মিজান লিটন
সারাদেশে একযোগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও অবশেষে আইনি জটিলতার কারণে স্থগিত হয়ে যায় চাঁদপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর যে সকল প্রাথী মুক্তিযোদ্ধা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেরিয়েছেন তাদের সমর্থন আদায়ের জন্য এখন তারাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন কোর্ট বারান্দায়। অপেক্ষার প্রহর গুণছেন এবং ভাবছেন, আগামী ৪ জুন নির্বাচন হবে তো? অনেকেই আশাবাদী সকল আইনি জটিলতা কাটিয়ে হয়তো ৪ জুন নির্বাচন হতে পারে। সে লক্ষ্যে প্রার্থীরা আদালতের দিকে যেমনি নজর রাখছেন, তেমনি ভোটারদের কাছেও ছুটছেন। বন্ধ রাখেননি প্রচার-প্রচারণা।
আগামী ৪ জুন নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা ঠিকমতো চললেও বর্তমান ভোটার তালিকায় মৃত ভোটারের নাম রয়েছে এবং একই ব্যক্তির দু জায়গায় ভোটার হওয়ার অভিযোগ এনে ভোটার হাল নাগাদ করার দাবি ও নির্বাচনের স্থগিতাদেশ চেয়ে জেলা সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন মুক্তিযোদ্ধা আঃ মান্নান মিয়া। আদালত তার আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্বাচনের উপর অস্থায়ী স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকার পক্ষও একই আদালতে আপিল করলে তা খারিজ হয়ে যায় এবং পূর্ব আদেশ বহাল রাখেন। এরই প্রেক্ষিতে রিটার্নিং অফিসার পুনরায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন। এ আপিলের শুনানির দিন গতকাল ধার্য থাকলেও শুনানি হয়নি। আজ ২ জুন শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। যদি শুনানিতে স্থগিতাদেশ বাতিল হয়ে যায় তাহলে হয়তো ৪ জুনের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচন আলোর মুখ দেখতে পারে। যদি না বাদী পক্ষ পুনরায় হাই কোর্টে আপিল না করে। অপরদিকে বাদী পক্ষ যে মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে দু জায়গায় ভোটার লিস্টে নাম রয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেন সে মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার (অবঃ) আঃ হাফিজ খান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে নির্বাচন স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন।
গতকাল ওই আপিলের শুনানি হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা শুনানি শেষে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ বিবাদীর আপিল না-মঞ্জুর করেন। আপিলের রায় পাওয়ার পর বিবাদী পক্ষীয় মুক্তিযোদ্ধারা ছুটে যান নকল তুলতে। তখন নকলখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে কর্মরত গাড়ি চালকদের সাথে গাড়ি পার্কিং নিয়ে তাদের তর্ক-বিতর্ক বেঁধে যায়। তবে লোকজনের সহায়তায় তা নিরসন হয়। পরে এরই প্রেক্ষিতে দুটি পুলিশের পিকআপ ভ্যানও আদালত চত্বরে ছুটে আসে। আদালত চত্বরে তখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাদী এবং বিবাদী উভয় পক্ষের মুক্তিযোদ্ধারাই অবস্থান করছিলো।