নিজস্ব প্রতিনিধি-
চাঁদপুরের বিতর্কিত ও মাদকাসক্তির জন্যে কুখ্যাত আইনজীবী আনোয়ার গাজীর বার কাউন্সিলের সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত এখনো না নেয়ায় চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির উপর অনেক আইনজীবী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অবিলম্বে সমিতির জরুরি সভা করে আনোয়ার গাজীর সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে বার কাউন্সিলে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন। এ ছাড়া আনোয়ার গাজীর বিরুদ্ধে আদালত ও বিচার প্রার্থীর সাথে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রতিপক্ষকে মারধর, প্রতারণা, নিজ মক্কেলকে জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায়, মাদকাসক্তি ও বিচারককে হুমকি দেয়াসহ নানা গর্হিত কাজের জন্য চাঁদপুরে চরম বিতর্কিত হয়ে আছেন অ্যাডঃ আনোয়ার গাজী। তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও ওই গর্হিত কাজের জন্য তিনি এর আগে একবার জেলে যান। অনেক দিন কারাভোগের পর তিনি তখন মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান। কিন্তু তার স্বভাব পাল্টায়নি। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি আবারো পূর্বের গর্হিত কাজে জড়িয়ে পড়েন। সর্বশেষ সে চাঁদপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অসীম কুমার দে কে হুমকি দেন ও মামলার নথিপত্র ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কর্মচারী সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলায় গত সোমবার আনোয়ার গাজীকে পুলিশ আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়।
এ দিকে কিছুদিন আগে জেলা আইনজীবী সমিতির পৰ থেকে অ্যাডঃ আনোয়ার গাজীকে কারণ দর্শানোর নোটিস করা হয়। এ ছাড়া সমিতির সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, নোটিসের জবাব সন্তোজনক না হলে তার বার কাউন্সিলের সনদ বাতিলের সুপারিশ করা হবে। গতকাল চাঁদপুর বারের বেশ ক’জন আইনজীবী এ প্রতিনিধির কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাদকাসক্ত বিতর্কিত আইনজীবী আনোয়ার গাজীর সনদ বাতিলের ব্যাপারে কেনো জেলা আইনজীবী সমিতি এখনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না সে জন্য আমরা সমিতির নেতৃবৃন্দের উপর ক্ষুব্ধ। তারা সমিতির কাছে দাবি জানান, আনোয়ার গাজীকে জেলা বার থেকে বহিষ্কার করে চাঁদপুরের আইনজীবীদের দীর্ঘদিনের সুনাম যেনো অক্ষুণ্ন রাখা হয়।
এদিকে অ্যাডঃ আনোয়ার গাজীর বিরুদ্ধে মতলব উত্তরের এক বিচার প্রার্থী আদালতের সাথে প্রতারণার অভিযোগ এনেছে। মতলব উত্তরের মাদারতলী গ্রামের হাবিব উল্যাহ প্রধান অভিযোগ করেন, তার ছেলে মাহমুদুল হাসান নারী ও শিশু নির্যাতন ৪৩০/১২ তারিখের মামলায় দীর্ঘদিন যাবৎ জেল হাজতে রয়েছে। তার জামিন না হওয়ায় আমাকে জেলা জজ আদালতের সামনে অ্যাডঃ আনোয়ার গাজী তার চেম্বারে যেতে বললে আমি সেখানে যাই। তখন আনোয়ার গাজী মামলার কাগজপত্র দেখে এক লাখ টাকা হলে জামিন করানো যাবে বলে আমাকে বলেন। এরপর আমি বহু কষ্টে ঋণ করে ৬০ হাজার টাকা জোগাড় করে অ্যাডঃ আনোয়ার গাজীকে দেই। এরপর আনোয়ার গাজী প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ২৭/০৭/১৩ তারিখে আদালতে বলেন, আসামীর দাদী অর্থাৎ আমার মা আছিয়া বেগম মারা গেছেন এবং তার জানাজায় অংশ নিতে আসামীর জামিনের প্রার্থনা করেন। আদালত আমার ছেলেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য মুক্তি দেয়। অথচ আমার মা অনেক আগে মারা গেছেন। তার প্রতারণার বিষয়টি আমি পরে জানতে পারি। হাবিব উলস্নাহ প্রধান অ্যাডঃ আনোয়ার গাজীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আবেদন করেছেন বিজ্ঞ সিনিয়র নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে। এমনিভাবে আরো অনেকের সাথে আনোয়ার গাজী প্রতারণা করেছেন।