীর কথা। একই সাথে বাঙালির বীরত্বের ইতিহাসের কথাও
মনে পড়ে যায়। এদিন বাঙালি জাতি বিনম্র শ্রদ্ধায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ
করে থাকে এবং একই সাথে শপথ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্বপ্নের সোনার
বাংলাদেশ গড়ার।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসকে ঘিরে প্রতি বছরই সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি
পালিত হয়ে আসছে। চাঁদপুরেও ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হতো। কিন্তু এবার
তেমন কোনো কর্মসূচি পালিত হচ্ছে না। বিশ্বব্যপী মহামারী আতঙ্ক করোনা ভাইরাস
সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কায়।
উদ্ভূত পরিস্থিতির আলোকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া দিবসের আজকের
কর্মসূচি হচ্ছে : আজ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য
অঙ্গীকার সংলগ্ন রেললাইনের পাশে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ
সূচনা। একই সময় সকল সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা
উত্তোলন এবং সকাল ৮টায় সার্কিট হাউজের সামনে জেলা প্রশাসক কর্তৃক
আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। এছাড়া অন্য কোনো কর্মসূচি
নেই। এদিকে এদিন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের যে সংবর্ধনা
দেয়া হতো সেটিও হবে না। তবে তাদের সম্মানি বাড়ি বাড়ি গিয়ে পেঁৗছে দেয়া হবে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।