চাঁদপুর শহরের মমিন পাড়ার আলোচিত মৃত্যুর ঘটনা গৃহবঁধূ হাজেরা ময়না তদন্তের রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করে বাদীপক্ষ না রাজী দেয়ায় আদালতের নির্দেশক্রমে এক মাস ৭ দিন পর কবর থেকে লাশ ওঠানো হয়েছে।
গতকাল সোমবার সকাল ১১টায় গৃহবঁধূ হাজেরার বাবার বাড়ি শহীদ মফিজ সড়ক বিষ্ণুদী খন্দকার বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশটি ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ ও সিভিল সার্জেনের কর্মকর্তাদের সম্মুখে লাশটি উঠিয়ে পুনঃতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়। রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে চাঁদপুর শহরে চলছে ব্যাপক গুঞ্জন। পুলিশি সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৩ সালে ১৩ ডিসেম্বর রাত ৮টায় গৃহবঁধূ হাজেরার মৃতদেহ তার মমিন পাড়ার শ্বশুর বাড়ির লোকজন সেন্ট্রাল হাসপতালে জীবিত বলে নিয়ে আসে। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করলে উভয় পক্ষের লোকজন হাসপাতালে ব্যাপক ভাংচুর করে। শ্বশুর বাড়ির লোকজন হাসপাতালের ডাক্তারের উপর মৃত্যুর দায় চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে পরবর্তীতে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশ ময়না তদন্ত শেষে হাজেরার মৃতদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিলে পরদিন ১৪ ডিসেম্বর তার পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করে। হাজেরার স্বজনরা শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে দোষারোপ করে চাঁদপুর মডেল থানায় হাজেরার মা হাজেরার মা পারভিন বেগম বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। মামলার প্রধান আসামী শরীফ মুন্সী, হাবীব মুন্সী, সোহেল মুন্সী এবং এদের পিতা ও মাতাকে অভিযুক্ত করা হয়। মৃত্যুর কয়েকদির পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাশেম রঘুনাথপুর থেকে প্রধান আসামী শরীফ মুন্সীকে আটক করে। হাজেরার মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে ডাক্তার সিরাজুল ইসলাম আত্মহত্যা করেছে বলে আদালতে রিপোর্ট প্রদান করে। এতে মামলার বাদী মৃত হাজেরার মা পারভিন বেগম আদালতে নারাজির পিটিশন করলে আদালত পুনঃরায় কবর থেকে লাশ উত্তোলণ করে ময়নাতদন্ত করে ভিসেরা রিপোর্টের জন্য নির্দেশ দেয়। সেই লক্ষে গতকাল ২০ জানুয়ারি সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নেজারত ডেপুটি কালেক্টর আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আবুল কাশেম, আবু সাঈদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে পশ্চিম বিষ্ণুদীর মিজি বাড়ির (হাজেরার বাপের বাড়ি) পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলণ করে। ডাক্তার সিরাজুল ইসলাম জানায়, পুনঃময়নাতদন্ত করার জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তার হাসান আনোয়ার ও ডাক্তার জাহিদের সমন্বয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট মেডিক্যাল টিম করা হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত পুনঃময়নাতদন্তের জন্য ডেট বডিসহ কুমিল্লা মেডিক্যাল হাসপাতালের পাঠানো হয়েছে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পুনঃময়নাতদন্ত শেষে লাশটি চাঁদপুরে পাঠানো হবে। এদিকে গৃহবঁধূ হাজেরা রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় চাঁদপুর শহরে ব্যাপক গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। হাজেরার পরিবারের দাবি নির্যাতন করে তাকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন হত্যা করেছে। হাজেরার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের অভিযোগ বিয়ের পূর্ব থেকে হাজেরা বিষ্ণুদীর জনৈক দেলু মুন্সীর ছেলে বাদল মুন্সীর সাথে প্রেমের সর্ম্পক ছিল। ঘটনা জানাজানি হলে তার অমতে বাবা মা তাকে মমিন পাড়ার ফজলুল হক মুন্সীর ছেলে শরীফ মুন্সীর সাথে বিয়ে দেয়। ঘটনার দিন সে তার বান্ধবী খোকন বাবুর্চির মেয়ে নাছরিনের মোবাইলে প্রায় ৪৪ মিনিট কথা বলে। নাছরিনের মোবাইল থেকে প্রায় সময় বাদল তার সাথে ফোনে কথা বলতো। উভয়রই মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়ে মান অভিমানে হাজেরা ঘরে নিজেই আত্মহত্যা করে। তাই ডাক্তারের ময়না তদন্তের রির্পোটে আত্ম হত্যা বলে কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে।
শিরোনাম:
বৃহস্পতিবার , ২৭ মার্চ, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ১৩ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।